মূল বিষয়টা হল রিজুভিনেটিং গঙ্গা অর্থাৎ গঙ্গার তারুণ্য বা সজীবতা ফিরিয়ে আনা। এটা তো বর্তমান ভারতে দাঁড়িয়ে বেশ কঠিন কাজ, যেখানে এত বাঁধ হচ্ছে, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প হচ্ছে এবং আরও নদী-বিরোধী কাজ হয়ে চলেছে। এ নিয়ে কথা বলার সুযোগ সেদিন ছিল না। গঙ্গা নিয়ে যে হরিদ্বারের মাতৃ সদন আশ্রমে দীর্ঘ সময় ধরে একটা কাজ চলছে, সন্ন্যাসিরা আন্দোলন করে প্রাণ দিয়েছেন, এসব বিষয় ওঁদের নজরে আছে বলে মনে হল না। কথা বলা হয়নি। কিন্তু আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে এই যে সফর করছেন, এর কি কোনো রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে? — এটা কোথায় জমা করবেন? ওঁরা বললেন — পিএমও-তে; অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে।
শিল্পাঞ্চলের দূষিত জল আর মানুষের ভিড়ে প্রমাদ গুনছে বরতি বিলের পাখিরা
বরতির বিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার একটি উল্লেখযোগ্য জলাভূমি, যেখানে ব্যারাকপুরের মত একটি শিল্পাঞ্চলের বুকে জলাভূমিটি কিডনির মতন দাঁড়িয়ে একটি সুস্থ পরিবেশ এবং তার জীববৈচিত্রকে অক্ষুন্ন রাখছে। আরেকটি উল্লেখ্য বিষয়, এখানকার চাষিদের মধ্যে যতটা সম্ভব পাখিদেরকে বিরক্ত না করে কাজ করার প্রবণতা দেখা গেছে।
গ্রামে বাজার নেই, স্কুল নেই, স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। একজনও করোনায় মারা যায়নি এখানে।
শান্ত পাহাড়ের বুকে এখন বুক কাঁপানো গর্জন মেশিনের। বড়ো বড়ো জেসিবি মেশিন দিয়ে পাহাড় কাটা হচ্ছে। দুপাশে হাজার হাজার বৃক্ষ উপড়ে ফেলা হচ্ছে প্রতিদিন। ট্রাকে বোঝাই হয়ে সেই কাটা গুঁড়িগুলো চলে যাচ্ছে শিলিগুড়ির দিকে। হাইওয়ে তৈরি হচ্ছে। লোকের মুখে জানতে পারি, এই হাইওয়ে যাবে কালিম্পঙ জেলার মধ্য দিয়ে সিকিম-সীমান্তে নাথু-লা পর্যন্ত। ভারত-চীন সীমান্তে যে গোলযোগের কথা আমরা গত কয়েক বছর ধরে শুনছি, সেখানে চীনের সঙ্গে সামরিক মোকাবিলা করার আয়োজনের অঙ্গ এই দীর্ঘ হাইওয়ে। পাকদণ্ডীর মাঝে মাঝেই সরকারি সাবধানবার্তা, ধসপ্রবণ পাহাড় এই বিপুল কর্মযজ্ঞে হয়ে উঠেছে আরও বিপদসংকুল। তবে স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে কিছু জানতে পারি না — সেন্ট্রাল থেকে দেশরক্ষার জন্য চার বছরের প্রজেক্ট নেওয়া হয়েছে, এ নিয়ে কে আর কী বলবে
পেটের দায়ে পাখির রাজ্যে রাজা খোঁজেন চুপিচরের মানুষ। শীতের হাওয়ায় পাখির চোখে পর্যটন।।
চর ধরে অনেকদূর এগোনোর পরে মূল গঙ্গায় নৌকা প্রবেশ করতেই বাবুদা ছোট একটা বাইনোকুলারে চোখ রেখে বলল দাদা কিং বসে আছে, ক্যামেরা রেডি করে ফেলুন। আপনাদের কপাল ভালো, গতকালই যাদের নিয়ে এসেছিলাম তাদের ভাগ্যে জোটেনি। সত্যিই নিজেকে ভাগ্যবান মনে হল। রাজার মত বসে আছেন তিনি, এদিক ওদিক চাউনি তার। সে এক অনন্য অনুভূতি। দীর্ঘ সময় ধরে প্রায় তিন চার ঘন্টা নদীর বুকে ছুটে বেড়ালাম কিছু ভালো ছবি ফ্রেমবন্দী করার জন্য। অনেকদিনের শখ এই শিকারি পাখির শিকার করতে দেখার ছবি ফ্রেমবন্দী করার। তা ষোল আনা পূর্ণ হলো পূর্বস্থলী চুপিচরে এসে।
আমি আজ কুড়ি বছর ধরে এই রাস্তায় সাইকেল চালাচ্ছি : সাইকেল লেনের দাবিতে র্যালির কথা বলায় হেসে ওঠেন আজাদ
— এটা কি রেসিং সাইকেল?
হঠাৎ ঘাড়ের কাছ থেকে কে যেন জিজ্ঞেস করল। ডানদিকে মুখ ঘুরিয়ে দেখি, ছোটো বাংলা সাইকেলে সওয়ারি একজন রোগা মতো লোক, মাথায় সাদা রুমাল, আমারই বয়সী হবে, সাইকেলের সামনের রডে টিফিন কেরিয়ার ঝোলানো।
— না, হাইব্রিড সাইকেল। রেসিং সাইকেল হলে টায়ার সরু হতো।
— হ্যাঁ, এটা মোটা টায়ার। কোথায় যাবেন?
— ঢাকুরিয়ার ওদিকে।
— কোথা থেকে আসছেন?
— মদনপুর। আপনি?
— ও, আমি আসছি কল্যানী হাইওয়ে থেকে।
সাইকেল চালাতে চালাতেই কথা শুরু হল। ওই ব্যস্ত রাস্তায় পাশাপাশি সাইকেল চালিয়ে যাওয়া কঠিন। কথায় কথায় আমি জিজ্ঞেস করলাম,
— আপনি কোথায় যাবেন?
- 1
- 2
- 3
- …
- 29
- Next Page »
সাম্প্রতিক মন্তব্য