এখন তো অটোমেটিক মিল, আপনি ধানটা ফেলে দিলেন, লরি বা ট্রাক থেকে মুটেরা গোডাউনে তুলে নিল, অটোমেটিক মিলে গেল, ঝাড়াই-বাছাই হল, আধঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধ শুকোনো সব হয় চাল বেরিয়ে এল। জামালপুরে আমার পাশেই দু-তিনটে মিল আছে। সবথেকে বেশি মিল আছে সগরাই মোড় বলে, বর্ধমান থেকে আরামবাগ যে রুটটা, খণ্ডকোষ থানা, প্রচুর মিল আছে। মিলে ধানটা ভাঙিয়ে চালটা বিক্রি করে দেয়। চালে কত লাভ হচ্ছে সেটা দেখবে না। মিলে প্রথমে তুষটা ছাড়িয়ে নেয়। তারপরে পালিশ করে। পালিশের আগে চালের গায়ে যে একটা পাতলা আঁশ থাকে, সেইটাকে আলাদা করে বার করে নেয়। সেইটা ভালো দামে বিক্রি হয়। ওইটা থেকে একটা তেল বার হয়, রাইসব্র্যান অয়েল বলে যেটাকে। তেলটা বার করার পর উদ্বৃত্ত ভুষি যেটা রয়ে গেল, সেইটা আবার বিস্কুট কোম্পানিগুলো কিনে নেয়। ফাইবারটা নিয়ে ময়দা এটা ওটা দিয়ে বিস্কুটটা তৈরি হয়। চালে লাভটা আর হয় না।
‘হাল-হেতেল নিজের না হলে চাষ কেমন হয়’ – বোঝালেন আতমা প্রকল্পে ফুল চাষ করা ধুবুলিয়ার চুক্তিচাষি
আমরা ফুল প্রথমে বেথুয়াডহরীর কৃষক মান্ডিতেই দিতাম। কিন্তু ওখানে ২% টাকা কেটে নেয়। ওটা নাকি ওদের নিয়ম। লাভ হয়না দেখে আমরা কিছুদিন পর হাওড়ার ফুল মার্কেটে যোগাযোগ করে ওখানে বিক্রি শুরু করি। বাসের মাথায় ফুল লোড করে পাঠিয়ে দিই। কিছুদিন পরপর গিয়ে টাকা নিয়ে আসি। কিন্তু আট-ন’মাস ফুল বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ। একে গাড়ি চলছিলনা। তার উপর মার্কেট বন্ধ। এই দিন তিনেক হল দু লপ্তে মাল পাঠিয়েছি। কিন্তু দাম নেই। অন্যান্য বছর এই সময় ফুলের দাম তিন চার টাকা করে থাকে।এখন দেড় টাকা/ দু’টাকা। কী করে ব্যাঙ্কের কিস্তি শোধ করব বলুন। ফুল তো আপনাকে তুলতে হবেই, বিক্রি হোক আর না হোক। ফুল তুললে তবেই নতুন স্টিক আসে।
মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে বাংলার কৃষক বিজেপি সাংসদ ও নেতাদের বয়কটের সংকল্প নিল
ইস্ট ইন্ডিয়ার কোম্পানির মতো অত্যাচারী বনিক এবং ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য গান্ধীজী লড়াই করেছিলেন কিন্তু এখন আবার দেশী বিদেশী ব্যাবসায়ী ও সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে দেশকে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। সম্প্রতি পাশ হওয়া তিনটে কৃষক বিরোধী ও কর্পোরেট স্বার্থ রক্ষাকারী আইন দ্বারা দেশের কৃষি ব্যবস্থা ও খাদ্য শৃঙ্খল মুনাফাবাজ কালোবাজারীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। আগামীদিনে দেশের কৃষি ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ একচেটিয়া পুঁজিপতিদের হাতে চলে যাবে। স্বাধীন কৃষক পরাধীন মজুরে পরিণত হবে।
যেখানে অধিকাংশ চাষিই ভাগচাষি, সেখানে কর্পোরেটদের সাথে চাষির চুক্তি হবে কী করে?
অমিত কিন্তু ফড়ে তথা আড়ৎদারদের পক্ষে দাঁড়ায়। এই আড়ৎদাররাই তো চাষের সময় চাষিকে কিছু অর্থ দিয়ে সাহায্য করে। সরকারি লোককে তখন আমরা পাব কোথায়? আবার ফসল বিক্রির সময় সরকারি লোকেদের সময় মত পাওয়া যায়না। অগত্যা আড়ৎদারই ভরসা। আর সরকারি প্রতিনিধিরাও নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে সেই আড়ৎদারদের থেকেই কেনে। কারণ সর্ষের ভিতরেই ভূত।
অমিত বলে, কৃষিবিল আসলে চাঁদার বিল না অন্যকিছু তা এখানকার চাষি জানেনা, জানতেও চায়না। সে যেভাবে বোঝে, সেভাবেই চাষ করে। কৃষিদপ্তর আর কৃষকের জমির মধ্যে থেকে যায় অনেক ফাঁক।
“অত্যাবশ্যক পণ্য আইনের সংযোজনী কালোবাজারির ছাড়পত্র; চুক্তি-চাষ আইনে নিজের জমিতেই লেবার-এ পরিণত হবে চাষি”
এই ধরনের আইনের মধ্যে দিয়ে কৃষক নিজের জমিতেই লেবার-এ পরিণত হবে। এই আইনের মধ্যে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার চাষের পশ্চিমী মডেল আমাদের এখানে চাপিয়ে দিতে চাইছে। কিন্তু সরকার ভুলে যাচ্ছে, আমাদের এখানকার কৃষকরা পশ্চিমী দেশগুলির কৃষকদের মতো নয়। আমাদের এখানে বেশিরভাগ চাষি ছোটো জোত-এর মালিক। আমাদের এখানে চাষ হল জীবনযাপন করার উপায়। পশ্চিমী দেশগুলিতে চাষ হল ব্যবসা।
- « Previous Page
- 1
- 2
- 3
- 4
- …
- 26
- Next Page »
সাম্প্রতিক মন্তব্য