একসময় মুর্শিদাবাদ ছিল অবিভক্ত বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার রাজধানী। রাজার দেশ। এখন রাজমিস্ত্রির জেলা। জেলার লক্ষ লক্ষ শ্রমিক নির্মানশিল্পে সারা দেশের প্রায় প্রতিটি রাজ্যে। এমনকি বিদেশেও। নিজের রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতেও রাজমিস্ত্রির কাজে যুক্ত। দুবাইতে বিশ্বের সর্বোচ্চ বাড়িটি (বার্জ খলিফা) তৈরিতেও বেলডাঙ্গা তথা মুর্শিদাবাদের রাজমিস্ত্রিদের বিরাট ভূমিকা। কলকাতায় নাখোদা মসজিদের সংস্কারের জন্যও ডাক পড়ে মুর্শিদাবাদের মিস্ত্রির। মুর্শিদাবাদের মোট জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগ মানুষই জেলার বাইরে পরিযায়ী শ্রমিক। এই শ্রমিকদের দেশে বিদেশে নির্যাতিত হতে হয়। ফলে কখনো কখনো তাদের মৃত্যুও হয়। নানান অপবাদ তাদের ভাগ্যে জোটে।
এমন দিন আসছে, যখন আপনি মানিব্যাগ খুলে ভাড়া দিতে পারবেন না। ছিনতাই হয়ে যাবে।
সাধারণ মুদিখানার আয় ২৫-৩০ শতাংশ কমেছে।
মিস্টির দোকানের আয় ৫০ শতাংশ কমেছে।
সবজির দোকানের বেচাকেনা ভালো না। শতাংশ হিসেব জানা সম্ভব হয়নি। ভ্যান রিক্সার আয় অনিয়মিত। দিনে ১০০-১৫০ টাকা। নির্মাণ কর্মীদের মজুরির দাম ঠিক আছে। কাজ অনিয়মিত। মাছের বাজার ভালো না। খরিদ্দার কম। পোল্ট্রি মাংসের বাজার ভালো। মাছ মাংস বিক্রেতাদের আয় জানা সম্ভব হয়নি। কলা বিক্রেতাদের ব্যবসা খারাপ আমফানের কারণে।
সবারই আয় বুঝে খরচ। ধারদেনার কথা স্পষ্টভাবে কেউ বলতে চায়নি। যারা টাকা ধার দেওয়ার কারবার চালায়, তারা জানিয়েছে- ধার নেবার লোকের সংখ্যা কমেছে। লোক বুঝে ধার দেওয়া হচ্ছে। টাকা শোধ দেওয়া অনিয়মিত। সরকারের কাছ থেকে কেউ কেউ বার্ধক্যভাতা, বিধবা ভাতা, শিল্পীভাতা, আমফানের ক্ষতিপূরন বাবদ টাকা পাচ্ছে। চাল, গম পাওয়া যাচ্ছে। তা বিক্রি করে কিছু টাকা পাওয়া যাচ্ছে। আগামীদিন কীভাবে চলবে কেউ স্পষ্ট কিছু জানেন না।
আর নয়, পুরনো জায়গা থেকে কেউ কাজের খবর দিলেই পা তুলে দেবে তারা
করোনা কতটা ভয়াবহ, এরা বুঝতে চায় না! শুধু চায় খেয়ে পড়ে বাঁচতে। অভাবী সংসারের চাকাটাকে সচল রাখতে তাই মুখিয়ে থাকে কাজের জন্য। গ্রামে কোন কাজ নেই। কৃষকরা কাজ হারিয়েছে চাষের জমি কমে যাবার জন্য। লকডাউন তাঁতিদের কর্মচ্যুত করেছে। রাজমিস্ত্রী জোগাড়েরা ঘরে বসা। ঘর করে পয়সা খরচ করার সাহস হারিয়েছে গ্রামীণ নিম্নবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষরা। তাই আর নয়, কাজের পুরনো জায়গা থেকে কেউ কাজের খবর দিলেই পা তুলে দেবে তারা। ভয় একটুও হবে না করোনার জন্য। আখের আলি বলে, “এমনিতেই তো না খেয়ে মরছি, করোনা আর কী করবে?” তাই তারা আবার অনেকে মিলে ভিন রাজ্যে যাবার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দেয়। আমিনের নেতৃত্বে প্রায় ৪০জন শ্রমিক ১লক্ষ ৪০হাজার টাকা দিয়ে বাস ভাড়া করে হায়দ্রাবাদের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরে গত ১৯ তারিখে।
একশ দিনের কাজ না পেয়ে ভিন দেশ ফেরৎ যুবকরা হতাশ
শমিত। শান্তিপুর। ১৮ জুলাই, ২০২০। # এতদ্বারা সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে জানানো যাচ্ছে যে, পরিযায়ী শ্রমিকরা একশ দিনের কাজ করতে ইচ্ছুক হলে পরিবারের জব কার্ড নিয়ে ৪-ক ফর্মে নিজ নিজ গ্রাম পঞ্চায়েতে যোগাযোগ করুন। এ প্রসঙ্গে আরো উল্লেখ্য, যদি পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের জব কার্ড না থাকে তাহলে জব কার্ডের জন্য নিজ নিজ পঞ্চায়েতে যোগাযোগ করুন। […]
সাম্প্রতিক মন্তব্য