একটি নাট্যদলের তরফে এসেছিলেন কয়েকজন, সাথে হয়ে যাওয়া নাট্যমেলার বাতিল বিরাট একটা ফ্লেক্স। তার উল্টোদিকের সাদা অংশে কয়েকজন মিলে ছিয়াত্তর দিন ব্যাপী দিল্লির আন্দোলনে শহীদদের নাম লিখছিলেন। অবশ্যই সেই তালিকা পূর্ণাঙ্গ নয়। কারণ সংখ্যাটা আজ অবধি ২০৬!
আমাদের পথ অবরোধে সব চাষি যোগ দেয়নি
আমার কথা হল, আমরা কৃষকরা চাষ করব, আমাদের ফসল আমরা কৃষকরা বেচব, আমি একজনের হাতে তুলে দেব কেন? তার হেল্লা হয়ে আমি চাষ করব কেন? তুমি পুঁজি দেবে, আমি চাষ করব? আমার পুঁজি নেই? তোমার গোলায় ফসল তুলে দেব কেন? লস হলে আমায় মেনে নিতে হবে।
দিল্লির কৃষক জমায়েতের সমর্থনে টুকরো টুকরো শ্লোগানে জুড়ে গেলেন কলকাতার শিখ ও মুসলিম সমাজ
গুরদোয়ারার সামনে পৌঁছে জানতে পারলাম, কলকাতার মুসলমান সমাজের কিছু মানুষও এই জমায়েতে শামিল হচ্ছে। মিছিল শুরু হতে হতে বারোটা হয়ে গেল। গুরদোয়ারার একজন সন্ত গুরমুখী ভাষায় কিছু বললেন। তাঁর বক্তব্য শেষ হল একটা আওয়াজের মধ্য দিয়ে : ‘যো বোলে সো নিহাল, সৎ শ্রী অকাল’। প্রায় তিন ঘণ্টা ব্যাপী এই প্রতিবাদ মিছিলের মাঝে বারবার উঠেছে এই আওয়াজ। দশম শিখ গুরু গোবিন্দ সিং-এর সময় থেকে শিখেরা এই জয়ধ্বনি দিয়ে কোনো লড়াই শুরু করে এসেছে।
চাষীর দাম কে চুকাবে? মাঠের নাড়া বাঁধা থাকে ব্যাবসাদারের হাতে।
এখন তো অটোমেটিক মিল, আপনি ধানটা ফেলে দিলেন, লরি বা ট্রাক থেকে মুটেরা গোডাউনে তুলে নিল, অটোমেটিক মিলে গেল, ঝাড়াই-বাছাই হল, আধঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধ শুকোনো সব হয় চাল বেরিয়ে এল। জামালপুরে আমার পাশেই দু-তিনটে মিল আছে। সবথেকে বেশি মিল আছে সগরাই মোড় বলে, বর্ধমান থেকে আরামবাগ যে রুটটা, খণ্ডকোষ থানা, প্রচুর মিল আছে। মিলে ধানটা ভাঙিয়ে চালটা বিক্রি করে দেয়। চালে কত লাভ হচ্ছে সেটা দেখবে না। মিলে প্রথমে তুষটা ছাড়িয়ে নেয়। তারপরে পালিশ করে। পালিশের আগে চালের গায়ে যে একটা পাতলা আঁশ থাকে, সেইটাকে আলাদা করে বার করে নেয়। সেইটা ভালো দামে বিক্রি হয়। ওইটা থেকে একটা তেল বার হয়, রাইসব্র্যান অয়েল বলে যেটাকে। তেলটা বার করার পর উদ্বৃত্ত ভুষি যেটা রয়ে গেল, সেইটা আবার বিস্কুট কোম্পানিগুলো কিনে নেয়। ফাইবারটা নিয়ে ময়দা এটা ওটা দিয়ে বিস্কুটটা তৈরি হয়। চালে লাভটা আর হয় না।
মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে বাংলার কৃষক বিজেপি সাংসদ ও নেতাদের বয়কটের সংকল্প নিল
ইস্ট ইন্ডিয়ার কোম্পানির মতো অত্যাচারী বনিক এবং ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য গান্ধীজী লড়াই করেছিলেন কিন্তু এখন আবার দেশী বিদেশী ব্যাবসায়ী ও সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে দেশকে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। সম্প্রতি পাশ হওয়া তিনটে কৃষক বিরোধী ও কর্পোরেট স্বার্থ রক্ষাকারী আইন দ্বারা দেশের কৃষি ব্যবস্থা ও খাদ্য শৃঙ্খল মুনাফাবাজ কালোবাজারীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। আগামীদিনে দেশের কৃষি ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ একচেটিয়া পুঁজিপতিদের হাতে চলে যাবে। স্বাধীন কৃষক পরাধীন মজুরে পরিণত হবে।
সাম্প্রতিক মন্তব্য