পাঞ্জাব হরিয়ানার হরিৎ ক্রান্তি যে বলে, এই ক্ষেত্রেই হয়েছিল। এই ক্ষেত্রের লোকের যখন কৃষি কানুনটা এত অসুবিধা হচ্ছে — আমাদের ঝাড়খণ্ডে যার দশ একর জমি আছে, এখানে তারা জমিনদার বটে। আমাদের যদি বিশ একর জমি থাকে, আমরা এদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারি না। ক্যানে কি আমাদের খেতে তো জল পৌঁছায়নি। এদের খেতে জল আছে, কারো পাঁচ একর জমিন আছে তো সে রাজা বটে! মানে সে বড়ো চাষি, আমাদের বিশ একর জমিন থাকলেও বড়ো চাষি নয়। তো এদের যখন এই কানুনে এত অসুবিধা হচ্ছে, আমরা ছোটো ছোটো চাষি, চাষিও নয় এদের গুনতিতে, আমাদের তো বেশি অসুবিধা হবে। যেমন, বিহারে যখন থেকে এমএসপি হটাইঞ্ছে, বিহারের আদ্ধেকের বেশি মজদুর পাঞ্জাব হরিয়ানা দিল্লিতে কাম করছে। নিজের খেতে কাজ না করে এখানে এসে কাজ করছে। এমএসপি নাই থাকার জন্য। আমাদের কী হবে
প্রশ্ন উঠছে বারবার, দিল্লির আন্দোলনে বা তার সমর্থনে নানা নাগরিক উদ্যোগে সামিল কারা
একটি নাট্যদলের তরফে এসেছিলেন কয়েকজন, সাথে হয়ে যাওয়া নাট্যমেলার বাতিল বিরাট একটা ফ্লেক্স। তার উল্টোদিকের সাদা অংশে কয়েকজন মিলে ছিয়াত্তর দিন ব্যাপী দিল্লির আন্দোলনে শহীদদের নাম লিখছিলেন। অবশ্যই সেই তালিকা পূর্ণাঙ্গ নয়। কারণ সংখ্যাটা আজ অবধি ২০৬!
জাতীয় পতাকা নামিয়ে দিয়েছে লালকেল্লা থেকে, আপনি দেখেছেন?
জাতীয় পতাকা নামিয়ে একটা গেরুয়া না কী রঙের পতাকা তুলে দিল লালকেল্লায়। কী চলছে এসব? দিল্লি পুলিশ কি লালকেল্লাকে প্রটেক্ট করতে পারছে না। এরপর তো এখানে পাকিস্তানের পতাকা লাগিয়ে দেবে!’
বুঝলাম, আমার বা আমাদের উদ্দেশ্যেই এই কথাগুলো। কাছে এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘জাতীয় পতাকা নামিয়ে দিয়েছে লালকেল্লা থেকে, আপনি দেখেছেন?’
— ‘হ্যাঁ স্টার আনন্দ-এ দেখেছি। সব চ্যানেলেই দেখাচ্ছে।’
— ‘তাই নাকি? আমি তো সবে এনডি টিভি লাইভ দেখে এলাম। লালকেল্লার মাথায় তো জাতীয় পতাকা উড়ছে দেখলাম। হ্যাঁ সামনের দিকে একটা পোস্টে কৃষক আন্দোলনের একটা পতাকা উঠিয়েছে বটে। কিন্তু জাতীয় পতাকা নামিয়ে দিয়েছে, এমন তো দেখলাম না।’
কথা আর বেশি এগোলো না। তবে দুজনে মোবাইল নাম্বার দেওয়া-নেওয়া করলাম। ঠিক হল, আবার দুজনেই ভালো করে টিভিতে দেখে মোবাইলে কথা বলব।
দিল্লির কৃষক জমায়েতের সমর্থনে টুকরো টুকরো শ্লোগানে জুড়ে গেলেন কলকাতার শিখ ও মুসলিম সমাজ
গুরদোয়ারার সামনে পৌঁছে জানতে পারলাম, কলকাতার মুসলমান সমাজের কিছু মানুষও এই জমায়েতে শামিল হচ্ছে। মিছিল শুরু হতে হতে বারোটা হয়ে গেল। গুরদোয়ারার একজন সন্ত গুরমুখী ভাষায় কিছু বললেন। তাঁর বক্তব্য শেষ হল একটা আওয়াজের মধ্য দিয়ে : ‘যো বোলে সো নিহাল, সৎ শ্রী অকাল’। প্রায় তিন ঘণ্টা ব্যাপী এই প্রতিবাদ মিছিলের মাঝে বারবার উঠেছে এই আওয়াজ। দশম শিখ গুরু গোবিন্দ সিং-এর সময় থেকে শিখেরা এই জয়ধ্বনি দিয়ে কোনো লড়াই শুরু করে এসেছে।
মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে বাংলার কৃষক বিজেপি সাংসদ ও নেতাদের বয়কটের সংকল্প নিল
ইস্ট ইন্ডিয়ার কোম্পানির মতো অত্যাচারী বনিক এবং ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য গান্ধীজী লড়াই করেছিলেন কিন্তু এখন আবার দেশী বিদেশী ব্যাবসায়ী ও সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে দেশকে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। সম্প্রতি পাশ হওয়া তিনটে কৃষক বিরোধী ও কর্পোরেট স্বার্থ রক্ষাকারী আইন দ্বারা দেশের কৃষি ব্যবস্থা ও খাদ্য শৃঙ্খল মুনাফাবাজ কালোবাজারীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। আগামীদিনে দেশের কৃষি ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ একচেটিয়া পুঁজিপতিদের হাতে চলে যাবে। স্বাধীন কৃষক পরাধীন মজুরে পরিণত হবে।
সাম্প্রতিক মন্তব্য