সংবাদমন্থন প্রতিবেদন। নদিয়া। বাচ্চাদের ছবি আঁকা শেখায় গৌতমদা। জিগ্যেস করলাম, পাঞ্জাবের চাষিরা আবার দিল্লির দিকে যাচ্ছে, কিছু জানো ওদের আন্দোলনের ব্যাপারে। সটান উত্তর, আমি চাষি নই। ও নিয়ে আমার তাই আগ্রহও নেই কোনো। নিজের অল্প কিছু জমিতে সার বিষ ছাড়া শাকসব্জি চাষ করে বিক্রম। ও শুনেছে বটে কৃষক আন্দোলনের কথা। বিস্তারিত জানে না কিছু তেমন। […]
কেন ফের উত্তর ভারতের কৃষকরা দিল্লির দিকে আসছে?
কৃষকরা দাবি করছে, তাদের জন্য পেনশন চালু করতে হবে; তাদের ঋণ প্রত্যাহার করতে হবে; যারা নকল বীজ, কীটনাশক ও সার বানায়, তাদের শাস্তি দিতে হবে। তাদের আরও দাবি, বর্তমান একশ’ দিনের কাজ বাড়িয়ে বছরে দু’শ দিনের কাজে পরিণত করতে হবে এবং অন্যান্য সমস্ত দেশের থেকে কৃষিপণ্যের নিঃশুল্ক আমদানির যে চুক্তি (ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট), সেগুলি সমস্ত বাতিল করতে হবে।
বিশ একর জমিন থাকলেও বড়ো চাষি নই, ক্যানে কি আমাদের খেতে তো জল পৌঁছায়নি।
পাঞ্জাব হরিয়ানার হরিৎ ক্রান্তি যে বলে, এই ক্ষেত্রেই হয়েছিল। এই ক্ষেত্রের লোকের যখন কৃষি কানুনটা এত অসুবিধা হচ্ছে — আমাদের ঝাড়খণ্ডে যার দশ একর জমি আছে, এখানে তারা জমিনদার বটে। আমাদের যদি বিশ একর জমি থাকে, আমরা এদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারি না। ক্যানে কি আমাদের খেতে তো জল পৌঁছায়নি। এদের খেতে জল আছে, কারো পাঁচ একর জমিন আছে তো সে রাজা বটে! মানে সে বড়ো চাষি, আমাদের বিশ একর জমিন থাকলেও বড়ো চাষি নয়। তো এদের যখন এই কানুনে এত অসুবিধা হচ্ছে, আমরা ছোটো ছোটো চাষি, চাষিও নয় এদের গুনতিতে, আমাদের তো বেশি অসুবিধা হবে। যেমন, বিহারে যখন থেকে এমএসপি হটাইঞ্ছে, বিহারের আদ্ধেকের বেশি মজদুর পাঞ্জাব হরিয়ানা দিল্লিতে কাম করছে। নিজের খেতে কাজ না করে এখানে এসে কাজ করছে। এমএসপি নাই থাকার জন্য। আমাদের কী হবে
প্রশ্ন উঠছে বারবার, দিল্লির আন্দোলনে বা তার সমর্থনে নানা নাগরিক উদ্যোগে সামিল কারা
একটি নাট্যদলের তরফে এসেছিলেন কয়েকজন, সাথে হয়ে যাওয়া নাট্যমেলার বাতিল বিরাট একটা ফ্লেক্স। তার উল্টোদিকের সাদা অংশে কয়েকজন মিলে ছিয়াত্তর দিন ব্যাপী দিল্লির আন্দোলনে শহীদদের নাম লিখছিলেন। অবশ্যই সেই তালিকা পূর্ণাঙ্গ নয়। কারণ সংখ্যাটা আজ অবধি ২০৬!
জাতীয় পতাকা নামিয়ে দিয়েছে লালকেল্লা থেকে, আপনি দেখেছেন?
জাতীয় পতাকা নামিয়ে একটা গেরুয়া না কী রঙের পতাকা তুলে দিল লালকেল্লায়। কী চলছে এসব? দিল্লি পুলিশ কি লালকেল্লাকে প্রটেক্ট করতে পারছে না। এরপর তো এখানে পাকিস্তানের পতাকা লাগিয়ে দেবে!’
বুঝলাম, আমার বা আমাদের উদ্দেশ্যেই এই কথাগুলো। কাছে এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘জাতীয় পতাকা নামিয়ে দিয়েছে লালকেল্লা থেকে, আপনি দেখেছেন?’
— ‘হ্যাঁ স্টার আনন্দ-এ দেখেছি। সব চ্যানেলেই দেখাচ্ছে।’
— ‘তাই নাকি? আমি তো সবে এনডি টিভি লাইভ দেখে এলাম। লালকেল্লার মাথায় তো জাতীয় পতাকা উড়ছে দেখলাম। হ্যাঁ সামনের দিকে একটা পোস্টে কৃষক আন্দোলনের একটা পতাকা উঠিয়েছে বটে। কিন্তু জাতীয় পতাকা নামিয়ে দিয়েছে, এমন তো দেখলাম না।’
কথা আর বেশি এগোলো না। তবে দুজনে মোবাইল নাম্বার দেওয়া-নেওয়া করলাম। ঠিক হল, আবার দুজনেই ভালো করে টিভিতে দেখে মোবাইলে কথা বলব।
সাম্প্রতিক মন্তব্য