করোনার বাজারে কাজ হারানো মানুষের কাজের খোঁজে স্কেচ আঁকছেন সুমিত দাস
সুমিত দাস। শান্তিপুর। ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০।#
পাথরের বুকে ঘষা খেয়ে খস খস শব্দের সাথে সমানে আগুনের ফুলকি ছুটছে। আশির কোঠায় ধাক্কা দেওয়া মানুষটা একমনে বঁটিতে ধার দিয়ে চলেছেন। গোবিন্দপুর প্রমোদ নগর থেকে আলো না ওঠা ভোরে সাইকেলে পৌঁছে যান শান্তিপুর স্টেশানে। গন্তব্য কখনো হবিবপুর,পায়রাডাঙ্গা থেকে বিধাননগর, মেদিনীপুর।আশ্চর্য হই। আমার গোল গোল চোখের দিকে তাকিয়ে বলেন আমি পুরীতেও গেছি বারো বার। ওখানে তো বাঙালি হোটেল প্রচুর আছে ছুরি কাঁচি বঁটিতে ধার দিতে হয়। পয়সাটাও ভালো পাওয়া যায়।
– না কখনো পরিবারকেও নিয়ে যাই।
ট্রেন বন্ধ পাঁচ মাস। সমীরদা বাড়িতে বসে। কোন মতে দিন গুজরান করছেন। এখন অবশ্য সাইকেলে করে বিস্কুট, চানাচুর, চিড়ে ভাজা, বাদাম ভাজা ইত্যাদি ফেরি করছেন। বুঝতে পারি মানুষটাকে আর বেশিক্ষণ বসিয়ে রাখা উচিত হবে না। দৃঢ়চেতা, জেদি ঋজু মানুষ টা উঠে দাঁড়িয়ে বলেন বৃষ্টি এলে মালগুলো পৌঁছতে পারবো না। সাইকেলে ওঠেন। হ্যান্ডেলের ব্যাগটাতে চোখ পরায় বুঝতে পারি পাঁচ মাস ছুরি কাঁচি তে সান দেওয়া বন্ধ থাকলেও মাথায় সান দেওয়া চলছে নিরন্তর।
আমি বেশ ভালো আছি
আমি বেশ ভালো আছি!
ঘরে চাল বাড়ন্ত হলে বৌকে বলি – জল বেশি দিয়ে ফেন ভাত রাঁধতে,
ভাগাভাগি খেয়ে তা ভরপেট জল খেতে খেতে বড় ক’রে ঢেকুর তুলি।
…………
সমীর শেঠের একটি কবিতার অংশ।
Leave a Reply