শমীক সরকার, কলকাতা, ১৬ এপ্রিল#
কলকাতায় গরম পড়েছে খুব। বিশেষ করে দুপুরবেলা রাস্তায় হাঁটাচলা করা দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে। চারদিকে কংক্রিট, ইঁট, টাইলসের দৌলতে গরম যেন আরো বেশি। এ গরম তো শুধু মাথার ওপর সূর্যের তাপের গরম নয়। সবকিছুই তেতে থাকছে। সন্ধ্যে নেমে গেলেও তাত যাচ্ছে না। এই অবস্থায় দিনকয়েক মিন্টো পার্ক (শহীদ ভগৎ সিং উদ্যান) এর আশেপাশে দুপুরবেলা কাটানোর সময় বিচিত্র অভিজ্ঞতা হলো।
পার্কটা বেসরকারি রক্ষীরা দুপুরবেলা তাতের সময়টা বন্ধ রাখছে।
ওই পার্কটির মধ্যে অনেক গাছপালা আছে। সবচেয়ে বড়ো কথা, একটা দীঘি আছে। বসার জায়গা আছে। গরমে অবসন্ন পথিকের ক্লান্তি দূর করার জন্য পার্কটির কোনো তুলনা নেই। কিন্তু অতবড়ো পার্কটা দুপুর দশটা পনেরো কুড়ি থেকে বিকেল তিনটে পর্যন্ত বন্ধ।
আরো খারাপ ব্যাপার আছে। পার্কটার বেলভিউ নার্সিং হোমের দিকের গেটটার গায়েই একটা ঠান্ডা জলের কল আছে। এখন কলকাতার কয়েকটা জায়গায় ওই ঠাণ্ডা জলের মেশিন বসানো আছে, যেখান থেকে জল পাওয়া যায় (যেমন মিন্টোপার্ক থেকে পদ্মপুকুরের দিকে যেতে ইত্যাদি)। এই পার্কটির মধ্যে যেটা আছে, সেটি কিন্তু ওই তাতের সময় সকাল সাড়ে দশটা থেকে বেলা তিনটে পর্যন্ত পাওয়া যায় না। আগে সম্ভবত পার্কের বাইরের দিকে একটা কলের মুখ ছিল। এখন নেই। কেন নেই?
শহীদ ভগৎ সিং পার্কটি রক্ষণাবেক্ষণ করে বেলভিউ প্রাইভেট নার্সিং হোমটি। একথা বড়ো বড়ো করে বিজ্ঞাপিত আছে। আর বাস্তবেও তাই, বেলভিউ নার্সিং হোমের প্রাইভেট রক্ষীরাই পার্কটির গেটে তালা দিচ্ছেন তালা খুলছেন।
পার্কটিতে সকাল সন্ধ্যে স্থানীয় অস্থানীয় উঁচুক্লাসের অবাঙালি ও বাঙালিরা স্বাস্থ্যচর্চা করে। প্রাইভেট গাড়ি করে আসে। গাড়ি থেকে নেমে হাঁটে পার্কের মধ্যে। দৌড়য়। খুব ভালো কথা। কিন্তু কলকাতায় যারা এই গ্রীষ্মের ভরদুপুরে রাস্তায় হাঁটে কাজকর্মের তালে, তাদেরও কি অধিকার নেই এই পার্কটায় একটু জিরিয়ে নেবার?
Leave a Reply