স্কুলের শিক্ষকের কাছে প্রথম অনুপ্রেরণা পান বই বাঁধাইয়ের কাজে। কখনও মামা বা অন্য কারোর দেখে। আবার কখনও বাঁধানো বই দেখেই কাজ শেখা শুরু। তারপর থেকে চলছে পুরনো সখের বই, অফিসের মোটা মোটা দরকারি খাতা বাঁধাইয়ের কাজ। শুরুতে একটু অসুবিধা হত।বাঁধাইয়ের সব প্যাঁচ-পয়জার তো জানতাম না। তখন প্রয়োজন পড়লো একজন গুরুর। যার কাছে কাজটা শেখা যায়। একজন বললো ‘দেখো বাপু শেখাতে টেখাতে পারবো না। তুমি ফুলিয়া পলিটেকনিকে ভর্তি হয়ে যাও।
আর নয়, পুরনো জায়গা থেকে কেউ কাজের খবর দিলেই পা তুলে দেবে তারা
করোনা কতটা ভয়াবহ, এরা বুঝতে চায় না! শুধু চায় খেয়ে পড়ে বাঁচতে। অভাবী সংসারের চাকাটাকে সচল রাখতে তাই মুখিয়ে থাকে কাজের জন্য। গ্রামে কোন কাজ নেই। কৃষকরা কাজ হারিয়েছে চাষের জমি কমে যাবার জন্য। লকডাউন তাঁতিদের কর্মচ্যুত করেছে। রাজমিস্ত্রী জোগাড়েরা ঘরে বসা। ঘর করে পয়সা খরচ করার সাহস হারিয়েছে গ্রামীণ নিম্নবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষরা। তাই আর নয়, কাজের পুরনো জায়গা থেকে কেউ কাজের খবর দিলেই পা তুলে দেবে তারা। ভয় একটুও হবে না করোনার জন্য। আখের আলি বলে, “এমনিতেই তো না খেয়ে মরছি, করোনা আর কী করবে?” তাই তারা আবার অনেকে মিলে ভিন রাজ্যে যাবার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দেয়। আমিনের নেতৃত্বে প্রায় ৪০জন শ্রমিক ১লক্ষ ৪০হাজার টাকা দিয়ে বাস ভাড়া করে হায়দ্রাবাদের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরে গত ১৯ তারিখে।
করোনার বাজারে কারো হাতে কাজ নেই। যাক গে’ বলে ঠিক একটা কাজে লেগে যাবে উদয়দা
করোনা আসে, কাজ বন্ধ হয়। সব কাজ বন্ধ হয়। আমার ওর সবার কাজ বন্ধ হয়। কাপড়ের ব্যাবসা বন্ধ হয়, ক্যেটারিং বন্ধ হয়, লস্যি কফি বন্ধ হয়। ওরা কয়েকজনে একটা দোকান করে। বেশিরভাগ দ্বায়িত্ব ও নেয়। দোকানে বসে,ঠোঙা বানায় বিক্রি করে। ও পারে আমি পারিনা…..উদয় দা ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। আমি বাংলায় এম.এ.। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে দারুন সিদ্ধান্ত নিতে পারে উদয় দা। অসম্ভব ভালো উপস্থিত বুদ্ধি। আমি আশ্চর্য হয়ে যাই। ও পারে। আমি পারিনা।
সাম্প্রতিক মন্তব্য