সাত্তার গাজী। রামনগর গ্রাম, মধ্যশিবপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা। ১৫ জানুয়ারি, ২০২১।
দিল্লিতে চাষিরা আন্দোলনে বসার এগারো দিনের মাথায় আমরা একদিন আমাদের বেণীপুরের বাজারে পথ অবরোধ করেছিলাম। সকাল ছ-টা থেকে বেলা সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত। পুলিশ এল, বলল, ‘তোমরা কতক্ষণ চালাবে?’ আমরা বললাম, বেলা সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত। সব চাষি এতে যোগ দেয়নি। এই ধরো শয়ে ৬০ ভাগ চাষি যোগ দেয়নি। আসল কারণ হচ্ছে, আমরা কংগ্রেস করি, তারা তৃণমূল করে, বিজেপি করে। বাম-কংগ্রেস মিলে করেছি তো, তৃণমূলরা যোগ দেয়নি। টিভির পর্দায় ওরা সাপোর্ট করছে। কিন্তু আমরা করেছি, তাই ওরা যোগ দেয়নি। কিছু কিছু চাষি আমাদের এই আন্দোলনকে সাপোর্ট করে। যাদের পয়সা আছে তারা ওদের করতে দিচ্ছে না। বলছে, তোদের এত দিয়ে দিচ্ছি, তোরা ওদের সঙ্গে যাবি কেন?
এই যে আইন পাশ করেছে, কিছু কৃষক-নেতা মোদির সাপোর্টে আছে। হান্নান মোল্লা বলেছে, ‘ওরা তো মোদির দালাল’। আমার কথা হল, আমরা কৃষকরা চাষ করব, আমাদের ফসল আমরা কৃষকরা বেচব, আমি একজনের হাতে তুলে দেব কেন? তার হেল্লা হয়ে আমি চাষ করব কেন? তুমি পুঁজি দেবে, আমি চাষ করব? আমার পুঁজি নেই? তোমার গোলায় ফসল তুলে দেব কেন? লস হলে আমায় মেনে নিতে হবে। আর ওদের একটা মাপ আছে, মাপের ছোটো হলেও নেবে না, বড়ো হলেও নেবে না, মাপের মালটা দাও, বাদবাকি ফেলে দাও। এ কোন ধরনের আইন? কৃষকরা বেচতে পারবে না। ওরা ওদের লেবার দিয়ে বাজারে বেচবে। এই নীতিটা পাশ করেছে তো। আমি চাষ করেছি, বাজারে এনে বেচব ফসল। বাজার থেকে অন্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কিনে এনে বেচবে। তাদের জীবিকা নির্বাহ হবে, আমারও জীবিকা নির্বাহ হবে। একটা ভ্যানওয়ালা বইলে তারও জীবিকা নির্বাহ হবে। একটা ফসল থেকে কতগুলো লোকের জীবিকা নির্বাহ হবে। ওরা বলতে চাইছে, সব ওরাই করবে। নতুন আইনে যা বলতে চাইছে, সব এই গরিব মানুষকে মেরে শ্মশান করে দেবে।
Leave a Reply