ঢাকা থেকে পাঠানো অর্ক ভাদুড়ীর রিপোর্ট ও ছবির ভিত্তিতে। ৭ অক্টোবর, ২০২০।#
আবরার ফাহাদ। গ্রামের বাড়ি কুষ্ঠিয়ায়। গতবছর ৭ অক্টোবর রাতে বাংলাদেশের নামজাদা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েটের ছাত্রাবাসে শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের দাম্ভিক ছাত্রসেনার একনাগাড়ে মারধোরে মাঝরাতে বমি করতে করতে বিনা চিকিৎসায় খুন হয়ে যান। তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। একুশ বছরের মুক্তচিন্তক ছাত্র। ছাত্রলীগের নেতাদের অভিযোগ ছিল, সে নাকি ইসলামিক ছাত্র শিবিরের সাথে জড়িত। অভিযোগের ভিত্তি কী? ফেসবুকে পোস্ট করা তার একটি স্টেটাস, যা ভারতের সাথে বাংলাদেশের তৎকালীন কিছু চুক্তির সমালোচনা বলে মনে হয়েছিল।
কী ছিল সেই স্টেটাসে?
“৪৭ এ দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশে কোন সমুদ্রবন্দর ছিল না। তৎকালীন সরকার ৬ মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করল। কিন্তু দাদারা নিজেদের রাস্তা নিজেদের মাপার পরামর্শ দিছিলো। বাধ্য হয়ে দুর্ভিক্ষ দমনে উদ্বোধনের আগেই মংলা বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ ইন্ডিয়াকে সে মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে।কাবেরি নদীর পানি ছাড়াছাড়ি নিয়ে কানাড়ি আর তামিলদের কামড়াকামড়ি কয়েকবছর আগে শিরোনাম হয়েছিল। যে দেশের এক রাজ্যই অন্যকে পানি দিতে চাই না সেখানে আমরা বিনিময় ছাড়া দিনে দেড়লাখ কিউবিক মিটার পানি দিব। কয়েকবছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে উত্তরভারত কয়লা-পাথর রপ্তানি বন্ধ করেছে অথচ আমরা তাদের গ্যাস দিব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব। হয়তো এসুখের খোঁজেই কবি লিখেছেন-“পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি এ জীবন মন সকলি দাও,তার মত সুখ কোথাও কি আছে আপনার কথা ভুলিয়া যাও।”
Leave a Reply