কোলাবরেটিভ আর্ট পারফরমেন্স ‘স্লিপিং উইথ এ রিজন ‘বা ‘প্রতিবাদী ঘুম’-এর অন্যতম শরিক অনুপম শইকিয়া-র ফেসবুক পৃষ্ঠা থেকে, ৪ মে#
হায়দ্রাবাদের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়টির সরোজিনী নাইডু স্কুলের মাস্টার অফ ফাইন আর্টস এর এবারের শেষ প্রদর্শনীর শেষ দিন ছিল ৩ মে ২০১৬। আমরা একদল ছাত্রছাত্রী খুব সক্রিয়ভাবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যে প্রতিবাদটি চলছে তাতে অংশগ্রহণ করেছিলাম। আমরা বাইরের বৃহত্তর রাজনীতির ক্ষেত্রে যেমন অংশগ্রহণ করেছিলাম, তেমনি ডিপার্টমেন্টে কী করলাম সে প্রশ্নও তো থেকে যায়। বিশেষ করে যখন ইদানিং বিশ্ববিদ্যালয়টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে দলিত স্কলার রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার পর।
আজ সকালে আমরা জানতে পারলাম, আজ উপাচার্য আপ্পারাও, যে কি না রোহিতের মৃত্যুর এই গোটা ঘটনাটার জন্য দায়ী, সে আসছে আমাদের প্রদর্শনী দেখতে। তার সামনে আমরা প্রদর্শনী করব না। সুতরাং অনুপমা আলিয়াস, ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী, সে ক্ষোভের সঙ্গে তার আঁকা ছবিটা ঢেকে দিতে বলল। পল্লব তার নিজের ক্যানভাসটা উলটো করে ঘুরিয়ে দিল, যাতে তার পেইন্টিং-টির পেছন দিকটাই কেবল গোচর হয়। আমরা ঠিক করলাম, প্রদর্শনীর হলঘরের মেঝেতে আমরা ঘুমাবো। আমি একটা চকখড়ি দিয়ে মেঝেতে ঘুমোনোর একটা জায়গা বানিয়ে নিলাম। তারপর একটা গোলাপী ব্যাগের মধ্যে নিজের মাথামুণ্ডু ঢুকিয়ে দিয়ে শুয়ে পড়লাম, যাতে আমি কিছু শুনতে না পাই, শুঁকতে না পারি, দেখতে না পারি, শ্বাস নিতে না পারি, অর্থাৎ উপাচার্যের উপস্থিতি অনুভব করতে না পারি। অনুপমা তার কানদুটো ঢেকে দিল হাতের চেটো দিয়ে, যাতে সে এই ক্ষমতার পরাকাষ্ঠার মুখ নিঃসৃত কোনো বাণী না শুনতে পায় অথবা আমাদের প্রদর্শনীতে তার কোনো হস্তক্ষেপ কানে না ঢোকে। পল্লব তার চটি দুটো খুলে সেগুলো মাথায় তলায় দিয়ে শুয়ে পড়ল, উপাচার্যের উপস্থিতিকে উপহাস করার জন্য। চিরঞ্জীবী শেষ বর্ষের আরেকজন ছাত্র। সে ওই সময় কিছু না জেনেই হলঘরে ঢুকে পড়েছিল। সেও আমাদের দেখাদেখি আমাদের পাশে শুয়ে পড়ল এই পরিসরে বিদ্রুপ করার জন্য। সত্যিই সে কিছু করছিল না।
নিচে এই প্রতিবাদের একটি চিত্র পঞ্জী রইল। ভিভিশ ভিজয়ন এবং গৌতম রামাচন্দ্রম এই ছবিগুলো তুলেছেন।
Leave a Reply