গুরদোয়ারার সামনে পৌঁছে জানতে পারলাম, কলকাতার মুসলমান সমাজের কিছু মানুষও এই জমায়েতে শামিল হচ্ছে। মিছিল শুরু হতে হতে বারোটা হয়ে গেল। গুরদোয়ারার একজন সন্ত গুরমুখী ভাষায় কিছু বললেন। তাঁর বক্তব্য শেষ হল একটা আওয়াজের মধ্য দিয়ে : ‘যো বোলে সো নিহাল, সৎ শ্রী অকাল’। প্রায় তিন ঘণ্টা ব্যাপী এই প্রতিবাদ মিছিলের মাঝে বারবার উঠেছে এই আওয়াজ। দশম শিখ গুরু গোবিন্দ সিং-এর সময় থেকে শিখেরা এই জয়ধ্বনি দিয়ে কোনো লড়াই শুরু করে এসেছে।
আমি আজ কুড়ি বছর ধরে এই রাস্তায় সাইকেল চালাচ্ছি : সাইকেল লেনের দাবিতে র্যালির কথা বলায় হেসে ওঠেন আজাদ
— এটা কি রেসিং সাইকেল?
হঠাৎ ঘাড়ের কাছ থেকে কে যেন জিজ্ঞেস করল। ডানদিকে মুখ ঘুরিয়ে দেখি, ছোটো বাংলা সাইকেলে সওয়ারি একজন রোগা মতো লোক, মাথায় সাদা রুমাল, আমারই বয়সী হবে, সাইকেলের সামনের রডে টিফিন কেরিয়ার ঝোলানো।
— না, হাইব্রিড সাইকেল। রেসিং সাইকেল হলে টায়ার সরু হতো।
— হ্যাঁ, এটা মোটা টায়ার। কোথায় যাবেন?
— ঢাকুরিয়ার ওদিকে।
— কোথা থেকে আসছেন?
— মদনপুর। আপনি?
— ও, আমি আসছি কল্যানী হাইওয়ে থেকে।
সাইকেল চালাতে চালাতেই কথা শুরু হল। ওই ব্যস্ত রাস্তায় পাশাপাশি সাইকেল চালিয়ে যাওয়া কঠিন। কথায় কথায় আমি জিজ্ঞেস করলাম,
— আপনি কোথায় যাবেন?
দিন দশ হল খোল করতাল বাজিয়ে মোটামুটি কিছু রোজগার হচ্ছে
তেমন জায়গাজমি আমার নেই, সামথিং। সামথিং মানে পাঁচ-সাত কাঠা, তাতে ধান চাষ হয়। আমন লাগিয়েছিলাম, হয়েছে মোটামুটি। আমি লাগাই, আমার স্ত্রীও লাগালাগি করে। চৈত্রের ৩ তারিখ (১৭ মার্চ) বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। দোল পূর্ণিমার পর। তারপরেই তো লকডাউন হয়েছে। সাত-আট মাস ওখানেই থেকে গেলাম। রোজগার বন্ধ। এই দশদিন হল এসেছি। মোটামুটি কিছু রোজগার হচ্ছে।
রাস্তা সম্প্রসারণে বিপাকে পড়া খেটে খাওয়া মানুষ চাইছেন নির্দিষ্ট সাইকেল লেন
রাস্তাটি সম্প্রসারিত হয়ে চার লেন হলে স্বাভাবিক ভাবেই গাড়ির গতি বাড়বে। দ্রুত গতির বড় যানবাহন দখল নেবে গোটা রাস্তা। আর উন্নয়নের এই গতির মুখে মুখ থুবরে পড়বে প্রান্তিকশ্রেণীর মানুষের জীবন। তাই তাঁরা দাবি তুলছেন দোকান/হকার উচ্ছেদ না করে সম্প্রসারিত রাস্তাটিকে চিহ্নিত করে তার মধ্যেই নির্দিষ্ট লেন তৈরির, যাতে নিরাপদ ও নির্ঝঞ্ঝাট যাতায়াত করতে পারে পথচারীরা। দূরদূরান্ত থেকে নিরূপদ্রপে জীবিকার টানে যেতে পারে দুধবিক্রেতা আহাদাত মন্ডল, রাজমিস্ত্রির কাজ করা সাঈদ মন্ডলেরা। স্কুলে যেতে পারে হিজলিয়া শাহ্জালালি হাইমাদ্রাসা বা শুড়িয়ার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ হাইমাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীরা।
এক্সাইড ব্যাটারি কারখানায় একই কাজে কারো বেতন আটত্রিশ হাজার, কারো তের হাজার সাতশ
১৯৯৬ থেকে এই ব্যাটারি কারখানা ইঞ্জিনিয়ারিং স্টেটাসেই চলছে। অথচ অ্যাসিড, লেড অক্সাইডের মত মারাত্মক সব কেমিক্যাল নিয়ে ওনাদের কাজ। বহু শ্রমিক কাজের মেয়াদ ফুরনোর আগেই এঁকেবেঁকে চলতে শুরু করেন। যতই মাস্ক পরুন না কেন, পরীক্ষা করলে শরীরে লেডের পরিমাণ পাওয়া যায় বিপদসীমার উপরে। আটঘন্টায় যথেষ্ট পরিশ্রমের কাজ। বিশেষত যারা অ্যাসেম্বলি বা ডিজাইনিং বিভাগে কাজ করেন। বেশিরভাগ কাজই ম্যানুয়ালি করতে হয়।
- « Previous Page
- 1
- …
- 5
- 6
- 7
- 8
- 9
- …
- 283
- Next Page »
সাম্প্রতিক মন্তব্য