কয়েকদিনের মধ্যেই রাজ্যের বিস্তীর্ণ শহরাঞ্চলে পুরভোট। এই ভোটে শহরের মানুষ তাদের প্রতিনিধি ঠিক করে, যারা তাদের হয়ে পুর-পরিষেবা দেখভাল করবে। অর্থাৎ এই ভোটের সঙ্গে শহরের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনের খুব নিবিড় যোগাযোগ।
এবারে নির্বাচনে প্রার্থীপদের জন্য মনোনয়ন দেওয়া শেষ হতেই দেখা গেল, অন্তত তিনটি পুরসভার ভোটেরই দরকার নেই, কারণ রাজ্যের শাসক দল ছাড়া অন্য কোনো দলের প্রার্থীই নেই। কলকাতা পুরসভার ফলে শাসক দল নিরঙ্কুশভাবে জিতবে, তা মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরেই জানিয়ে দিল রাজ্যের সবচেয়ে বড়ো মিডিয়া, তথাকথিত ‘জনমত সমীক্ষা’র নামে। ভোটের প্রচারে বেরোনোর আগেই প্রার্থীদের ছবিওয়ালা বড়ো বড়ো ফ্লেক্স, শাসক দলের চ্ছ্রউন্নয়ন’-এর ফিরিস্তি দেওয়া ব্যানারে ছেয়ে গেল শহরগুলো। বড়ো বড়ো বিরোধী দলগুলো চিটফান্ড কেলেঙ্কারি, ছবি দুর্নীতি, নারী নির্যাতন প্রভৃতি মিডিয়া বাহিত ‘ইস্যু’ নিয়ে পথসভা জমিয়ে দিল।
একথা ঠিকই, পানীয় জল, নিকাশি, জল জমে যাওয়া, বর্জ্য, পুকুর ভরাট, রাস্তাঘাট, হকার প্রভৃতি ইস্যু এল বটে ইতিউতি, কিন্তু ‘রাজনৈতিক’ তরজাতেই বেশি মজল প্রার্থীরা। শহরের বায়ুদূষণ, বৃক্ষনিধন, গাড়ি বেড়ে যাওয়া, বস্তি প্রভৃতি বেশ কিছু বিষয় প্রচারের বাইরেই রইল।
‘রাজনীতি’র ইস্যু সরিয়ে রেখে পরিষেবার বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসা তো এক জিনিস। তার থেকেও আরও গুরুত্বপূর্ণ হল, পরিষেবার বিষয়গুলিতে সাধারণ মানুষের মত নেওয়া। বড়ো দলের প্রার্থীরা কখনোই সেসবে মন দেয়নি, মন দেয় না।
শোনার চেয়ে হাঁক ডাক করে বলার দিকেই তাদের নজর বেশি।
Leave a Reply