শমীক সরকার, কলকাতা, ১২ মে#
গত বুধবার নদীয়া জেলার মদনপুর-এর শান্তিনগরের সবিতা নাগ (৫০) নামে এক মহিলাকে তার ঘরের বাইরে চন্দ্রবোড়া সাপে কামড়ায়। সময় রাত সাড়ে দশটা। মহিলা স্থানিয় অঙ্গনঅয়াড়ি কর্মী। তার স্বামীর স্টেশনের ওপর চায়ের দোকান। দুই মেয়ে। এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। অন্য মেয়ে টিউশন করেন।
বাড়িতে দুটি বাঁধন দিয়ে সবিতার আত্মীয়রা তাকে নিয়ে প্রথমেই যায় কল্যানী জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে। সেখানে ডাক্তার বলে বাঁধন খুলে দিতে। তারপর সবিতাকে একটা ইনজেকশন দিয়ে বলে, ক্রিটিক্যাল কেস, গান্ধীতে নিয়ে যান। গান্ধী হল কল্যানীর আরেকটি সরকারি হাসপাতাল। সেখান থেকে তাকে বলে কলকাতার পিজি হাসপাতাল নিয়ে যেতে। মাঝখানে কল্যানীর মেডিভিউ নার্সিং হোমেও নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু তারা বলে দেয়, সাপে কাটা রোগী তারা নেয় না।
পিজি হাসপাতালে তাকে বলে নীলরতন সরকার হাসপাতালে নিয়ে যেতে। রাত একটার সময় নীলরতন সরকার হাসপাতালে ভর্তি হন সবিতা। নীলরতন সরকার হাসপাতালে সবিতার চিকিৎসা শুরু হয়। চিকিৎসা শুরু হতে না হতেই সবিতা একা একাই শৌচাগারে যান। সেখান থেকে ফিরে এসে পা এবং মাথায় যন্ত্রণা নিয়ে অজ্ঞান হয়ে যান। ডাক্তাররা অনেক রকম ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করার চেষ্টা করলেও সে জ্ঞান আর ফেরে নি। শনিবার রাত ৯ টায় সবিতা মারা যান।
ঘটনাচক্রে সবিতা আমার মায়ের পরিচিত। তাই জানতে পারলাম।
আধুনিক জীবন নিয়ে আমরা অনেক কথা বলে থাকি। কিন্ত গ্রামের একজন সাধারণ ঘরের মহিলাকে যদি রাতে সাপে কামড়ায়, তাহলে তার চিকিৎসার এই হাল আমাদের উন্নয়নের বড়াইকে কি ব্যাঙ্গ করে না?
Leave a Reply