ছত্তিশগড়ের বিজাপুরে ২৮ জুন সিআরপিএফ গ্রামে ঢুকে গুলি চালিয়ে ১৭ জন নিরস্ত্র কমবয়সী ছেলেমেয়েকে মেরে ফেলেছিল, আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল ঘরবাড়িতে। এই গণহত্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলির একটি, সারকেগুদা-তে একটি তথ্যানুসন্ধান দল যায় ৭ জুলাই। তখন ওই গ্রামে বিশাল ক্যাম্প করে চাল ডাল বিলি করার বন্দোবস্ত করছিল স্থানীয় প্রশাসন। গ্রামবাসীরা ওই চাল ডাল নিতে অস্বীকার করে। ক্যাম্পের তাঁবু গুটিয়ে পিঠটান দেয় সরকারি অফিসাররা। তথ্যানুসন্ধান দল ওই পুরো ঘটনাটির ভিডিও রেকর্ডিং করে। সেখান থেকেই প্রতিবাদী গ্রামবাসীদের বয়ান হিন্দি থেকে অনুবাদ করে নিচে দেওয়া হল। অনুবাদ সম্পাদনা শমীক সরকার। মূল ভিডিও-তে গোনডি ভাষাতেও কিছু কথা ছিল, যা অনুবাদ করা যায়নি
আমাদের সতেরো জন গ্রামবাসীকে মেরে, সব ঘরগুলোকে জ্বালিয়ে দিয়ে এখন রেশন-পানি-ডিম দিতে এসেছ? আমরা কি গরু বাছুর? আমাদের ছেলেমেয়েগুলো কি এই জন্য মরেছে? আমরা কি তাদের জান বিক্রি করেছি? আমাদের কি ঘরে খাবার নেই? আমাদের কি পরার কাপড় নেই?
ওরা জানত না যে আমরা নকশাল নই? যাও নকশালদের গিয়ে দাও এইসব। কোত্তাগুড়ার লোকেরা জানে না যে আমরা নকশাল নই? আপনারা কি ভেবে এনেছেন এসব? নকশালদের দেবেন বলে? ওই সতেরো জন যাদের মেরেছ, তারা তো সব আসল নকশাল ছিল! ওরা মানুষ নয়! ওরা পড়াশুনো করা বাচ্চা নয়! ওই বাচ্চা মেয়েটা ভাষণ দিচ্ছিল মণ্ডপে উঠে, তাই তো ওকেই প্রথমে মারা হল! ওই তো আসল নকশাল! ওর বয়স বারোও হয়নি। ওরা সবাই নকশাল! নকশালদের কেউ রেশন-পানি দেয়? নকশালদের তো মারতে হয়!
আপনাদের কোনো মদত আমরা চাই না। রেশন-পানি চাই না। আমাদের সবাই চেনে। আমরা বাসাগুড়ার লোক, সারকেগুড়ার লোক, কোত্তাগুড়ার লোক। চারিদিকে সব নকশালি। মেরে দাও তাহলে আমাদের! জ্বালিয়ে দাও! গাড়ি ডাকো! আমাদের লাশগুলো তুলে নিয়ে যাও! সেদিন রাতে যেমন করে গাড়িতে ঠাসাঠাসি করে ভরছিলে লাশগুলো। যারা বেঁচে ছিল তখনও, তারাও মরে গেছে ওই ঠাসাঠাসিতে।
তোমরা একহাতে বন্দুক আর অন্য হাতে গুড় নিয়ে আসো! বাহ্ রে বাহ্।
Leave a Reply