সংবাদমন্থন প্রতিবেদন, এনএপিএম-এর প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে, ১৪ এপ্রিল#
উত্তর প্রদেশের শোনভদ্রতে আদিবাসী এবং দলিত সম্প্রদায়ের জমি অধিগ্রহণ বিরোধী প্রতিবাদের ওপর গুলি চালালো পুলিশ। তারপর বেধড়ক লাঠি চার্জ করলে বেশ কিছু মহিলা সহ অনেকে গুরুতর আহত হয়। আম্বেদকরের জন্মদিন ১৪ এপ্রিল গ্রামবাসীরা জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে ‘সংবিধান বাঁচাও দিবস’ পালন করছিল। প্রস্তাবিত কানহার জলাধারের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদে হাজার হাজার গ্রামবাসী সামিল হয়েছিল।
১৯৭৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কানহার জলাধারের প্রকল্পটি কেন্দ্রীয় জল কমিশনের অনুমোদন পায়। প্রকল্পটি উত্তরপ্রদেশের শোনভদ্র জেলার দুধি তেহশীলের সুগাওয়ান গ্রামের কাছে পাগান ও কানহার নদীর সঙ্গমস্থলে হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটির প্রস্তাব ছিল, ৩.০০৩ কিমি একটি মাটির ড্যাম তৈরি করা হবে, যার সর্বোচ্চ উচ্চতা হবে ৩৯.৯০ ফুট এবং এটা ৫২.৯০ ফুট অবদি বাড়ানো যাবে, যদি তা রাইহান্দ রিজার্ভারের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া যায়। এই প্রকল্পের ফলেউত্তরপ্রদেশ ছত্তিশগড় এবং ঝাড়খণ্ডের ১১১টি গ্রামের ৪১৩১.৫ হেকটর জমি ডুবে যাওয়ার কথা। প্রকল্পটি ১৯৮৯ সালে সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত হয়। কিন্তু ৫ ডিসেম্বর ২০১৪ সালে প্রকল্পের কাজ আবার শুরু হয়। আরটিআই করে জানা যাচ্ছে, এই প্রকল্পটি কোনো পরিবেশ ছাড়পত্র পায়নি। ২৪ ডিসেম্বর জাতীয় গ্রীন ট্রাইবুনাল নির্দেশ দেয়, প্রথমে পরিবেশ ছাড়পত্র এবং বন দপ্তরের ছাড়পত্র নিতে হবে উত্তরপ্রদেশ সরকারের সেচ দপ্তরকে। কিন্তু সেসবের তোয়াক্কা না করে উত্তরপ্রদেশ সরকার প্রকল্পের কাজ এগোতে থাকে।
তাছাড়া, কানহার জলাধার রাইহান্দ রিজার্ভারকে জল দেবে, যে জল ব্যবহার করা হবে সিংগরৌলিতে ২৫-৩০ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি এরই মধ্যে আদিবাসীদের ওপর সমস্ত ধরনের হিংসা করে চলেছে। এই আদিবাসীদের কেউ কেউ বহুবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে, পুলিশের হেনস্থার শিকার হয়েছে, পরিবেশগত বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে।
যে উত্তর প্রদেশ সরকার আদিবাসীদের ওপর লাঠি-গুলি চালালো, তারাই ঘটা করে কেন্দ্রীয় সরকারের জনস্বার্থবিরোধী জমি অধিগ্রহণ অর্ডিন্যান্সের বিপক্ষে আন্দোলন করছে! এই ঘটনা দেখিয়ে দেয়, কর্পোরেট-বিল্ডার-বুরোক্র্যাট-রাজনীতির আঁতাত এবং আমাদের দেশের পার্টি রাজনীতির নৈতিক অধঃপতন।
Leave a Reply