মিঠুন চাকমা, বাংলাদেশ, ৭ মার্চ#
হুগো শ্যাভেজ। ১৭ বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগ। সেনাবাহিনীতে থাকার সময় ১৯৯২ সালে তিনি ক্ষমতা দখলের জন্য উদ্যোগ নেন। এ সময় তিনি টিভিতে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে আবার ক্ষমতা ফিরিয়ে দেন বা দিতে বাধ্য হন। এরপর তাকে ৩০ বছর সাজা দেয়া হয়। এ সাজা নিয়ে ঠাট্টা করে তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতা দখলের চেষ্টার জন্য তিনি এক বছর মাত্র সাজা পেয়েছেন, বাকি সাজা পেয়েছেন ক্ষমতা দখল করতে না পারার জন্য বা ক্ষমতা দখল ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হবার জন্য। কিন্তু টিভি ভাষণে উচ্চারিত তার সেই ‘por ahora’ বা ‘For Now’ ‘এই সময়ের জন্য’ শ্লোগান জনতার মনে গেঁথে যায়।
১৯৯৮ সালে তিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হন। এবং তখন থেকেই তার সেই ‘por ahora’ বা ‘এই সময়ের জন্য’-এর অধ্যায শুরু হয়ে যায়।
ক্ষমতাগ্রহণ করার পরে তিনি ভেনেজুয়েলার তেল সম্পদ রাষ্ট্রায়ত্ত করেন। এরপরে তিনি কিউবার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেন। ভেনেজুয়েলা জনগণের বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য আত্মনিয়োগ করেন। তিনি টিভিতে ‘Alo Presidente’ নামে একটি অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ব্যবস্থা করেন। এতে তিনি সরাসরি জনগণের সাথে আলোচনা করতেন, বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতেন। তিনি সপ্তাহের ৪০ ঘন্টা শুধু জনগণের কথা শুনে বা জনগণের সাথে আলাপ করে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতেন। তিনি প্রচুর পরিশ্রম করতেন। তিনি দিনে ৪০/৫০ কাপ কফি খেতেন। ঘমাতেন কম। রাত জেগে কাজের মধ্যে থাকতেন। তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান, তাঁর নিরন্তর কাজের জন্য ল্যাটিন আমেরিকা তার স্বাতন্ত্র্যকে চিনতে পেরেছে। ইউএএস-এর বলয় থেকে বেরিয়ে নিজেদের বলয় গড়তে চেষ্টা করেছে। ২০১১ সালে তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। ২০১৩ সালের ৫ মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করলেন।
হুগো শ্যাভেজ কী করতে পেরেছেন বা কী করেছেন তা তার দেশের জনগণই নির্ধারণ করবে। কিন্তু তাঁর কাছ থেকে আমাদের এটাই শেখার আছে যে, আমাদের দেশের বা জাতির জন্য বা কোনো লক্ষ্যকে পূরণের জন্য ‘সাধক’ হতে হবে, ‘যোগী’ হতে হবে, হতে হবে ‘কর্মবীর’।
Leave a Reply