• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

‘বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর সোনার দামও নাকি কমছে — তা আলু, পেঁয়াজের দাম বাড়ল কেন?’

June 3, 2014 admin Leave a Comment

বিকর্ণ, কোচবিহার, ৩০ মে#

ছবি শমীক সরকারের তোলা
ছবি শমীক সরকারের তোলা

রবিবারে ঘুম থেকে ওঠার পরই মনে পড়ে যায় — একটু পরেই সপ্তাহের সবচেয়ে ভয়াবহ কাজটা করতে বেরোতে হবে — বাজার করা। প্রথমত, আমার স্মৃতিশক্তি খুবই খারাপ বলে যা আনতে বলা হয় তার বেশিরভাগই আমার মনে থাকে না। আর দ্বিতীয়ত, যা আমি নিয়ে আসি তার মধ্যে দু-একটি জিনিস বাদ দিলে বাকি সবই প্রায় নিকৃষ্টমানের হয়। এই কাজ যে আমি ইচ্ছে করে করি তা নিশ্চয়ই না, কিভাবে যেন প্রত্যেকদিনই ঠকে যাই, নতুন নতুন ভাবে। দোকানিকে অবিশ্বাস করে নিজের হাতে যেটা বেছে নিয়েছি, সেটাও দেখা যায় ওই একই মানের, হয়তো বা আরও খারাপ।
গত রবিবারে বাজারে গিয়ে দেখলাম সাদা আর লাল এই দুই রকম আলুর দাম কেজিতে ২ টাকা করে বেড়ে গিয়ে ১৬ টাকা আর ১৮ টাকা হয়ে গিয়েছে, জলপাই আলু (স্থানীয়) ২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ টাকা, পেঁয়াজ বেড়ে ৪০ টাকা। ব্যাপারখানা কী? এই তো শুনছিলাম বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর সোনার দামও নাকি কমতে শুরু করেছে — তা আলু, পেঁয়াজের দাম বাড়ল কেন? তরকারিওয়ালা বললেন ‘দাদা আলু এখন হিমঘরে যাচ্ছে, বাইরে নাই বেশি, তাই দামও বাড়তেছে, আরও বাড়বে। এরপর তো সাদা আলু আসবে হিমঘর থেকে, ওখানে জল টেনে আলুর বাইরের দিক নরম হয়ে যাবে, রান্না করার পর দেখবেন ভেতরে শক্ত আছে। খেতে ভালো লাগবে না। তখন লাল আলু নিতে হবে, ওটাও তখন ২৫-৩০ এ চলে যাবে, গতবার দেখলেন না?’
— আলু না হয় হিমঘরে গেল, পেঁয়াজ বাড়ল কেন?
— বৃষ্টিতে পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে, আসছে কম
— বৃষ্টি? বৃষ্টি কোথায়?
— দাদা পেঁয়াজ আসে নাসিক থেকে। আগে সাদা পেঁয়াজের দামটা একটু বেশি থাকত। এখন তো সাদা লাল সব একই দাম হয়ে গিয়েছে।
আমি আর কী করি, কোথাও বৃষ্টি কম বলে আম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আবার কোথাও বেশি বৃষ্টি হচ্ছে বলে পেঁয়াজ নষ্ট হচ্ছে। ইতিমধ্যে এক ভদ্রমহিলা আমার পাশের জনকে ধাক্কা দিয়ে আমার পা মাড়িয়ে সবজিওয়ালাকে বললেন ‘আলু দিয়ে দিন ৫ কেজি’। সবজিওয়ালা ভেতরে গিয়ে একটা ব্যাগে করে আলু এনে দিলেন। মহিলা ৪০ টাকা দেওয়াতে, দোকানদার বললেন ‘ম্যাডাম এখন দাম বাড়ছে আর ১০ টাকা দেন’। শেষমেশ আর ৫ টাকাতে রফা হল। ভদ্রমহিলা চলে যাবার পর আমি বললাম ‘ওটা কী আলু? অতো কম দাম?’ সবজিওয়ালা বললেন ‘ওটা বাছাই আলু দাদা, খারাপ যেগুলো বেরোয় সেগুলো, ওই যে মেয়েছেলেদের যে হোস্টেল আছে না, সেখানকার ম্যাডাম’।
কানের পাশে হঠাৎই বাজখাঁই গলায় আওয়াজ ‘তোদের মতো ঢ্যামনা নাকি? মুখে মোদি, হাতে দিদি..?’ আমি চমকে পাশে তাকিয়ে দেখি এক বড়োসড়ো চেহারার ভদ্রলোক মোবাইল কানে ধরে কথা বলছেন। এরপর একতরফা শোনা কথাগুলো ছিল এইরকম —
‘ছাড় ছাড় এবার দেখবি কাজ কাকে বলে, তোদের তো মুখে মুখেই সব হয়ে যায়। মুখে মুখেই ১০টা হাসপাতাল ৫০টা কলেজ হয়ে গেল।’
‘আরে থাম, তোদের এই ৩৪ বছরের গপ্প আর কয়দিন চালাবি? সিপিএমের বাবরি আর দাঙ্গার গল্প আর লোকে খায় না, এরপর শোনাতে আসলে লোকে থাপ্পড় মারবে, তোদের গপ্পও আর খাবে না, বাংলাদেশ থেকে লাথ খেয়ে যখন এসেছিলি এই দরদ কোথায় ছিল? এবার সব ঠিক হবে’।
একমুখ উত্তেজনা মেশান পানপরাগের পিক পড়ল রাস্তায়। খানিকক্ষণ চুপ, সবজিওয়ালা টাকা খুচরো করতে গিয়েছেন, আমি যেতেও পারছি না।
‘এই চিটফান্ডের টাকায় তো ফুটানি কম ছিল না, এবার সব বেরোবে ফুটো দিয়ে’।
ইতিমধ্যে সবজিওয়ালা এসে গিয়েছেন, আমি টাকা ফেরত নিয়ে এগিয়ে গেলাম। মাছের বাজারেও বেশ ভিড়। মূল্যবৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে মাছের দাম গুণোত্তর প্রগতিতে বাড়ছে। বাটা আর পোনার মতো জাতে উঠতে না পারা মাছও ২০০ টাকা কেজি। এখানকার বাজারে বিক্রেতারা দাম বলেন, এক পোয়া হিসেবে। হয় বাজারের বেশিরভাগ ক্রেতার এক পোয়ার বেশি ক্রয়ক্ষমতা নেই, অথবা এক কেজিতে যে দাম বলতে হবে সেটা বলতে চক্ষুলজ্জায় বাধে। যদিও বাজারের ভিড় দেখে মালুম হয় না ব্যাপারটা, মূল্যবৃদ্ধির সাথে সাথে অনেক মানুষেরই ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

আমার দরকার ছিল বোরোলী মাছ। একজায়গায় দেখে দাঁড়ালাম, ওঁর কাছ থেকে মাঝে মাঝে মাছ নেওয়ার কারণে অল্পবিস্তর পরিচয় আছে। আমাকে দেখে বললেন ‘দাদা নিয়ে যাও, অল্পই আছে।’
— দাম কত?
— আজকেই ১৬০ টাকায় বেচছি, তুমি ১৫০ দাও
— ১৪০ হয় না?
— তোমার থেকিয়া দাম বেশি নিবো?
— বোরোলী তো এই সময়ে পাওয়াই যায়, দাম বেশি কেন?
— পাওয়া যায় না দাদা, এখানে তোর্ষায় যা তোলে ওইটার দাম তো আরও বেশি, মানসাই-এ পাওয়া যায়, ওইটাও এদিকে আসে না। এইটা মারুগঞ্জের।
— পাওয়া যায় না কেন?

— কি কই দাদা মাছই তো নাই, আগে তো বোরোলীর সাথে খইলস্যা, পিটকারা, দারকিনা, ভ্যাদা, বালিয়া দেখা যাইত। খইলস্যা তো আমিই দেখিনাই কদ্দিন হয়া গেল, পিটকারা তবুও দেখা যায়।
— মাছ গেল কোথায়?
— কী জানি কোটে গেইল, আগে তো বর্ষায় ধানজমিতে খলুই দিয়ে ২ বার ঘাই দিলে ১ কেজি মাছ উইঠ্যা আসত, এখন তো কিছুই নাই, জমিতে এতো ইস্প্রে করে মাছ আর বাঁচে না। ট্যাপাই এও মাছ পাই না।
মাছওয়ালা আর এক খরিদ্দারকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লে আমি আবার এগিয়ে চললাম। ব্যাগে ২৫০ গ্রাম মাছ, ১৫০ টাকা দাম, মানে ৬০০ টাকা কেজি। স্থানীয় মাছের এরকমই দাম। এমনকী আগে প্রায় অচ্ছুত বালিয়া মাছও প্রায় ৪০০-৪৫০ টাকা কেজি। ভুটানে ডলোমাইট ফ্যাক্টরি হওয়ার পর নাকি উত্তরবঙ্গের নদীগুলোতে মাছের সংখ্যা কমে গিয়েছে অনেক। তাছাড়া কৃষিজমিতে অত্যধিক কীটনাশক ব্যবহারের জন্যেও নাকি মাছের বংশবৃদ্ধি সেভাবে হচ্ছে না, ডিম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
যাই হোক বাজার থেকে বেরিয়ে পড়লাম, বাজারের বাইরে রাস্তার ওপর বেশ কিছু দোকান বসে, ওদিকেই গেলাম। এদিকটাতে ভিড় কম। একটা চালকুমড়া হাতে নিয়ে দাম জিজ্ঞাসা করলাম। দোকানি দাম চাইল ১৫ টাকা। আমি জিজ্ঞাসা করলাম ণ্ণএত দাম কেন? তোমার গাছের নাকি?’ দোকানি বলল — ‘না দাদা কেনা, সবকিছুরই তো দাম বাইড়াই চলতেছে, কমার তো নাম নাই। আগে ভ্যানভাড়া নিত ২০ টাকা, এখন তো ৫০ টাকার কমে আইসতেই চায় না। ওদেরও তো চলা লাগবে, ভ্যানও কমে গেছে, সব ভুটভুটিতে নিয়ে আসে। খরছা কম, একবারে অনেক আনতে পারে, টাইম ধরা যায়। আমার ছোটোটার ভ্যান ছিল আগে, হাটের দিনে ৫-৬ ট্রিপ মারত, এখন ২ ট্রিপই মারতে পারে। খাবে কী? ভ্যান থোয়া (রেখে) ভাটায় (ইঁটভাটা) লেবারি করে।’
আমি জিজ্ঞাসা করলাম ‘ইঁটভাটায় কত পায়?’
— তাও ঠিক নাই, তবে চলে যায়, ওর ছেলেটাও পড়া বাদ দিছে, ভাটায় লেবারি করে, জয়পুরেও যাইতি পারে।
— আজকে এদিকে বাজারটা খালি খালি কেন?
— আর কয়েন না, কাইল ওদের ওদিকে মারপিট হইছে — বলে পাসের খালি জায়গাটা দেখাল। ওখানে একটা ছোটোখাটো লোককে এঁচোড় নিয়ে বসতে দেখেছিলাম কয়েকদিন। তার পাশেও বেশ খানিকটা জায়গা ফাঁকা — এতক্ষণে লক্ষ্য করলাম।
— মারপিট? কীসের?
— পার্টির মারপিট, যারা ওদের ভোট দেয় নাই তাদের বাড়িঘর ভাঙছে, আনন্দর ঘরও ভাঙছিল। সিপিয়েমের থেকে সব বিজেপি-তে গেল।
— কত লোক গেল?
— অনেক লোক গেছে, আরো লোক আইসে গিয়া পরে ওদের ঘরও ভাঙছে
— এত লোক আসলো কোথা থেকে?
— আরে লোকের কি কমতি আছে নাকি? ঠিকই আছে, পইড়ে পইড়ে মাইর খাবে নাকি সিপিয়েমের জন্যে।
— তোমাদের ওদিকে কী অবস্থা?
— আমাদের ওদিকে গোলমাল নাই, দাদা নিয়ে যান দশটা টাকাই দেন।
এতক্ষণে হাতে ধরা চালকুমড়া ব্যাগে ঢুকল। পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রে ভোটারের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার অবস্থা ভাবতে ভাবতে বাড়ির দিকে এগোলাম, আর কী নেওয়ার ছিল তা আর মনে পড়ল না, বাড়ি ফেরার পরই সাধারণত মনে পড়ে।

কৃষি ও গ্রাম বাজারদর, বিজেপি, মাছ, সিপিএম

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in