মনীষা চৌধুরী (গোস্বামী), কোচবিহার, ১৫ জুন#
২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল রূপান্তরকামী মানুষদের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ভারতের সুপ্রীম কোর্ট সমস্ত রাজ্যগুলিকে কল্যাণ দপ্তর গঠনের নির্দেশ দেয়। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শ্রীমতী শশী পাঁজা বোর্ড গঠনের আগাম ঘোষণা করেন। এই রায় এবং ঘোষণার পর আশায় বুক বাঁধছিল পশ্চিমবঙ্গের রূপান্তরকামী মানুষদের নিয়ে কাজ করা সমাজকর্মীরা। কিন্তু কিছুদিন আগে খবরের কাগজে (সংবাদ প্রতিদিন) তারা জানতে পারে, এই বোর্ড গঠন হয়ে গিয়েছে। সেখানে চেয়ারপার্সন সরকারের পক্ষ থেকে শ্রীমতী শশী পাঁজা এবং রূপান্তরকামী মানুষদের প্রতিনিধি মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বোর্ড-এ আরও আছেন অভিনেত্রী চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায় এবং সমাজকর্মী লীনা গঙ্গোপাধ্যায়।
এই বোর্ড নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে রূপান্তরকামী মানুষদের সংগঠনগুলির মধ্যে। কোচবিহারের ‘মৈত্রী সংযোগ সোসাইটি’, মুর্শিদাবাদের ‘সংগ্রাম’ এবং নদিয়া জেলার ‘সম্প্রীতি’ এই তিন সংগঠন মিলে খোলা চিঠি দিতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রীর কাছে। এই প্রসঙ্গে মৈত্রী-র সুমি দাস বলেন, পুরো প্রক্রিয়াটাই প্রথম থেকেই অস্বচ্ছ, অগণতান্ত্রিক। আলোচনায় কখনোই কলকাতার বাইরের কোনো সংগঠনকে ডাকা হয়নি। মৈত্রী থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ইমেল করা হয়েছিল একাধিকবার। বোর্ডে আছে বারোজন, কিন্তু প্রতিশ্রুতি ছিল যে রূপান্তরকামী সংগঠনের প্রতিনিধি থাকবে, তা নেই। যারা বিভিন্ন সময় দপ্তরের মিটিংয়ে গিয়েছে, তারা কেউ নেই। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, নদিয়া, মুর্শিদাবাদের সংগঠন তো দূরের কথা, কলকাতার বড়ো সংগঠনগুলিকেও খবর দেওয়া হয়নি।
সুমি জানান, নারী ও শিশুকল্যাণ দপ্তরে এই বিষয়ক মিটিংগুলোতে কিন্তু মানবী আসেননি। তাছাড়া রূপান্তরকামী আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা বলতে ‘অবমানব’ নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা — ওটুকুই। হতে পারে মানবী, চুর্ণী, লীনা-রা বিখ্যাত ও ক্ষমতাশালী মানুষ। কিন্তু ক্ষমতাই যদি মুখ্য হয়, তাহলে বোর্ডের আসল উদ্দেশ্যটা হারিয়ে যাবে না তো?
Leave a Reply