- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

কোজাগরী দুখের বনবাস

শম্বুনাথ মন্ডল, বিদ্যাধরপুর, ৩০ নভেম্বর#

দেশজ সংস্কৃতির সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগাযোগ কত গভীর তা বোঝা যায় সুন্দরবনের গ্রামগুলিতে এলে। শোনা যায় কলকাতার নামী হলগুলিতে বিখ্যাত নাটকের দলের নাটকে নাকি তেমন লোক হয় না। গত ২৯ অক্টোবর ২০১২ সোনারপুর থানার অন্তর্গত ভবানীপুর গ্রামের কয়ালপাড়ায় মদনমোহন কয়ালের বাড়িতে কোজাগরী লক্ষ্মীপূজোর রাতে কিন্তু বিপরীত ছবি দেখা গেল। খোলা আকাশের নীচে শুধু চাঁদোয়া টাঙিয়ে কোনও মঞ্চ বা সেট ছাড়াই শতাধিক মানুষ সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত তিনঘন্টা একাগ্র মনে ‘দুখের বনবাস’ পালা উপভোগ করল। অভিনেতা পরিচক্সালক সবাই সুন্দরবনের কুলতলি থানাভূক্ত একটি অখ্যাত গ্রাম জালাবেড়িয়া (৬ নং) এর ণ্ণমা নারায়ণী, মনসা, শীতলা, বনবিবি যাত্রা সমাজ’ এর অংশ। কেউ ভ্যান বা রিস্কা চালায়, কেউ বা চাষবাস করে বা মাছ ব্যবসা করে। সুন্দরবনের বাঘ থেকে রক্ষা করার দেবী বনবিবি ও তার আশ্রিত দুখী বালককে নিয়ে এই যাত্রাপালা। একটি শাড়িকে দুফেত্তা করে তার মধ্যে দু চারজন প্রবেশ করে নৌকায় পরিণত করে যেভাবে একটি দৃশ্য রূপদান করা হল তার থেকে এইসব মানুষ গুলির উদ্ভাবনী শক্তির প্রশংসা না করে পাড়া যায় না। প্রশ্ন জাগে, লোকসংস্কৃতির এই জনপ্রিয় আঙ্গিকগুলিকে শহুরে নাট্যকাররা ব্যবহার করতে এত কুন্ঠিত কেন?