• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

কুডানকুলাম থেকে ফিরে (১)

January 18, 2013 admin Leave a Comment

অমিতা নন্দী, কলকাতা, ১৪ জানুয়ারি#

web1কুডানকুলাম পরমাণু প্রকল্প বিরোধী জনআন্দোলনের খবর যখন জানতে পারি, তখন থেকে বেশ কয়েকবার নিজেদের মধ্যে কথা ওঠে পশ্চিমবঙ্গ থেকে একটা টিম ওখানে পাঠানো যায় কিনা। কিন্তু ওখানে যেভাবে রাষ্ট্রীয় দমনপীড়ন শুরু হয়ে যায় তাতে ওদের সঙ্গে কথা বলে ঠিকঠাক না হওয়া পর্যন্ত যাওয়াটা স্থগিত থাকে। দক্ষিণের কোনো রাজ্যের ভাষাই আমরা জানি না। ফলে নিজেদের মতো করে গিয়ে স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে কথা বলাও আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আর আমি তো ওখানে যাওয়ার কথা কোনোদিন ভাবিইনি। কিন্তু এবার মাসখানেক আগে থেকে জিতেন বলছিল যে ৩১ ডিসেম্বর ২০১২ থেকে ১ জানুয়ারি ২০১৩ সময়টাতে আন্দোলনের কেন্দ্র ইডিনথাকারাই গ্রামে নতুন বছর উদ্‌যাপনের অনুষ্ঠান হবে এবং ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আন্দোলনের সমর্থনকারী মানুষজনকে ওঁরা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তখন একটু একটু ইচ্ছা করছিল ‘গিয়ে দেখি না কেন, কী চলছে’। এখানকার কাজকর্ম — অফিস-সংসার সামলে আদৌ যেতে পারব কিনা সে সংশয় অবশ্যই ছিল। ফলে ট্রেনের টিকিট কাটতে দেরি হয়ে গিয়েছিল এবং ওয়েটিং লিস্টে আমরা ছিলাম, তিনজন — মেহেরদা (মেহের ইঞ্জিনিয়ার), জিতেন ও আমি। অবশেষে ২৭ ডিসেম্বর বিকেলে ৪টা ১০ মিনিটের ত্রিচি এক্সপ্রেসে হাওড়া থেকে চেপে বসলাম। ইতিমধ্যে আমাদের টিকিট অবশ্য আরএসি (রিজার্ভেশন এগেনস্ট ক্যানসেলেশন) হয়ে গিয়েছিল। ওই ট্রেনেই আমাদের আরেক সাংবাদিক বন্ধু মধু (বিশ্বজিৎ রায়) উঠেছিল, ওর কোচটা একটু দূরে, আলাদা টিকিট কেটেছিল বলে।
আমাদের সফরের শুরুটা বেশ ভালোই হল। করিডোরের পাশের পরপর দুটো সিটে মেহেরদার অর্ধেক বার্থ আর আমাদের দুজনের একটা বার্থ। মালপত্র আমরা যে যার সিটের তলায় ঢুকিয়ে দিয়ে আয়েস করে বসলাম। আমাদের কাছের যে কুপ তার ছয়টা বার্থে দুটি পরিবার আর দুজন সিঙ্গল অল্পবয়সি ছেলে। একটি হিন্দু পরিবার — স্বামী-স্ত্রী, নৈহাটির কাছে হালিশহরে থাকেন। ভদ্রমহিলা খুব মিশুকে, অল্পক্ষণের মধ্যেই সবার সঙ্গে আলাপ জমিয়ে ফেললেন। ওঁর স্বামী গ্রামীণ ব্যাঙ্কে কাজ করেন। একটা পথ-দুর্ঘটনার পর থেকে নানারকম রোগ ধরেছে, তাই চেন্নাই অ্যাপোলো হাসপাতালে চেক-আপ করাতে যাচ্ছেন। টিকিট চেকার উঠেই প্রথমে ওদের টিকিট এবং পরিচয়পত্র দেখাতে বললেন। দেখে শুনে তাঁর মন্তব্য, ‘বয়স তো মিলছে না। টিকিটে যা বয়স লেখা আছে তার সঙ্গে মেলে এমন কোনো প্রমাণ দেখান’। ওই দম্পতি তো আতিপাতি করে সব ব্যাগ হাতড়াতে লাগলেন। একটু নার্ভাসও হয়ে গেলেন। শেষে ডাক্তারি পরীক্ষার কাগজপত্র, প্রেসক্রিপশন ইত্যাদি দেখিয়ে ছাড়ান পেলেন। দ্বিতীয় পরিবারটিতে দুজন কমবয়সি স্বামী-স্ত্রী, হাসনাবাদের কাছে ওদের বাড়ি। যাচ্ছে কাজের জায়গায় — ত্রিচি থেকেও বাসে অনেকটা দূর যেতে হবে। মেয়েটি খুব চুপচাপ, একটু বিষণ্‌ণ। ওদের একটি আট বছরের ছেলে, তাকে ওরা মায়ের কাছে রেখে এসেছে। কারণ ছেলের পড়াশোনা শুরু হয়েছে। বউটি দুবছর ধরে স্বামীর সঙ্গে কাজে বেরিয়েছে। একটি হোসিয়ারি কারখানায় কাজ করে। ওখানে মেয়েদের আলাদা বিভাগ আছে। বারো ঘণ্টা কাজ করতে হয়, দৈনিক পাঁচ-ছশো টাকা পায়। এক-দেড় বছর বাদে ওরা বাড়ি যায়। দুর্গাপুজো, ঈদ — এসবে কোনো ছুটি নেই। যেখানে কাজ করে সেখানকার স্থানীয় দু-একটা ধর্মীয় উৎসবে ছুটি দেয়। ছেলেটা কারখানায় কাজ করে না, আউটে কাজ করে পিস রেটে অর্থাৎ ফুরনে মজুরি পায়। বউয়ের তুলনায় ও একটু বেশি রোজগার করে। ওখানে ঘরভাড়া বেশ হাই, খাওয়া খরচও পশ্চিমবাংলার তুলনায় বেশি। ফলে স্বামী-স্ত্রী দুজনে রোজগার না করলে বাড়িতে বেশি টাকা পাঠানো যায় না। বউটি ভোরবেলা উঠে রান্না করে, দশ মিনিট হেঁটে কারখানায় পৌঁছে যায়, সকাল আটটায় ডিউটি। রাতের রান্না করে ওর স্বামী। নাম জিজ্ঞাসা করায় বলল, ‘আমরা মুসলিম। ছোটোবেলা থেকে খুব অভাবে কেটেছে। আমাদের গ্রামের চেনা লোকজন চেন্নাইয়ের দিকে কাজে যায়। সেই সূত্রেই আমার ওখানে যাওয়া। গ্রামে কোনো কাজ নেই, আমাদের জমিও নেই।’ ভোটার আই-কার্ড ওদের কারো নেই, তবে টাকা দিয়ে এবার করাবে। কিন্তু একমাস চোদ্দ দিন আগে ওরা ফেরার টিকিট কেটেছিল, তখন আই-কার্ড দেখানো আবশ্যক ছিল না। তাই এবার ওদের কোনো ঝামেলা হল না।
আমাদের টিকিট চেক করার পর আই-কার্ড চাইলে মেহেরদা ওঁরটা দেখালেন। গ্রুপে একজনের কার্ড ঠিক থাকলে আর ঝামেলা নেই, জানালেন চেকারটি। কিন্তু ওই কামরাতেই আর একটা পনেরো-ষোলোজনের গ্রুপ যাচ্ছিল চেন্নাই, ভেলোরে দেখানোর জন্য। তাদের কারো ভোটার আই-কার্ড না থাকায় খুব ঝামেলা হল। অনেক তর্ক-বিতর্ক, অবশেষে ৪৮০০ টাকা ওদের দিতে হল। আই-কার্ড না থাকলে টিকিট-হীন যাত্রী ধরে নিয়ে পুরো ভাড়া এবং ২৫০ টাকা করে ফাইন চার্জ হবে, এটাই নাকি ১ ডিসেম্বর থেকে রেলের নতুন নিয়ম হয়েছে। আমরা অনেকেই সেটা জানতাম না। এ এক নতুন অভিজ্ঞতা।
আমাদের ট্রেন খড়গপুর স্টেশন পেরোতেই আমরা তিনজনে তিনটে বার্থ পেয়ে গেলাম, কারণ আমাদের নাকি আরএসি ১, ২, ৩ হয়ে গিয়েছিল। তিনটেই সাইড বার্থ। রাতের খাবার আমরা বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়েছিলাম। খেয়েদেয়ে রাত নটা নাগাদ শুয়ে পড়লাম। তখনো কয়েকজন ওয়েটিং লিস্ট এবং আরএসি-র প্যাসেঞ্জার চেকারের পেছন পেছন ঘুরছিল বা কোনোমতে বসে যাচ্ছিল।
ঘুম যখন ভাঙল তখন ট্রেন উড়িষ্যা পেরিয়ে অন্দ্রপ্রদেশে ঢুকে পড়েছে। আস্তে আস্তে গরম বাড়তে থাকল। শুনলাম চেন্নাইয়ের দিকে নাকি বেশ গরম, পাখা চালাতে হয়। আমরা যারা কলকাতা থেকে দশ ডিগ্রি টেম্পারেচারের আবহাওয়ায় প্রচুর শীতবস্ত্র ব্যাগে নিয়ে বের হয়েছিলাম, তারাও নিজেদের মূর্খামিতে নিজেরাই হাসতে থাকি।

আমাদের ট্রেনযাত্রা শেষ হওয়ার কথা রাত সাড়ে আটটায়, চেন্নাই এগমোরে। ওখান থেকে কোথায় কীভাবে যাব তা ঠিক করবেন ব্যবস্থাপকেরা। আমাদের বন্ধু মধু ওদিকে একলা পড়ে গেছে এস-৩ কোচে, আমাদেরটা এস-৮। সকাল থেকে চারবার নাকি মেহেরদার মোবাইলে ও ফোন করেছে, ওর ফোনের চার্জ ফুরিয়ে এসেছে। কোথায় কীভাবে নামতে হবে তাই নিয়ে ও একটু চিন্তিত। সারাদিন তো ট্রেনে সময় কাটতেই চায় না। তাই আমি একটু বেলার দিকে ট্রেনের ভিতর দিয়ে হেঁটে ওর কোচে চলে গেলাম। ওখানে ও জেনেছে যে অনেকেই নানারকম কাজের সূত্রে চেন্নাই যাচ্ছে। কেউ কেউ অবশ্য চিকিৎসার জন্য। মধু সাংবাদিক, ওর মনে হচ্ছিল যে আগে থেকে পরিকল্পনা করলে এইসব অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে গুছিয়ে সমীক্ষা করা যেত। আমি বললাম, হয় তুমি ব্যাগ ব্যাগেজ নিয়ে আমাদের কামরায় চলে এসো, বসার জায়গা হয়ে যাবে, অথবা এখানেই তোমার মতো করে কথাবার্তা বলতে থাকো। নামার আগে আমরা একত্র হলে সুবিধাই হবে। আর, কোথায় নামব সেটা তো ঠিক করাই আছে, ওখানকার লোকজনের সঙ্গে যেরকম কথা হয়েছে। বিকেলের দিকে মধু আমাদের কামরায় চলে এল।
আমাদের কামরায় আর একটি ছেলে চুপচাপ বসেছিল। ওর বাড়ি রানাঘাটের দিকে। চেন্নাইতে ও সোনার কাজ করে। প্রথমে কিছুদিন শিক্ষানবিশ হিসেবে থেকে কাজ শিখে নিয়েছে।
যথাসময়ে (খুব সামান্য লেটে) আমরা চেন্নাই এগমোর স্টেশনে নামলাম। তল্পিতল্পা নিয়ে অপেক্ষা করতে হল প্রায় ত্রিশ-চল্লিশ মিনিট। ততক্ষণে ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। শুনলাম নিম্নচাপের আগামবার্তা দেওয়া আছে। মোবাইলে জানা গেল, আমাদের নিতে আসার কথা ভার্গবী দিলীপকুমার নামে একটি মেয়ের। সে আসছে, কিন্তু ট্রাফিক জ্যামে আটকে পড়েছে। ইতিমধ্যে হাজির হল হরি, যাকে আমরা পরে মজা করে বলতাম ‘রক্ষাকর্তা হরি’। চেন্নাইয়ে থাকে, ফিল্ম স্টাডিজ-এর ছাত্র। বাড়ি তিরুনেলভেলির কাছে। চেন্নাই সলিডারিটি গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত। হরি বলল আমাদের রাতের খাওয়া সেরে নিতে। আমরা খেতে গেলাম। ততক্ষণ মালপত্র ওর হেফাজতে থাকল। স্থানীয় একটা হোটেল থেকে খেয়ে ফিরতেই দেখি ভার্গবী আরও তিনজনকে নিয়ে হাজির। দুটি মেয়ে আন্দ্রিয়া, স্টেফি আর একটি ছেলে হেগেন — গোয়া থেকে এসে পৌঁছেছে সেদিন সকালে। ওরা গোয়ার বিভিন্ন জায়গায় থাকে — একজন উত্তর, একজন মাঝখানে, একজন দক্ষিণে। একসঙ্গে একটি থিয়েটার গ্রুপে কাজ করে। আন্দ্রিয়া আর স্টেফি ইডিনথাকারাইয়ের অনুষ্ঠানে একটা কোরিওগ্রাফ মঞ্চস্থ করবে, জানলাম। হেগেন শুধু ওদের বন্ধু হিসেবে এসেছে। সবারই বয়স তেইশ-চব্বিশের মধ্যে। ভারী প্রাণবন্ত কর্মচঞ্চল তরুণ-তরুণী। আর ভার্গবী? যেমন বড়োসড়ো চেহারা তেমনি বিশাল একজোড়া ডাগর ডাগর চোখ। আর ওর কর্মদক্ষতার পরিচয় তো তারপর থেকে অনেক পেয়েছি আর মুগ্ধ হয়েছি। ভার্গবী ওখান থেকেই আমাদের একটা অটোতে তুলে দিয়ে বিদায় নিল। ও পরের দিন যাবে। এবার থেকে হরিই আমাদের পথপ্রদর্শক।  ক্রমশ

আন্দোলন কুডানকুলাম, কুডানকুলাম পরমাণু প্রকল্প

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in