জিতেন নন্দী, মহেশতলা রবীন্দ্রনগর, ২৫ সেপ্টেম্বর#
আজ দক্ষিণ ২৪ পরগনা গ্রামীণ পত্রপত্রিকা সমিতির বার্ষিক সম্মেলন হল সাধুরহাট অঞ্চলের আশুরালী গ্রামে। সমিতি এবার ষোলো বছরে পা দিল। এই সভায় উপস্থিতির হার কম থাকায় বক্তারা প্রায় সকলেই এই জেলার পত্রপত্রিকা চর্চা ও সমিতির কর্মকাণ্ড নিয়ে কিছুটা আত্মসমীক্ষা করেন। যে পয়েন্টগুলি উঠে আসে :
- লেখাপত্রের মানোন্নয়ন হচ্ছে না। তার জন্য দরকার সাহিত্যের আড্ডা। দরকার সাধনা ও অনুশীলনের মনোভাব।
- জেলার পত্রিকা-কর্মীদের মধ্যে মতের মিল নেই।
- পত্রিকা কর্মীদের মধ্যে হতাশা কাজ করছে। তারুণ্যের সমাবেশ কমে গেছে। নতুন ছেলেমেয়েদের উৎসাহিত করতে শিক্ষকদের অনীহা। নতুন প্রজন্ম এবং তাদের অভিভাবকেরা লাভক্ষতির হিসেবটাই বেশি করছে।
- জেলার বড়ো লেখক ও পত্রিকা-সম্পাদকেরা সমিতিকে গুরুত্ব দেয় না; জেলা গ্রন্থাগারে বই পাঠাতে চায় না।
- দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাহিত্যকর্মী হিসেবে বোধের অভাব এবং নাক উঁচু মনোভাব। কলকাতার রোশনাইয়ের হাতছানি।
- বেশি লেখক কবিতা লেখে। তাদের সমিতির প্রতি মনোযোগ নেই। গবেষণাধর্মী কাজের লোকেরা এতে রয়ে গেছে।
- এখান থেকে অনেকে নিজের দরকার মিটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কিছুই দিয়ে যাচ্ছে না।
সম্মেলনের প্রতিবেদন পাঠ করেন সম্পাদক অমৃতলাল পারুই। বক্তাদের মধ্যে ছিলেন ঠাকুরপুকুর-বেহালা অঞ্চলের সুকুমার মণ্ডল, মাথুরের অনন্ত ভট্টাচার্য, মেটিয়াবুরুজ-মহেশতলার জিতেন নন্দী, বিদ্যানগর জেলা গ্রন্থাগারের নিশিকান্ত মণ্ডল, মথুরাপুর-রায়দীঘি অঞ্চলের দেবীশংকর মিদ্যা, ফলতার সুমিত মোদক। শেষে প্রমোদ পুরকাইত, প্রাক্তন সভাপতি ফণীভূষণ হালদার এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের কিছু কথা উঠে আসে। প্রবীণ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় লিট্ল ম্যাগাজিন পরিসরের কর্মীদের আজকের সংকীর্ণ মনোভাবকে সুন্দরভাবে ব্যক্ত করেন এইভাবে — ‘আমগাছ থেকে বৃন্তচ্যুত হয়ে মাটিতে পড়ে পাকা আম মনে করছে, আমি একটা কী! তার মনে রাখা দরকার কোন বৃক্ষ থেকে সে রস সংগ্রহ করেছে। … কাজের জেদ থাকা দরকার, কিন্তু তা যেন অহংকার না হয়ে দাঁড়ায়।’
Leave a Reply