শমিত আচার্য, শান্তিপুর, ১০ জুলাই #
ট্রেনের ডেইলি প্যাসেঞ্জারদের নানা বিষয় নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করতে শোনা যায়। অনেক সময়ই তা যেমন অতি হালকা ও চটুল বিষয় হয়, অনেক সময় আবার তা অনেক গভীর কোন বিষয় হতে পারে। নিত্যযাত্রী হিসাবে আমাকেও তা অনেক সময়ই ভাবায়। বেশ কয়েকদিন ধরে ডেইলি প্যাসেঞ্জারদের বেশ দুশ্চিন্তা এবার পানিফলের কী হবে? শান্তিপুর-শিয়ালদহ মেইন লাইনে কালীনারায়ণপুর জংশন বলে যে স্টেশনটি আছে তার আশেপাশে ছিল প্রচুর জলাজমি। কয়েকশো বিঘা ওই জমিতে বর্ষার মরশুমে যে জল জমত, তেমন তেমন তাতে ফলত সুস্বাদু পানিফল। তিন প্যাকেট প্রায় ৫০০ গ্রাম, ৫ টাকায় বিক্রি হত দেদার।
চাষিজীবী মানুষ যেমন এই মরশুমে পানিফল বিক্রি করে দুটো পয়সার মুখ দেখত, তেমনি এই লাইনের অধিকাংশ হকার এ সময়ে অন্যান্য পসরা সরিয়ে রেখে পানিফল বিক্রি করে কিছু অতিরিক্ত উপার্জন করে নিত। এবছর আর খুব বেশি পানিফলের চাষ বেশি করা যায়নি কারণ ‘কালীনারায়ণপুর’ জংশনে পূর্বরেল বিরাট কনস্ট্রাকশনের কাজ শুরু করল। রেলের ওই সমস্ত জমি মাটি ফেলে ভরাট করে দিয়েছে। তার জন্য যেমন এবছর আমন, বোরো ধান চাষ হয়নি তেমনি পানিফলের চাষও করা যায়নি।
ডেইলি প্যাসেঞ্জারদের এবার সস্তায় পানি ফল খাওয়ার আর কোনো আশা রইল না। ট্রেনের আলোচনায় জানা গেল, শিয়ালদহ মেন লাইনে একমাত্র ‘কালীনারায়ণপুর’ স্টেশনের চত্বরে ও হাওড়া লাইনের সাঁতরাগাছিতে পানিফলের প্রচুর চাষ হয়। কালীনারায়ণপুর অঞ্চলের অনেক চাষি এই সময়টাতে অন্যান্য ফসল ফলানো বন্ধ রেখে পানিফলের চাষ করত। এমনও শোনা গেল রেলের ওই সমস্ত জমি যার যার দখলে থাকত তাদের অনেকে আবার মোটা টাকার বিনিময়ে এই মরশুমে ওই জমি কোনো চাষিকে লিজও দিয়ে দিত। রেলের উন্নয়নে এবার সবই বন্ধ হয়ে গেছে। অর্থকরী এ জাতীয় ফলচাষে সরকার কেন উৎসাহ দেখায় না! সে প্রশ্নও উঠে এল ট্রেনের আলোচনায়।
Leave a Reply