রামজীবন ভৌমিক ও শঙ্খজিৎ দাস, ২৮ ডিসেম্বর#
চেংমারির শরণার্থী শিবিরে দুপুরের খাবার খাচ্ছেন আমিন মুর্মু। বয়স পঞ্চাশ। পাশে ওঁর স্ত্রী একটি বছর দুই আড়াইয়ের বাচ্চাকে মমতাভরে খাইয়ে দিচ্ছেন। চারদিকে লোকের জটলা। জটলা ভেঙে ভেতরে গিয়ে জানা গেল, ছেলেটির বাড়ি বেতবাড়ি। চেংমারি শরণার্থী শিবির থেকে ১.৫ কিমি আসামের দিকে গেলে বর্ডারের কাছেই বেতবাড়ি গ্রাম। সেখানে বাচ্চাটিকে বাড়িতে রেখে বাবা-মা চাষের কাজে গিয়েছিল। ছেলেটির বাবার নাম রামলা মুর্মু। গণ্ডগোল লাগলে ছেলেটি একা বাড়িতে ছিল, তাকে ফেলে আসতে পারেননি আমিন মুর্মু। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে বুঝেছেন, ওর মা-বাবা খেত থেকেই পালিয়েছে অথবা নিহত হয়েছে। সেই কারণেই নিজের ছোটো দুটি সন্তানের সাথে পাশের বাড়ি থেকে রামলা মুর্মুর ছেলেটিকেও সাথে নিয়ে নদী, বন হেঁটে পালিয়ে এসেছেন। জঙ্গলে বুড়াঠাকুরের (হাতির) সামনে পড়লেও ছেলেটিকে ছাড়তে মন চায়নি। উপস্থিত অনেকেই ছেলেটিকে দত্তক নিতে চাইলে আমিন মুর্মু বলেন, উনি পাঁচদিন থেকে ছেলেটির বাবা-মাকে খুঁজে যাচ্ছেন। আসাম বেঙ্গলের সব ক্যাম্পে ফোন করে করে খোঁজ নিচ্ছেন। কিন্তু কোনো খবর পাচ্ছেন না। যদি ওর বাবা মাকে না পান, তাহলে নিজেই বাচ্চাটাকে মানুষ করবেন।
Leave a Reply