কুশল বসু, কলকাতা, ১ আগস্ট#
বাংলাদেশের গার্মেন্ট বা পোশাক শিল্পের তোবা গ্রুপের পাঁচটি কারখানার শ্রমিকরা আজ পাঁচদিন ধরে আমরন অনশনে।
বকেয়া বেতন-ওভারটাইম-বোনাসের দাবিতে শ্রমিকরা রাস্তায় পুলিশের লাঠি, রাবারবুলেট খেয়েছে। বিজিএমইএ ঘেরাও করেছে, শ্রম মন্ত্রণালয়েও গিয়েছে। সর্বশেষ গত ২৬ জুন ২০১৪ তারিখে তোবা গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার (মিতা) বাংলাদেশ গার্মেন্ট মালিক সংগঠন বিজিএমইএ-র প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে শ্রমিক নেতাদের কাছে লিখিত অঙ্গীকার করে, মে-র মজুরী ৩ জুলাইয়ের মধ্যে, জুন-এর মজুরি ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে এবং ঈদ বোনাস ও জুলাই-এর ১৫ দিনের মজুরী ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে প্রদান করা হবে। কিন্তু তা না মেটানোয় ঈদের মুখে বিপদে পড়ে আমরণ অনশনে বসেছে পাঁচটি কোম্পানির ষোলোশো শ্রমিক। পাঁচদিনের অনশনে ৬৬ জন অসুস্থ।
কিন্তু গতকাল এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিজিএমইএ জানিয়েছে, তারা চেষ্টা করবে এক সপ্তাহের মধ্যে কিছু বকেয়া মেটানোর। শ্রমিকরা অনশন তুলে নিক। এই সম্মেলনে মালিকরা ঠারেঠোরে আরো জানিয়েছে, তোবা গ্রুপের অন্যতম মালিক দেলওয়ার হোসেনের কারাবন্দী থাকার কারণেই বিদেশি ক্রেতা কোম্পানিগুলো অর্ডার দিতে চাইছে না। তাই টাকা নেই।
শ্রমিকদের ইউনিয়নগুলি মালিকদের এই ফাঁপা প্রতিশ্রুতি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং অনশন জারি রেখেছে। ১ আগস্ট এক বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানিয়েছে, শ্রমিকদের কাঁধে বন্দুক রেখে তাজরিন ফ্যাশনস অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিক গণহত্যায় অভিযুক্ত মালিক দেলওয়ারের জামিনের ছক কষছে বিজিএমইএ। তারা চায় দেলওয়ারের সর্বোচ্চ শাস্তি। উল্লেখ্য, ২০১২ সালে ২৪ নভেম্বর ঢাকায় তোবা গ্রুপের তাজরিন ফ্যাশনসে আগুন লাগে। মাল চুরির ভয়ে কারখানার সমস্ত গেট বন্ধ করে দেওয়ায় শ্রমিকরা, বেশিরভাগই মহিলা, কারখানায় আটকে পড়ে মারা যায়। মৃত অন্তত একশো সতেরো, আহত দুশোর বেশি। শ্রমিক গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত দেলওয়ার ফেব্রুয়ারি মাস থেকে জেল-এ।
সংবাদে প্রকাশ, মালিকদের চাপের মুখে নতিস্বীকার করে দেলওয়ারকে জামিন দিতে চলেছে বাংলাদেশ সরকার।
Leave a Reply