ইসিএল-এর কুনাস্তারিয়া এলাকার মহাবীর কয়লাখনির চারজন নিরাপত্তারক্ষী কুনাস্তারিয়া এলাকার মুখ্য জেনারেল ম্যানেজারের বাড়ির গেটের সামনে ২ মে থেকে অনশন অবস্থান করছেন। ১ এপ্রিল ২০১২-তে তাঁদের ছাঁটাই করা হয়েছে। এঁরা হলেন দীপক চক্রবর্তী (৫ বছর ধরে কাজ করছেন), মুহাম্মদ সিরাজুল এবং উপেন্দ্র শা (দেড় বছর ধরে কাজ করছেন), মনসুর আনসারি (তিনবছর কাজ করছেন চুক্তির ভিত্তিতে)।
এই নিরাপত্তারক্ষীরা এই কাজে অনেকদিন বহাল আছেন, কিন্তু এর মধ্যে প্রাইভেট সিকিউরিটি এজেন্সি বছর বছর বদল হয়েছে। এই চারজনই আগের সিকিউরিটি এজেন্সিতে কাজ করেছেন, তাঁদের প্রভিডেন্ট ফান্ড নম্বরও রয়েছে। তাঁরা এমনকী ইসিএল-এর কাছ থেকে সরাসরি ব্যাঙ্ক ট্র্যান্সফার মারফত সেপ্টেম্বর ২০১১ থেকে ডিসেম্বর ২০১১ অবধি মাস মাইনাও পেয়েছেন। ওই সময় ভুয়ো লাইসেন্স কাজে লাগিয়ে এজেন্সি চালানোর দায়ে ওই সিকিউরিটি এজেন্সি কালো তালিকাভুক্ত হয়ে গিয়েছিল। এই নিরাপত্তারক্ষীরা গত তিনমাস বারোদিন ধরে নতুন সিকিউরিট এজেন্সি উত্তরাখণ্ড পূর্ব সৈনিক কল্যাণ নিগম লিমিটেডে কাজ করছিলেন, গত ১ জানুয়ারি ২০১২ থেকে। ১৩ এপ্রিল কোনো কারণ না দেখিয়েই ম্যানেজার তাঁদের কাজে ঢুকতে দেননি।
এই চারজন কুনাস্তারিয়া এলাকার মুখ্য জেনারেল ম্যানেজারের কাছে কারণ জানতে এসেছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী এজেন্সি কোনো এরিয়ার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি ছাড়া কোনো নিরাপত্তারক্ষীর বদলি করতে পারে না। এমনকী কোনো নতুন নিরাপত্তারক্ষীকে মোতায়েনও করতে পারে না। এক্ষেত্রে কন্ট্রাক্টর মহাবীর কোলিয়ারির ম্যানেজমেন্টের কাছে ১৮ জন নিরাপত্তারক্ষীর একটি তালিকা পাঠিয়েছে, যেখানে এই চারজনের বদলে অন্য চারজনের নাম দেওয়া হয়েছে। সেটাতে মহাবীর কোলিয়ারির ম্যানেজারেরও সই আছে। মুখ্য জেনারেল ম্যানেজার এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
অতএব ধরে নেওয়া যেতে পারে, এই ধরনের বেআইনি ছাঁটাই ও চুক্তিভঙ্গকে উৎসাহ দিচ্ছে কুনাস্তারিয়া এরিয়া ও মহাবীর কোলিয়ারির ম্যানেজমেন্ট। চুক্তিভিত্তিক বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীদের মতে, এঁরা ছাঁটাই হয়েছেন কারণ, এঁরা ইসিএল-এর সরকারি সম্পত্তি চুরির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।
পুনর্বহালের দাবিতে এই চারজন ২৬ এপ্রিল থেকে ধরনায় বসেন কুনাস্তারিয়া অফিসের সামনে। তারপর তাতে কাজ না হওয়ায় ২ মে থেকে অনশন শুরু করেন তারা। আসানসোল নাগরিক অধিকার অ্যাসোসিয়েসনের পক্ষ থেকে সাবডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হয় এই চারজনের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে। ১০ দিন অনশনের পর একজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। অধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হয়, প্রাইভেট সিকিউরিটি এজেন্সিগুলির বিভিন্ন বেআইনি কার্যকলাপ এবং তাতে ইসিএল-এর ম্যানেজমেন্টের কিছু অংশের যুক্ত হয়ে পড়ার বিরুদ্ধে। ১৬ মে এরিয়া ম্যানেজমেন্ট অনশনরতদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছে।
সুদীপ্তা পালের পাঠানো ‘অধিকার’ সংগঠনের প্রেস বিজ্ঞপ্তি, আসানসোল, ১৩ মে
Leave a Reply