শমিত। শান্তিপুর। ১৯ জুলাই, ২০২০। #
আমরা কোনো ফলের গাছ দিচ্ছিনা। শুধু কাঠের গাছ দেওয়া হচ্ছে। – পলাশগাছির বিট অফিসারের কথায় পাশ থেকে কে যেন ফুট কাটল – নাহলে বৃক্ষচ্ছেদন হবে কী করে? ১৪-২০ জুলাই অরণ্যসপ্তাহ উপলক্ষ্যে রাজ্যব্যাপী বনমহোৎসব শুরু হয়েছে। রাজ্য জুড়ে চারাগাছ বিতরণও করা হচ্ছে। শান্তিপুর ব্লকের নদিয়া- মুর্শিদাবাদ বনবিভাগের তরফে বাহাদুরপুর পলাশগাছি বনাঞ্চলে ১৪ তারিখ থেকে গোটা দশেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে আকাশমনি, জারুল, সেগুন, মহানিম, মেহেগনি প্রভৃতি ‘কাঠের গাছ’ দেওয়া হচ্ছে। ‘কাঠের গাছ’ কথাটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ, গোটা রাজ্য জুড়ে যেভাবে গাছ কাটার ধুম পড়েছে। সম্প্রতি মাজদিয়া, যশোর রোড আবার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধার থেকে লক্ষ লক্ষ গাছ কেটে সাবাড় করে দেওয়া হয়েছে। সেইজন্য কাঠের গাছের চাহিদা তুঙ্গে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো যত্ন করে গাছ বড় করে তুলবেন আর কাঠের কারবারিরা সেই গাছ কেটে সাবাড় করে দেবেন!
দেনুই, মোল্লাবেড়, নারায়ণপুর, বাঁশডোব গ্রাম দিয়ে ঘেরা বাহাদুরপুর-পলাশগাছির ১৩৫ হেক্টর অর্থাৎ ১৮০০ বিঘার বিস্তীর্ণ এই বনাঞ্চল। আমফান ঝড়ের পর একবার যাওয়া গেছিল এই ফরেস্টে। খোঁজ নিয়ে জেনেছিলাম প্রায় এক হাজারের ওপর গাছ পড়েছে। সম্প্রতি চারাগাছ আনতে গিয়ে জানা গেল, আকাশমনি গাছ বেশি পড়েছে। কিন্তু এখনও সব গাছ তুলে লগ করা হয়নি। রাজ্যের ইতিউতি শোনা যাচ্ছে ফরেস্টের প্রচুর গাছ কেটে চোরাগোপ্তা বিক্রি করে দেবার খবর। বাহাদুরপুর ফরেস্টে প্রায় ৪-৫টা গ্রাম ভীষণভাবে এই বনাঞ্চলের উপর নির্ভরশীল। তাদের জ্বালানীর একমাত্র উৎস এই ফরেস্ট। ফেরবার সময় ফরেস্টের এক কর্মী বললেন, আমাদের এখানে ফলের গাছ নেই বললেই চলে। নাহলে হনুমানের পাল ফরেস্ট ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে।
Leave a Reply