• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • ২০১২-র আগস্ট অব্দি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

সেই যে মোদের পদ্মাপারের দিনগুলি

September 28, 2011 admin Leave a Comment

মনোজিত বসু, কামারথুবা, ২৮ সেপ্টেম্বর#

পদ্মা আমার ছেলেবেলার গণ্ডির বাইরে ছিল। সম্ভবত মামার সাইকেলে চড়ে কচুরিপানা ফুলের সৌন্দর্য্যে ভরা জলের আধার হিসেবে তাকে প্রথম দেখি। তারপর পদ্মায় পা রাখলাম সন্টুদার সঙ্গে মাধ্যমিকের পর। ফুটবল খেলতে গিয়ে। ততদিনে ট্রান্সফর্মারের মাঠ বেহাত। অথবা সত্যিই হস্তগত। বিল্টাই প্রকাশরা তখন পুরোদমে খেলে। সে সময় পদ্মায় জল থাকত ছয় থেকে ন’মাস। প্রখর বৈশাখে জল শুকিয়ে এলে দুপুরে কচুরিপানা ও অন্যান্য জলজ গাছের স্তূপ জড়ো করে আগুন দেওয়া হত। খয়েরি ধোঁয়া পাকিয়ে পাকিয়ে উঠত। পড়ে থাকা ছাইয়ে পাঁক আলো করে ফেলে যাওয়া, বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত। ছাইয়ের নিচে শামুক গুটি, শক্ত মাটির ডেলা। মধ্যে ফুটবল খেলার বিক্রম। তারপর পদ্মার জল থাকার সময় কমেছে। কমেছে কচুরিপানার বহর। সন্টার দিদির পিএইচডিতে পদ্মার পড়ে থাকা খাত প্রসঙ্গে মিয়েন্ডার স্ক্রল, মিয়েন্ডার স্কার শব্দগুলো মনে আছে কেবল। নামের ইতিহাস খুজতে গিয়ে জানলাম, ‘থুবা’-র অর্থ নদীর ধারে ধারে বৌদ্ধ স্তূপ। সুন্দরবনের এইসব প্রান্ত দিয়ে সমুদ্রে পড়ে সোজা জাভা সুমাত্রা যাওয়ার ব্যবস্থার কথাও শোনা গেছে। সাধুর মায়ের ডোবা কাটতে গিয়ে নৌকা পাওয়া গিয়েছিল। সন্টাদের বাড়ির কাছে মাটি কাটার সময়ও একটা লোহার বেড় পেয়েছিল। কী কাজের, কে জানে। তবে সেটা মোটেই আধুনিক নয়। সেদিন জলের পারে বসে কুমিরের গল্পও শোনা গেল। এখনও সারি সারি পুকুর আর পুকুর, বৃষ্টির জল নদীখাতকে প্রমাণ করে। এটাই হয়ত নাংলার বিল — ঊনসত্তর পুকুর পেরিয়ে পেরিয়ে দেগঙ্গা — সেক্ষেত্রে চন্দ্রকেতুগড় সভ্যতার সঙ্গে একটা যোগ পাওয়া যেতে পারে।
পদ্মার মজে যাওয়া খাতের ওপরেই গড়ে উঠেছে আজকের হাবরা। হরিণঘাটা থানা এলাকার যমুনা নদী থেকে পদ্মার উৎপত্তি বলে অনুমান করা হয়। কাজলা, বনবনিয়া হয়ে হাবরার নিকটে এসে পদ্মা পরবর্তীকালে দু’টি ধারায় বিভক্ত হয়ে যায়। কয়েকবছর আগেও হাবরার পুরোনো বাটার দোকানের সামনে উঁচু কালভার্টের নিচ দিয়ে পদ্মার মজা একটা খাত প্রবাহিত হত। এই শাখাটি নাংলা বিলে এসে মিশেছে। অপর শাখাটি হাবরা মডেল ও কামিনীকুমার গার্লস স্কুলের পাশ দিয়ে জিরাট রোড ও যশোর রোড অতিক্রম করে দক্ষিণ হাবরার ভেতর দিয়ে কুমড়াকাশিপুর হয়ে বেড়াচাঁপার পাশ দিয়ে নাংলা বিল হয়ে স্বরূপনগর থানার চারঘাটের কাছে ঢিবিতে এসে মিশেছে। বস্তুত নাংলা বিলের উত্তরদিক থেকে পদ্মার দুটি ধারাকে ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, এটি একটি অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ।
বর্ষাকালে পদ্মা জলে ভরে উঠত। আশেপাশের জমিতে জল থাকত। বহু জলা এখানে সৃষ্টি হয়েছিল। এই জলাভূমিকেই বলা হয়, পদ্মার বেনোজমি। নদীর পুবদিকে পদ্মার সৃষ্ট প্রায় ছাব্বিশ বর্গকিলোমিটার বেনোজমিতে ছিল বহু অর্ধচন্দ্রাকৃতির হ্রদ। নদী প্রতিনিয়ত মরে গিয়ে পরিত্যক্ত ভূভাগে একাধিক হ্রদ সৃষ্টি করেছে। যেমন বিলবল্লী, দাঁতভাঙা, পদ্মাবিল, নাংলাবিল, ভুবনপুরের জলা। পদ্মার উৎপত্তিস্থল আজকের দিনে সঠিকভাবে নির্ণয় করা শক্ত। ইছামতির উত্তর-পশ্চিমদিকে যমুনা ও পদ্মা নামে কথিত দুটি নদী ছিল। এনিয়ে মতভেদ আছে। সম্ভবত বিদ্যাধরি মজে যাওয়ার পর পদ্মার সৃষ্টি হয়েছিল। আসলে নিম্ন অববাহিকায় জমির ঢাল বারবার পরিবর্তনের ফলে অসংখ্য ছোটো নদীনালার সৃষ্টি হয়। সম্ভবত এরকমই একটি নদী পদ্মা।
গত দুবছর জল প্রায় না হওয়ায় একে একে পদ্মার মধ্যে ঘর বসতি বেড়েছে। আর খেলোয়াড়ের সংখ্যাও বেড়েছে। রাজু থেকে সুমন, বিধান, গ্যাদো হয়ে অরিজিত পর্যন্ত। দুবছর আগের বর্ষায় যে জল উঠেছিল, তাতে কেঠোকাকা ঘর ছেড়েছে। সাগরের মা ঘর গড়েছে তারও নিচের ঢালে। পাড়া তৈরি হয়েছে। দক্ষিণের রাস্তার দিকে, বাহান্ন পরিবারের দিকে একটু উঁচু ধরনের বহু বাড়ি ফাঁকা। আবার কারো কারো নানা কলা কৌশলে থাকার চেষ্টা। উল্টোদিকে শীতল পাটি তৈরির গাছের বাগালের দিকে গোবিন্দ ও অন্যরা অনেকেই উঠে গেছে। এখনও পদ্মার মধ্যে দু-তিন ঘর আছে। জল আনা ও অন্যান্য কাজকর্মের জন্য ওরা টিউবে চড়ে এপার ওপার করছে। পারে আসার দুটো রাস্তায় হাঁটু থেকে ঊরু পর্যন্ত জল। ফুটবল মাঠের গোলপোস্টটা ফুটখানেক মাথা তুলে আছে, যেন মাপনকাঠি। কলার ভেলা প্রথমদিকে ভালো চলে। তবে গাড়ির টিউবে সেরকম পচার ভয় নেই। পুরোনো লরি বাসের টিউবের চাহিদা ভালো। আড়াইশো থেকে তিনশো টাকা প্রতিটি। বিজনের মায়ের দুঃখ টিউব দুইটা যদি না ব্যাচত, ঘর ছাইড়া নন্দবাসী স্কুলে থানা গাড়তে হইত না। বিজনের ঠাকুমার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল গত জলে। আমাদের পদ্মার বুকে প্রথম স্থায়ী বাসিন্দা উঁচু ভিটেমাটির মেঝেতে প্লাস্টিকের বস্তা পেতে ইট দিয়ে তোলা চৌকিতে বসবাস আর টিউবে চড়ে এপার ওপার আসা যাওয়া।  ডিসেম্বরের শীতে ঘরে ফেরার সময় টিউবে উঠতে গিয়ে বুড়ি জলে পড়ে গেলে তার সঙ্গে আলাপ হয়। আদি বাস ছিল বরিশাল জেলা। তিনি বলেন, ‘মরাইরে প্যাটে থুইয়া সোয়ামী মইরা গেল। তারপর মরাইরে বড়ো করা, বিয়া দেওয়া, তারপর ইন্ডিয়া। বুড়ির আবার বৌয়ের সাথে পটে না। বিজনের মায়ের আবার মানসিক সমস্যাও কিছু আছে। বুড়ি যতদিন আছে সংসার ধরে রেখেছে। কাকার জন্য টিবির ডটের ওষুধ পৌঁছে তাকে সারিয়েছে।  কাজ যখন করতে পারবে না বুড়ি, তখন কী হবে তাই নিয়ে চিন্তিত। এই বাড়ি নাকি তার বৌয়ের ফুল বেচা টাকায় তোলা। তাই সে বলেছে, ঠ্যাং ধরে নামাইয়া দেবে।
এদিকে সানিয়া মির্জা (ওই ছাপ্পা মারা গেঞ্জি পড়া ছেলের ডাকনাম), আকাশ ও অন্যান্যরা সাতটা পরিবার এখন দোতলার নতুন দালানে। বাবুদের বাড়ি জল। ইটতোলা খাটের পালঙ্কে বসবাস। গরু বাছুর ওপরে। রাস্তার ধারে ছাউনির বাগানে তাঁবু খাটিয়ে পাশাপাশি দুটো পরিবার। আগের ক’ঘর ভাড়া চলে গেছে। এবার শীতের আগে কোনো ফেরার খবর হবে না। বৈশাখের আগে জল শুকোবে না হয়ত।
সেই যে মোদের পদ্মাপারের দিনগুলি। যখন কল্পনা পরিকল্পনা করতাম পদ্মাকে আবার নদী করে দেব, নৌকা চলার ঘাট, জল পরিবহণ, দিনে দিনে পুনর্বাসনের ব্যয় বাড়ছিল। স্মৃতি ফিরে ফিরে আসে, কবছর বাদে বাদে পদ্মার জল — প্রায় নদী জলা জঙ্গল পূর্ণ, সন্ধ্যাতারারা জাগে। আবার সেই চক্রব্যুহ। 

কৃষি ও গ্রাম পদ্মাপার, বেনোজমি

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

সম্পাদকীয়

নীমা তেনজিনদের স্বপ্ন কি সার্থক হবে ?

একটি রাজনৈতিক সুইসাইড নোট

এই বিভাগের আরও

দেশের খবর

নিজেদের চাষের খবর দিলেন, দিল্লির আন্দোলনের খবর নিলেন সরবেড়িয়ার চাষিরা

গ্রামে বাড়ছে অভাবী বিক্রি। কৃষক মান্ডির হ্যাপার চাইতে চাষির ভরসা কাছের আড়ৎ।

এই বিভাগের আরও

সংস্কৃতির হাল

মরজীবনের গান গাইতে মিলনের অপেক্ষায় থাকে আজাহার ফকিরের অমর মেলা

ঘরে রাখা শস্যের বীজ ভালো আছে কিনা দেখে নেওয়া হয় ‘শস’ পাতার মধ্যে দিয়ে

এই বিভাগের আরও

খবরে দুনিয়া

‘গান গাইবি না, খাবারও পাবি না’// ফ্রান্সের মেনিল আমেলো’র ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে অভিবাসীদের এজাহার

মার্কিন মুলুকে নির্বাচন : বার্নি স্যান্ডার্সের প্রচারের একজন সমর্থকের সঙ্গে কিছু আলাপ, কয়েক মাস আগে

এই বিভাগের আরও

পথের খবর

সকালের ডাউন রানাঘাট লোকালে ‘জয় শ্রীরাম’ / ‘ভারতমাতা কী জয়’ গর্জন আর শোনা যাচ্ছে না

জাতীয় পতাকা নামিয়ে দিয়েছে লালকেল্লা থেকে, আপনি দেখেছেন?

এই বিভাগের আরও

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • Soumitra Seth on ময়দা কালীবাড়ি, বহরু
  • Suman mondal on চীনের সাথে চুলের ব্যবসা। বেলডাঙার বিদেশ-ব্যাপারী
  • রাজেশ মাহাতে on আদিবাসী কুড়মি সমাজের তিন জেলায় একদিনের অনশন
  • Dipanjan Das on নতুনহাটের মেছুড়ে জয়নালের কীর্তি

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in