• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • ২০১২-র আগস্ট অব্দি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

মিডিয়ার শিরোনামে উঠে আসা কামদুনি গ্রামের কথা

June 18, 2013 admin Leave a Comment

শ্রীমান চক্রবর্তী, কামদুনি, বারাসাত থেকে ফিরে, ১৫ জুন#

উপগ্রহ ছবি উইকিম্যাপিয়া থেকে।
উপগ্রহ ছবি উইকিম্যাপিয়া থেকে।

বাসে মধ্যমগ্রাম চৌমাথা নেমেছি, তখন বঙ্কিম ফোনে জানাল, যেতে হবে বাসে কৃষ্ণমাটি। কৃষ্ণমাটি নেমে কোনো ভ্যান বা রিক্সা না পেয়ে হাঁটতে শুরু করলাম কামদুনির উদ্দেশ্যে, একে ওকে জিজ্ঞেস করে। পিচের রাস্তা, পথের আর শেষ হয় না, মাঝে মাঝে কারও কাছে জানতে চাইছি কামদুনি যাবার পথ। রাস্তার বাঁকে বাঁকে চোখে পড়েছে ভেড়িগুলি — বাণিজ্যিক মাছ চাষের জন্য বানানো বিস্তৃত অগভীর জলাভূমি — আর তার মাঝে বা পাশে মাচা। বর্ষার দুপুরে উত্তর চব্বিশ পরগনার এই গভীর গ্রাম দিয়ে দীর্ঘ একা হাঁটার অভিজ্ঞতা আমার আগে কোনোদিন হয়নি। তাই অচেনা গন্তব্য পৌঁছনোর তাড়া দিচ্ছে মনে, আর আমিও পা বাড়িয়ে চলেছি।
হঠাৎ দূর থেকে কয়েকজন চেনা মুখ, কোথাও কোনো মানবতা বিরোধী ঘটনা ঘটলে তার প্রতিবাদে পা মেলাই আমরা, আমাদের বন্ধুস্থানীয়। কাছে আসতে ওদের একজনকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম, বঙ্কিম অনেকটা এগিয়ে আছে। আমার হাঁটার প্রায় আধ ঘণ্টা হলেও আমি এমন কিছু দেখছি না, যা আমাকে কামদুনির সেই অভিশপ্ত দুপুরকে মনে করায়। বৃষ্টিভেজা ভরদুপুরে কলেজফেরতা একটি মেয়েকে পাঁচিল ঘেরা একটা জায়গায় ধর্ষণ করে, তারপর খুন করে ভেড়ির ধারে ফেলে রেখে গেছে কারা — অভিযুক্তরা সবাই ওই এলাকারই, অন্যান্য পাড়ার।

কিছুক্ষণ পর দূর থেকে কিছু মানুষের মাথার জটলা দেখতে পেলাম। মনে মনে একটা আতঙ্ক হচ্ছে, কেউ জিজ্ঞেস করলে কী বলব? কেন যাচ্ছি কামদুনি, তাও তো নিজের কাছে স্পষ্ট নয়। কিছুদূর এগোতে দেখি একটা পুলিশ ভ্যান গা ঘেঁষে বেরিয়ে গেল, তাতে ভর্তি পুলিশ। যত এগোচ্ছি তত চারপাশে তাকাতে দ্বিধা হচ্ছে। মনে মনে ভাবছি, অচেনা গ্রামে কেউ ঢুকলেই গ্রামের লোকেরা চিনতে পারে; কারণ ওরা সকলে সকলকে চেনে। এখানকার মানুষ সেদিনের ঘটনার পর যে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছে, একাধিক পুলিশ ভ্যান জ্বালিয়ে দিয়েছে, নেতাদের গাড়ি ভাঙচুর করেছে, সেখান থেকে নেতা-মন্ত্রীদের পালাতে হয়েছে — সেটাই ভাবছিলাম মনে মনে। ওই রকম প্রতিবাদটা না হলে কি মিডিয়ার শিরোনামে উঠে আসত একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনাগুলো? কথাগুলো ভাবছি, হঠাৎ দেখি একটা খালের ব্রিজের ওপর বঙ্কিম বসে আছে। একজন অল্প বয়সি যুবক ও বৃদ্ধের পাশে বসে কথা বলছে।
আমিও ওকে দেখে দাঁড়িয়ে ওদের কথা শুনতে লাগলাম, আর খাল দেখতে লাগলাম মন দিয়ে। কেন খালের জলটা এত কালো? এখানেও কি শহরের নর্দমার নোংরা জল আসছে? পাশেই দেখছি ভেড়ি রয়েছে অথচ খালের জল কালো। বৃদ্ধ মানুষটিকে জিজ্ঞেস করলাম, এই খালটার জল কালো কেন, এতে কারা নোংরা ফেলে? উনি বললেন, এটাতে কারখানার জল পড়ে দূষিত হচ্ছে, তাছাড়া নর্দমার জল আছে। একথা সেকথা বলতে বলতে আমি বৃদ্ধের পাশে বসলাম। আলাপ হল পাশে বসা যুবক সুব্রত ঘোষের সঙ্গে, পুলিশে চাকরি করেন গত প্রায় চার বছর। ওরা তিন ভাইয়ের দুজন পুলিশে আর একজন বিএসএফ-এ।  আমি কথা বলছি, বঙ্কিম উঠে শোকসন্তপ্ত বাড়ির দিকে যাওয়ার কথা বলল। না, বলে আমি বললাম, আমার ওখানে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই। কারণ কোনো প্রশ্ন-উত্তর পর্বের সাক্ষী আমি হতে চাই না।
বঙ্কিম এগিয়ে গেলে আমি বসে বসে সত্তর উর্ধ বৃদ্ধ বিশ্বনাথ ঘোষের সঙ্গে কথায় জড়িয়ে পড়লাম। এখানকার চাষের কথা, পুকুরের মাছের কথা, নারকেল গাছের কথা। আর এখানকার ভেড়ির কথা.
কথায় কথায় উনি জানালেন এখানে ওনাদের দুই পুরুষের বাস। ওনার বাবা এসেছিলেন প্রায় একশো বছর আগে, তখন এসব ফাঁকা জায়গা। ওনারা পাঁচজন এসেছিলেন এখানে। এসেছিলেন বাগদিদের একজনও। আজ সেখান থেকে ঘোষপাড়া, বাগদিপাড়া ও পশ্চিমে মুসলমানপাড়া। কুড়ি পঁচিশ বছর আগে ওনারা চাষই করতেন, আর খাল ও পুকুরের মাছ ধরতেন। তখন এখানে বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওরা যেত। খালের জলের সঙ্গে নোনা জল মিশে বহু রকমের মাছ ছিল, যা আজ আর পাওয়া যায় না। বলতে বলতে উনি নিজেই বেলে, ট্যাংরা, কই, শোল, মাগুর, বেলে, মৌরলা সহ বেশ কয়েক ধরনের মাছের নাম বললেন, যা আমি মনে রাখতে পারলাম না। আগে সেইসব মাছের স্বাদ ছিল অন্যরকম। এখন আর ওনার মাছ খেতে ভাল লাগে না। কারণ মাছের কোনো স্বাদ নেই। ওষুধ দিয়ে মাছের দফারফা হয়ে গেছে। সব ভেড়ি হয়ে যাওয়ার চাষ অনেকটা কমে গেছে এখানে। কেউ কেউ এখানে বাড়িতে ছোটোখাটো সবজি চাষ করে, কেউ কেউ আবার তা বাজারে বিক্রিও করে। আমি দূর অবধি তাকিয়ে দেখলাম, বড়ো দু-একটাই মাত্র নারকেল গাছ চোখে পড়ল। এখানে নারকেল গাছ এত কম কেন, বলতে উনি বললেন, আগে অনেক বড়ো বড়ো নারকেল গাছ ছিল, ওই ওরকম, বলে দূরের একটা বড়ো নারকেল গাছ দেখালেন। প্রায় বেশিরভাগই ছিল ৯০ ফুট বা একশো ফুট। এখন আর গাছ বড়ো হতে পারে না। সবাই কাঠের জন্য বিক্রি করে দেয়। সকলেরই বাড়িতে একটা দুটো করে গাছ আছে। উনি আট-নয় বছর আগেও গাছে উঠে ডাব পেরেছেন। আগে এখানে গাছে বড়ো বড়ো ডাব হত। ওনার বাবা একশো ফুট উঁচু গাছের থেকে এক কাঁদি ডাব কেটে হাতে করে নামিয়ে আনতে পারতেন। এখনকার ছেলেদের অনেকেই তা আর পারে না। বললেন, আমার ছেলেদের মধ্যে একজন মাত্র গাছে উঠতে পারে।
কথায় কথায় উনি জানালেন এখন সময় পাল্টে গেছে। এই ভেড়ি হয়ে সব গণ্ডগোল বেড়েছে। আমি বললাম, আপনাদের তো সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। উনি আস্তে আস্তে গা নামিয়ে জানালেন, এখানে পঞ্চায়েতে তৃণমূল দাঁড়িয়েছে, ওদের বিরুদ্ধে কোনো প্রার্থী দাঁড়ায়নি। মারের ভয়ে। পাশের গ্রামে একজন দাঁড়িয়েছিল, তারা এখন বাড়ি ছাড়া। সিপিএম থেকে বলেছিল সহযোগিতা করবে, কিন্তু করেনি। এখানে মার খাওয়ার ভয়ে কেউ দাঁড়াতে চায়নি। এখন আর ভোট দেওয়া যাবে না। পরে বিধানসভায় যদি সিপিএম বা কংগ্রেস জেতে, তখন পরের বার হয়তো ভোট দেওয়া যাবে। এখন আর কিছু বলা কওয়া যাবে না। বলে উনি বললেন, পাটিতে আজ যারা আছে তাদের হাতে তরোয়াল বন্দুক আছে, আমাদের ঘরে কিছু নেই। আগে লাঠি ছিল, এখন আর লাঠি দিয়ে পারা যাবে না। আমি কথা বলতে বলতে বঙ্কিমকে দেখলাম কালো মুখ করে আসছে। এসে আমাকে বলল, চল শ্রীমান। আমি কথা বলতে থাকায় ওকে এগিয়ে যেতে বললাম। বিশ্বনাথ ঘোষের সাথে কথা বলতে বলতে আমি লক্ষ্য করছিলাম, দুজন তিনজন সবসময় আমাদের কথা শুনছে আর গোগ্রাসে গিলছে আমরা কী আলোচনা করছি।

কৃষি ও গ্রাম কামদুনি, ধর্ষণ, বারাসত, মাছের ভেরি, যৌন-হিংসা

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

সম্পাদকীয়

নীমা তেনজিনদের স্বপ্ন কি সার্থক হবে ?

একটি রাজনৈতিক সুইসাইড নোট

এই বিভাগের আরও

দেশের খবর

নিজেদের চাষের খবর দিলেন, দিল্লির আন্দোলনের খবর নিলেন সরবেড়িয়ার চাষিরা

গ্রামে বাড়ছে অভাবী বিক্রি। কৃষক মান্ডির হ্যাপার চাইতে চাষির ভরসা কাছের আড়ৎ।

এই বিভাগের আরও

সংস্কৃতির হাল

মরজীবনের গান গাইতে মিলনের অপেক্ষায় থাকে আজাহার ফকিরের অমর মেলা

ঘরে রাখা শস্যের বীজ ভালো আছে কিনা দেখে নেওয়া হয় ‘শস’ পাতার মধ্যে দিয়ে

এই বিভাগের আরও

খবরে দুনিয়া

‘গান গাইবি না, খাবারও পাবি না’// ফ্রান্সের মেনিল আমেলো’র ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে অভিবাসীদের এজাহার

মার্কিন মুলুকে নির্বাচন : বার্নি স্যান্ডার্সের প্রচারের একজন সমর্থকের সঙ্গে কিছু আলাপ, কয়েক মাস আগে

এই বিভাগের আরও

পথের খবর

সকালের ডাউন রানাঘাট লোকালে ‘জয় শ্রীরাম’ / ‘ভারতমাতা কী জয়’ গর্জন আর শোনা যাচ্ছে না

জাতীয় পতাকা নামিয়ে দিয়েছে লালকেল্লা থেকে, আপনি দেখেছেন?

এই বিভাগের আরও

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • Soumitra Seth on ময়দা কালীবাড়ি, বহরু
  • Suman mondal on চীনের সাথে চুলের ব্যবসা। বেলডাঙার বিদেশ-ব্যাপারী
  • রাজেশ মাহাতে on আদিবাসী কুড়মি সমাজের তিন জেলায় একদিনের অনশন
  • Dipanjan Das on নতুনহাটের মেছুড়ে জয়নালের কীর্তি

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in