বঙ্কিম ও অন্যান্য#
থাকেন নদীয়ায়, শাড়ী কাপড় ফেরি করছিলেন উত্তর চব্বিশ পরগণার গ্রাম-গাঁয়ের বাড়ি-বাড়ি। কথায় কথায় বললেন, আমি ফেরি করে বেড়াই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে হয়, কী বলঅব বলুন? গলার স্বর একটু নামিয়ে বললেন, ” দেখুন যা হচ্ছে সব গায়ের জোরেই হচ্ছে” –।
আরেকজন — ছেলেটার বয়স বড় জোর তিরিশ। নদীয়া জেলায় বাড়ী। লাগোয়া অশোকনগর এলাকায় বাড়ি-বাড়ি সাইকেলে করে মাছ ফেরি করে বেড়ান সকালের দিকটায়। আর বিকেলে নিজের ক্ষেতে চাশগের দেখভাল করেন, এখন তার জমিতে বোরো ধান আছে। ভোট রাজনীতিতে তেমন থাকেন না তবুও বললেন — তা, গ্রামের দিকে বাম্পার কাজ হয়েছে যা কোনদিন হয়নি। শহরে আপনাদের এখানে যেমন সিমেন্টের রাস্তা আছে গ্রামে তেমন রাস্তা ঢুকে গিয়েছে। গ্রামে তৃণবমূলই পাবে। তবে বিজেপিও একটা ভোট পাবে।
মেঘনাদ, উত্তর চব্বিশ পরগণার হাবরা এলাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। বয়স তিরিশের কাছাকাছি, বাড়ি তাঁর পুরুলিয়া জেলায়। এখানে শ্বশুর বাড়ি থেকে কাজ করেন, ছোট্ট দুটি কন্যা আছে। সেকি ভোট দিতে যাবে জিজ্ঞেস করায় বলল — এ ভোটটায় আমাদের অতো গরজ নেই, আমরা পঞ্চায়েত ভোটটাই দেই, কারণ যাঁকে ভোট দেই তাঁকে কাছে পাই, যেতে আসতে তাঁর সাথে দেখা হয়, কথা হয়, আবার আমরা পঞ্চায়েত থেকেই মোটামুটি সুযোগ সুবিধাও পাই।
গুমা খোশদেলপুর থেকে খাসি-পাঁঠা-ছাগল সাইকেলভ্যানে নিয়ে ভোর রাতে কোলকাতা কেষ্টপুর পৌঁছে দেন। আবার আইসক্রিম বিক্রি করে বেড়ান, মাঝ বয়সি শেখ জুম্মান। বাড়িতে পঁচাশি বছরের বৃদ্ধা মাকে নিয়ে তাঁর সংসার। বলছিলেন জীবনের সুখ-দুঃখের কথা — তিন্মাসের গর্ভবতী স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে হিন্দু ছেলের সঙ্গে পালিয়ে গেছে, কিন্তু ভোটের কথা উঠতেই বললেন — আমি ভাই ভোটের ধার ধারিনে, আমি ভাই রাজনীতিরও ধার ধারিনে ……।
Leave a Reply