• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

বীরভূম আদিবাসী গাঁওতা সংবাদ

October 30, 2012 admin Leave a Comment

কৃশানু মিত্র, বীরভূম, ২৯ অক্টোবর, ছবি প্রতিবেদকের #

(বীরভূমের পাথর খাদান-এর দূষণ, স্থানীয় আদিবাসী এবং খাদান ও ক্রাশার মালিকদের বিরোধ — এসব নিয়ে মুহাম্মদবাজারের পাঁচামি উত্তাল হয়েছিল ২০১০ সালে। একের পর এক খাদান বন্ধ হয়ে পড়েছিল আদিবাসী আন্দোলনের জেরে। এ বিষয়ে দুটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয় ২০১০ সালের মে মাসে সংবাদমন্থনের পাতায়। উৎসাহী পাঠকের জন্য, এই প্রতিবেদনের পূর্বপাঠ হতে পারে সেগুলি, তার লিঙ্ক দুটি এখানে এবং এখানে — সম্পাদক)

যা দেখলাম
১৫ অক্টোবর মল্লারপুর স্টেশন ছেড়ে চলার শুরু, উদ্দেশ্য মাসারা পঞ্চায়েতে অবস্থিত জামকান্দর শাখার অনুষ্ঠান বা জমায়েত যেখানে বীরভূম আদিবাসী গাঁওতা বিরাট জনসভার আয়োজন করেছে। পূর্ব অভিজ্ঞতায় জানি, এ এক নরককুণ্ড। ট্রাক চলার পথ অন্য গাড়ির অগম্য। স্টেশন ছেড়ে গাড়ি কিছু দূর এগোতেই দেখা গেল জল সিঞ্চনের গাড়ি যা আগে দেখিনি। শুনলাম ট্রাক পিছু (চেকপোস্ট করে) জেলা পরিষদ ১০০ টাকা সংগ্রহ করছে তাই জলগাড়ির এই পিচকারির ব্যবস্থা। রাস্তা উন্নয়নে পয়সা সম্ভবত খরচা হয় না, তাই ভাঙাচোরা রাস্তা ছেড়ে সমান্তরাল জঙ্গলের লাল মাটির ওপর দিয়ে গাছের ফাঁক গলে গলে ছোটো গাড়ি চলে। সেই পথই আমাদের সাথী। মলুটিকে ডাইনে ফেলে আমরা এগিয়ে গেলাম। পিচকিরি গাড়ি জনপদের বাইরে আর দেখা গেল না। অধিবাসীরা বললেন, টাকা তুলছে তো, তাই নাম কা ওয়াস্তে এই ব্যবস্থা।


আজ সারা মহল্লায় বন্ধ বীরভূম আদিবাসী গাঁওতার ডাকে। মাসার পঞ্চায়েতে জমায়েত হবে মানুষ, বিভিন্ন দাবিতে। বোনাসের দাবিতে গুলুঙ্গায় রাস্তা অবরোধ চলেছে ১২ অক্টোবর থেকে চারদিন। ট্রাক ড্রাইভারদের সংগঠন-ও একই উদ্দেশ্যে মিটিং করছে আজ, জানালেন প্রসেনজিৎ পাউরিয়া। আমি দাবিগুলির সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে চাইলে উনি জানালেন, ক্রাশার মালিকরা দেওয়া প্রতিশ্রুতি মানছেন না। ক্রাশিং এর সময় বাতাসে যে পাথর ডাস্ট ওড়ে তা বাতাসে সাঙ্ঘাতিক দূষণ সৃষ্টি করে। শাওয়ার লাগালে জলের ধারায় এই ডাস্ট কাদায় পরিণত হয়। দূষণের অব্যাহতি হয়, কিন্তু মাত্র তিন শতাংশ মালিক এই ব্যবস্থা করেছে। আমরা কাছের এক খাদানে দূষণ নিয়ন্ত্রক দেখলাম, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। কারণ ক্রাশিং এর প্রতিটি স্তরে শাওয়ারের ব্যবহার অবশ্যম্ভাবী হওয়া উচিত। সরকারি ভাবে বৈধ খাদান/ক্রাশার-এ সংগঠনের সমর্থন আছে। আগ্রাসী অবৈধ খাদান সংস্কৃতি এলাকার জীবিকা ও জনস্বাস্থ্যে থাবা বসিয়েছে। তাও প্রিস্ট মুর্মুকে দেখা গেল জমায়েতে। সত্তর ঊর্ধ্ব প্রিস্ট পেশায় চাষি, সামান্য দু-এক বিঘা জমি আছে, কোনওরকমে জমি আঁকড়ে বেঁচে থাকা। যে কোনওদিন জমি হাঙরদের দখলে চলে যেতে পারে। ব্লাস্টিং এর সমস্যা আরও ভয়ানক গতবছর ১৫ নভেম্বর তারিখে মাইকেল পাউরিয়া প্রসেনজিতের ভাই ও স্বপন সোরেন ব্লাস্টিং কম্পনে ঘর ভেঙে চাপা পড়ে মারা যান। তাই গ্রামে ব্লাস্টিং করলে প্রতিটি ঘর শক্তপোক্ত করে বেঁধে দেওয়াও এদের দাবির অন্তর্ভুক্ত। পঞ্চানন মুর্মু জানাল, মল্লারপুর থেকে জামকান্দর পর্যন্ত প্রায় ২০০টি খাদান/ক্রাশার আছে এখানে মালিকদের অধিকাংশই বাইরে থেকে আসা। দশ থেকে পনেরো শতাংশ মালিক এখানকার। বড়ো চাষি বা লরির ড্রাইভারি এদের পেশা ছিল। মোজাম্মেল শেখ এমনই এক মানুষ যারা বাবা জমি বিক্রি করে ক্যানেলের ধারে জমি কিনে চলে গিয়েছিলেন চাষাবাদ করবেন বলে কিন্তু পরে দেখা গেল, এই জমির নিচে পাথর আছে। তখন এখানে আবার জমি কিনে ক্রাশার তৈরি করলেন। প্রসেনজিৎ পাউরিয়ার কথায় বলা যায়, জমির পর জমি চলে যাচ্ছে, অথচ গ্রামে মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটছে না। পনেরো বিশ বছর আগে মানুষের অন্তত দূষণজনিত রোগ ছিল না। পূজার থান-ও বাদ যাচ্ছে না, সাঁওতালদের পবিত্র পূজার জাহের থানও আগ্রাসনের কবলে। সরকার পাল্টেও কোনও লাভ হয়নি। আমলাতন্ত্রের রূপ একই রয়ে গেছে।

এখন দুপুর দেড়টা। স্টেজ প্রস্তুত, হঠাৎ-ই বাবুলাল মুর্মু, গাঁওতা সভ্যকে, দেখা গেল ঝুমুর দলকে প্রস্তুত হতে বলছেন। বোঝা গেল, নেতারা আসছেন, তাদের বরণ করতে হবে। সাঁওতালি প্রথা মেনে নাচগান বন্দনায় নেতারা স্টেজে আসন গ্রহণ করলেন, রবিন সোরেন, সুনীল সোরেন, আরও অনেকে। বয়োজ্যেষ্ট প্রিস্ট মুর্মু বয়সের কারণে স্থান পেলেন স্টেজে। রথিন সোরেনের গানে জমে উঠল জনসভা। বিভিন্ন বক্তব্যের মিঠেকড়া মিশেলে চার্জড হল জনগণ। আদিবাসী গাঁওতার আন্দোলনের ইতিহাস বিবৃত হল, কিভাবে চরকা দিয়ে অবৈধ খাদানের বিস্তারে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে গাঁওতা। কিভাবে চল্লিশ হাজার মানুষ সরকারি অফিস ঘেরাও করেছে, তার কথা।

জনসভা

কিন্তু নেতৃত্বের অনেকেই আশু সমস্যা হিসেবে উৎনৌ সংগঠনের অপপ্রচারকে দেখাতে চাইলেন। উৎনৌ নেতৃত্ব কীভাবে অতীতের লড়াই ভুলে গিয়ে বৃহৎ পুঁজির (পড়ুন নেউটিয়া নামক) স্বার্থে গাঁওতা আন্দোলনে চরকা দিতে চাইছেন তার কথা উঠে এল। কাদরা কিস্কু বললেন, রবিন সোরেনকে ধরতে চেয়ে ওরা গাছে উঠতে গিয়ে হড়কে পড়ে গেছে। ওদের মিটিং-এ কেন লোক হয় না, কারণ জনমত ওদের সঙ্গে নেই। আমাদের মিটিং-এ আমজনতা এসেছে হেঁটে, সাইকেলে চড়ে। এই জনজোয়ার গণভিত্তি ছাড়া সম্ভব নয়। এ শহরের কোনও রাজনৈতিক মিটিং নয় যে লরি বাসের পেছনে খরচা করে লোক আনা হয়েছে। শালবন গমগম করে উঠছে মুখরিত জনজোয়ারে। এর আগে বীরভূম খাদান অঞ্চলে কারও রেশন কার্ড ছিল না। গাঁওতার আন্দোলনেই তা হয়েছে। আদিবাসী সমাজে আগে সমাজ পরে রাজনীতি। এখানে কোনও আপস নেই। বাবুলাল মুর্মু বললেন, রবীন তো উৎনৌ-র কর্মী ছিলেন। ওদের দুর্নীতির জন্যই সংগঠন ছেড়েছেন। উনিই প্রকৃত জনগণের সঙ্গে থাকা জননেতা। উৎনৌ-র শহুরে বাবুরা সাঁওতাল সমাজকে ভাঙার খেলায় মেতেছেন। ওরা ভারত জাকাত মাঝি মারোয়া, যার কোনও জনভিত্তি নেই, তার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে আদিবাসী সমাজকে দ্বিখণ্ডিত করে বৃহৎ পুঁজির সুবিধা করতে চাইছেন।
আমার ভাবনা
আদিবাসী জনতার মঞ্চে মিনারেল ওয়াটার দেখে খটকা লাগে কারণ বৃহৎ পুঁজির বিরুদ্ধে লড়াই-এ বৃহৎ পুঁজির আগ্রাসন রোধে মিনারেল ওয়াটার সাথী না হওয়া আশু কর্তব্য। নেতৃত্বকে মাটির কাছাকাছি থাকতে হবে, এবং রাজনৈতিক বক্তব্যকে স্পষ্ট করতে হবে। তাঁরা কি বৈধ ছোটো পুঁজির পক্ষে লড়তে চান মানুষকে সাথে নিয়ে মানুষের জন্য? আন্দোলনের সাথে সাথে তাদের গঠনমূলক ভাবনা কি কি আছে? কাষ্ঠপোড়ায় ৮/১০ কিমি দূরে ডাক্তার পাওয়া যায়, মল্লারপুরে বারো ক্লাস পড়তে যেতে হয়, প্রাইমারি স্কুল সংখ্যা কম, কি কি বিকল্প ভাবনা সংগঠনের আছে? সংগঠন যদি ঠিক পথে থাকে গঠনমূলক পথ চলাই তার হয়ে জবাব দেবে। মঞ্চে হবে শুধু বিকাশের কথা, সংঘর্ষের কথা, যৌথ আলাপচারিতা।

আন্দোলন আদিবাসী, ক্রাশার, গাঁওতা, পাথর খাদান, মল্লারপুর

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in