সাদ্দাম হোসেন, মশালডাঙ্গা(সাবেক ছিটমহল), কোচবিহার, ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০১৫#
প্রতিবছর সিঙ্গিমারি নদী পাড়ের উর্ব্বর ধানের জমিতে কৃষকেরা ধানের চারাগাছ রোপন করলেও পাকা ধান ঘরে তুলতে পারেন না। বর্ষা এলেই সর্বগ্রাসী সিঙ্গিমারি থাবা বসায় বত্রিগাছে। বছরের পর বছর নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে চাষের জমি। সবকিছু হারিয়ে সর্বহারা হচ্ছেন সাবেক ছিটমহল বত্রিগাছের মানুষ। দেশভাগের পর জন্ম নেওয়া ছিটমহল বত্রিগাছের কথা একবারেও ভাবেনিনি ভারত কিংবা বাংলাদেশ সরকারের কেউই। এবারের বর্ষায় আজিজুলের মাথা গোঁজার ঠিকানা তার ঘরবাড়ি, নদীর ভাঙ্গনের ফলে চলে গেছে নদীতে। এখন আজিজুল কোথায় থাকবে বা কি খাবে তা নিয়ে সরকারের বিন্দুমাত্র মাথাব্যাথা নেই। স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ আলি, কচু মিঞা, মোজাম্মেল শেখ, জাহাঙ্গির মিঞারাও ঘরবাড়ি জমিজমা হারিয়ে পথে বসেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ আলি প্রতিবছর নদী ভাঙ্গন দেখেন খুব কাছ থেকে। তার জমি কি হয়েছে? প্রশ্ন করলেই কেঁদে ফেলেন, উত্তর আসে ‘নদীই সব খায়া ফ্যালাইসে’। বত্রিগাছের আর জন বাসিন্দা কাচু মিঞার কথায় ‘ সামনে ঈদ আছে, দূর্গাপূজা আছে, উৎসবের দিনগুলো আনন্দে কাটবে না দুঃশ্চিন্তায় কাটবে সেটাই এখন চিন্তা’।
গত ১লা আগষ্ট ভারতের মুল ভূখন্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ৫৭৭.৩৭ একর আয়তন বিশিষ্ট বাংলাদেশের সাবেক ছিটমহল বত্রিগাছ। বিগত বহুবছর ধরে মন্ত্রী, বিধায়ক, কিংবা প্রশাসনের আধিকারিককেই দেখা যায়নি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে, এমনটাই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মহম্মদ আলি, কাছু মিঞা, মোজাম্মেলরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের ৬৮ বছরের স্বপ্ন সিঙ্গিমারী নদীতে বড়সর বাঁধ নির্মান হবে, বন্ধ হবে নদীর ভাঙ্গন।
Leave a Reply