• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • ২০১২-র আগস্ট অব্দি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

দশ ডিগ্রির নিচে

January 18, 2013 admin Leave a Comment

অমিতাভ সেন, ভবানীপুর, ৯ জানুয়ারি#

বাড়ির গেটের উল্টোদিকে রঙের দোকান। ট্রানজিস্টরে মান্না হেমন্তের গান। দীপ ছিল, শিখা ছিল — কোথাও আমার মনের খবর পেলাম না। দোকানদারের ভাগনে ফুলহাতা সোয়েটারের ওপর শাল মুড়ি দিয়ে গানের সাথে গলা মেলাচ্ছে। বেসুরো গলা আজ চমৎকার খেলছে — এমন কাঁপুনি যে কষ্ট করে গলা কাঁপাতে হচ্ছে না। বেলা তিনটেয় রেডিওর খবর — শৈত্যপ্রবাহ আরও তিনদিন চলবে।
ওপাশের ঘরে ঘটঘট ঠঙ ঠঙ হাতা ও হাঁড়ির সংঘাতে খিচুড়ি। এ ঘরেও তাই, কিন্তু গরম খিচুড়ি খেয়েও শীত কমছে না। হাত পা কালিয়ে আসছে। চান না করার জন্য? তাহলে যে চান করেছে তারও কেন এক অবস্থা? সবাই লেপ খুঁজছে। এক ফোঁটা রোদ নেই। সূর্যের মুখ দেখা যায়নি সারাদিন। দরজা খুলে নিরঞ্জন মিস্ত্রি যন্তরের ব্যাগ মেঝেতে নামিয়ে বলল, আমাদের ওখানে এর দ্বিগুণ ঠান্ডা দাদা। সকালে হেঁটে স্টেশনে আসতে দেখি, হাতের পাতা এমন জমে গেছে যে খোলা হাত মুঠো করতে পারছি না। নিরঞ্জন মিস্ত্রি আসেন ঘুটিয়ারি শরিফের কাছে বেদবেড়িয়া থেকে। আজ কাল মেলেনি ছুতোরের কাজ। একজন বৃদ্ধ খবর দিয়েছিলেন বেশ কয়েকদিন আগে। আজ নিরঞ্জন গিয়ে দেখেন যে সে বুড়ো ভদ্রলোকই মারা গিয়েছেন দুদিন আগে। আজ তাঁর মরদেহ শ্মশানে নিয়ে গেল। মেয়ে আমেরিকা থেকে ফেরার অপেক্ষায় সেই ভদ্রলোকের শব তিন দিন ঠান্ডাঘরে রাখা ছিল। নিরঞ্জন মিস্ত্রি খালি হাতে বাড়ি ফেরার ট্রেন ধরতে দ্রুত চলে গেলেন। এর মধ্যে এক সাইক্লিস্ট দাদা ফোন করেছিলেন। ঝাড়গ্রাম থেকে আমাদের এক বন্ধুর দিদি এসেছেন, তাঁর ভাজকে নিয়ে। আকুপাঙচার করে প্যারালিসিস সারাবেন। রামরিক হাসপাতালে তিনতলায় চার নম্বর বেডে ভর্তি হয়েছেন। নাম পুতুল দলুই। চাদর টাদর মুড়ি দিয়ে বের হলাম। রাস্তায় পাড়ার বন্ধুর সঙ্গে দেখা। সেও হনহন করে ওদিকেই চলেছে। হাসপাতালের উল্টোদিকে ফুটপাথে তার দোকান। জামাকাপড় বিক্রি করে সে। ফুটপাথের ওপর প্লাস্টিকে ঢেলে। বলল, কার কাছে টুপির স্টক আছে সেই খোঁজে চলেছে। ওর স্টক শেষ, গতকাল একদিনে আট ডজন টুপি বিক্রি করেছে। এত টুপি বিক্রি হয়ে যাবে বুঝতেই পারেনি।
হাসপাতালে পৌঁছে দেখি কেউ কোত্থাও নেই। ডাক্তার-নার্স-কর্মচারি। ঠান্ডায় কে যে কোথায় জমে গেছে? ছোটো হাসপাতাল। আমি গটগট করে তিনতলায় গিয়ে দেখি মহিলা ওয়ার্ডের একটা ঘর ধানকাটা মাঠের মতো ফাঁকা। বারোটা বেডের একটায় রোগিনী ননদকে শুইয়ে ভাতৃবধূ আরেকটায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করে জানলাম, ওই রোগিনী পুতুল দলুই। আমি তাঁকে আগে চিনতাম না। উনি খালি হাসছেন। কথা বলতে পারছেন না। শুনলাম, ডাক্তারবাবু ভালো — বলেছেন সব সেরে যাবে। ওঁরা ভরসা পেয়েছেন শুনে আমিও ভরসা পেলাম। কিন্তু হাসপাতালের রকমসকম দেখে মনটা খচখচ করছে। ওঁরা মানিয়ে নিচ্ছেন বেশ সহজেই। ভাইবউ লোহার বেডে চটের থলিতে মাথা দিয়ে শুয়ে আছেন — তাঁর কোলের মধ্যে ঢুকে একটা বেড়াল কাঁদছে। উনি বললেন, বেড়ালটার শীত করছে, তাই। কিছু দরকার হলে বলবেন, বলে ফিরে এলাম। কী কী দরকার মেটাতে পারব, তা কিন্তু জানি না।
হাসপাতালের নিচে এসে দেখি, কর্মচারীদের কাউকেই চিনতে পারছি না। টুপি মাফলার চাদরে কারও মুখ বোঝা যাচ্ছে না। তবে হাসপাতালের গেটে আগুন জ্বালিয়ে যারা হাত সেঁকছিল তাদের মধ্যে একজনকে চিনতে পারলাম। ওই হাসপাতালেই কাজ করে, তাকে বলে এলাম, বন্ধুর দিদিকে একটু দেখতে। সে বলল, ডিউটির যা চাপ যাচ্ছে দাদা, তিনদিন পুরো নির্জলা কেটেছে। বলেই সে হাঁটা লাগালো পাশের গলির দিকে। পাশের গলিতে বিলাতী মদের দোকানে তখন লাইন বাড়ছে। আর গলির মুখে বাড়ছে চপের দোকানের উনুন ঘিরে কুকুরের ভিড়। সবকটার লেজ দু-পায়ের মাঝে গুটিয়ে গেছে। বিশ্রি কুয়াশা এসে কলকাতাকে লন্ডন বানাচ্ছে।

চলতে চলতে মিস্ত্রি, রামরিক

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

সম্পাদকীয়

নীমা তেনজিনদের স্বপ্ন কি সার্থক হবে ?

একটি রাজনৈতিক সুইসাইড নোট

এই বিভাগের আরও

দেশের খবর

নিজেদের চাষের খবর দিলেন, দিল্লির আন্দোলনের খবর নিলেন সরবেড়িয়ার চাষিরা

গ্রামে বাড়ছে অভাবী বিক্রি। কৃষক মান্ডির হ্যাপার চাইতে চাষির ভরসা কাছের আড়ৎ।

এই বিভাগের আরও

সংস্কৃতির হাল

মরজীবনের গান গাইতে মিলনের অপেক্ষায় থাকে আজাহার ফকিরের অমর মেলা

ঘরে রাখা শস্যের বীজ ভালো আছে কিনা দেখে নেওয়া হয় ‘শস’ পাতার মধ্যে দিয়ে

এই বিভাগের আরও

খবরে দুনিয়া

‘গান গাইবি না, খাবারও পাবি না’// ফ্রান্সের মেনিল আমেলো’র ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে অভিবাসীদের এজাহার

মার্কিন মুলুকে নির্বাচন : বার্নি স্যান্ডার্সের প্রচারের একজন সমর্থকের সঙ্গে কিছু আলাপ, কয়েক মাস আগে

এই বিভাগের আরও

পথের খবর

সকালের ডাউন রানাঘাট লোকালে ‘জয় শ্রীরাম’ / ‘ভারতমাতা কী জয়’ গর্জন আর শোনা যাচ্ছে না

জাতীয় পতাকা নামিয়ে দিয়েছে লালকেল্লা থেকে, আপনি দেখেছেন?

এই বিভাগের আরও

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • Soumitra Seth on ময়দা কালীবাড়ি, বহরু
  • Suman mondal on চীনের সাথে চুলের ব্যবসা। বেলডাঙার বিদেশ-ব্যাপারী
  • রাজেশ মাহাতে on আদিবাসী কুড়মি সমাজের তিন জেলায় একদিনের অনশন
  • Dipanjan Das on নতুনহাটের মেছুড়ে জয়নালের কীর্তি

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in