• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • ২০১২-র আগস্ট অব্দি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

খাগড়াগড়-বাবুরবাগের ঘটনা পাড়া-প্রতিবেশীর চোখে

October 16, 2014 admin Leave a Comment

১৫ অক্টোবর, সেখ জাকির হোসেন, বাবুরবাগ, বর্ধমান#

শিমুলিয়ার মেয়েদের মাদ্রাসাতে 'জেহাদি ট্রেনিং' হতো, অভিযোগ নিরাপত্তাসংস্থার। তাই তার সামনে পুলিশ পোস্টিং। টু-সার্কেলস ডট নেট-এর ছবি, ১১ অক্টোবর।
শিমুলিয়ার মেয়েদের মাদ্রাসাতে ‘জেহাদি ট্রেনিং’ হতো, অভিযোগ নিরাপত্তাসংস্থার। তাই তার সামনে পুলিশ পোস্টিং। টু-সার্কেলস ডট নেট-এর ছবি, ১১ অক্টোবর।

বর্ধমান শহরের ১নং ওয়ার্ডে খাগড়াগড়ে আমার বাড়ি। বাবুরবাগে আমার মুদির দোকান আছে। যে বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটেছে, তার একটা-দুটো বাড়ি আগে থেকে পঞ্চায়েত এলাকা। দোতলা বাড়ি। ঠিক তখন বেলা বারোটা। একটা বিরাট শব্দ হয়। আশপাশের বাড়ির লোক ছুটে যায়। একজন মেয়ে নিচের দরজায় দাঁড়িয়ে আছে — কেউ ঢুকবে না ভিতরে। — ওপরে যে একটা শব্দ হল? ও বলল — ওপরে আমাদের একটা গ্যাসের সিলিন্ডার বার্স্ট করেছে। সেরকম কিছু হয়নি। ওপর থেকে একটা জলের পাইপ নিচ অবধি নামানো আছে। লোকে দেখছে যে সেই পাইপ থেকে রক্ত পড়ছে। — রক্ত কীসের? কাউকে বলেছে — বড়ো মাছ আনা হয়েছে। কাউকে বলেছে মুরগি, তার রক্ত। আমি তখন তো ওখানে ছিলাম না। এর মধ্যে পাড়ার উৎসাহী ছেলেরা পাইপ বেয়ে ওপরে উঠে দেখছে, একজনের লাশ ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে আছে, আরেকজন কাতরাচ্ছে। আর একজন মেয়ে সেইসব পরিষ্কার করছে। আর একজন নিচে রয়েছে।
এরা ভাড়াটে। ঠিক তিন মাস হল এই পাড়ায় এসেছে। ভাড়াবাড়ি, সেখানে বাড়িওয়ালা থাকত না। সে থাকত রাস্তার অপর পারে অন্য বাড়িতে। এরা দোতলায় থাকত। নিচে কয়েকটা দোকান আছে, কেউ খোলে, কেউ খোলে না। পাড়ার ছেলেরা ওদের কাউকে চিনত না। মেয়েরা দুজন সবসময় বোরখা পরে থাকত। আমরা জানতাম, যারা ভাড়া নিয়েছে মুসলমান, দাড়ি আছে, নামাজ-টামাজ পড়ে। হতেই পারে হাজিবাড়ি। যে ভাড়া দিয়েছে সেও হাজি। আমাদের এখানে বোরখা পরার চল নেই। কাছেই আমাদের থানা আর ফায়ার ব্রিগেড। ছেলেরা ছুটে ফায়ার ব্রিগেডে খবর দেয়। তারা সঙ্গে সঙ্গে আসে। তাদের ওপরে উঠতে দেয়নি। পুলিশ চলে আসে। পুলিশ যখন জোর করে মেয়েটাকে ধরে নিয়ে ওপরে যাচ্ছে, তখন দেখে একজন কাতরাচ্ছে, একজন শেষ, আরেকজন পাশে আছে। তারপর অ্যাম্বুলেন্স আসে। অ্যাম্বুলেন্সে যেতে যেতেই যে কাতরাচ্ছিল, সে মারা গেল। আরেকজন ‘হাকিম’ যার নাম, তাকে আর দুজন মহিলা আর দুটো বাচ্চাকে পুলিশ ধরে।
আমি যখন বেলা একটার সময় যাই, তখন পুলিশ মেয়েদুটোকে নিয়ে গেল। আমি দেখলাম, ওদের যেন কিছুই হয়নি, যেন মৃত ব্যক্তিরা ওদের কেউ নয়। আমরা ভাবছি, তাহলে এরা বোধহয় বউ নয়, বউ সেজে ছিল। তারজন্যই যারা মারা গেল তাদের জন্য দুঃখ নাই। তারপরই প্রচুর চ্যানেল আসতে শুরু করল।
বাবুরবাগে আমার দোকানের তিন-চারটে দোকান পরে একটা বাড়িতে মনে করা হচ্ছে এদেরই একটা গোষ্ঠী ভাড়া নিয়েছিল। ওটা কীভাবে বোঝা গেল? ২ তারিখ ঘটনাটা ঘটেছে। ৪ তারিখ বাবুরবাগের ওই বাড়িতে লাইট জ্বলছে, ফ্যান চলছে, ঘরে কেউ নাই। এই বাড়িটাতেও বাড়িওয়ালা থাকত না, পাশের পাড়ায় থাকত। কেয়ারটেকার একজন থাকত, বাড়িওয়ালার আত্মীয়। দোতলায় চারজন থাকত ভাড়া। মেয়ে দুজন বোরখা, আর ছেলে দুজন হেলমেট পরে বেরোত, কেউ দেখতে পেত না। তখন কেয়ারটেকার লোকটা বাড়িওয়ালাকে ফোন করে। বাড়িওয়ালা থানায় খবর দেয়। পুলিশ আসে। ঘর খুলে দেখে তারা, কিন্তু আমাদের পাবলিককে আসতে দেয়নি। পরদিন খবরের কাগজে আমরা জানতে পারি, ওই ঘরেও পিস্তল-রাইফেল পাওয়া গেছে, একটা ল্যাপটপ পাওয়া গেছে, কিছু জেহাদি বই পাওয়া গেছে। বাড়ির নিচে কিছু পোড়া কাগজ পাওয়া গেছে। সন্দেহ করা হয়, খাগড়াগড়ের ওদেরই একটা দল এখানে ছিল। পরে সরে যায়।
প্রথমদিন আমরা ভেবেছিলাম, ডাকাতদের একটা দল হয়তো বোমা রেখেছিল, সেটা বার্স্ট করেছে। কিন্তু পরে সব জানতে পারলাম। ওই বাড়ির কিছুটা দূরে একটা মাদ্রাসা আছে। মাদ্রাসার মোয়াজ্জেনকে এসে বলেছিল, আমাদের এখানে একটা ফাঁকা ঘর দেখে দিন। তিনি বলেন, হ্যাঁ, রেজ্জাক মোল্লার বাড়ি ফাঁকা আছে। ওঁর বক্তব্য অনুযায়ী, ওই দুজন মসজিদে এসেছিল জামাতে। ভাড়া দেখে দিতে বলাতে বাড়িওয়ালা দেখলেন, নামাজি মুসলমান, দাড়ি-টুপি আছে, কাপড়ের ব্যবসা আছে, বোরখার ব্যবসা আছে, ফ্যামিলি আছে, দুটো বাচ্চা আছে। এরা যে এতসব কাণ্ড করত, তিনি বলেন, আমি জানব কী করে?
খাগড়াগড়ে যে ঘরে এরা ভাড়া থাকত, নিচে একটা নির্বাচনী কার্যলয় হয়েছিল। তার সামনে একটা তৃণমূলের পতাকা লাগানো ছিল। মিডিয়া যথারীতি বলে, এটা তৃণমূলের অফিস। তৃণমূল এদের সঙ্গে জড়িত ছিল। আমার বিশ্বাস হয় না। নির্বাচনী কার্যালয়ের ভিতরেও তৃণমূলের কিছু পতাকা ছিল। বাবুরবাগেও তাই। তৃণমূলের নেতার বাড়ি একটু দূরে। মিডিয়া এইসব দেখে একটা যোগাযোগের কথা বলতে চাইছে। মিডিয়ার এইসব কথায় আমাদের স্থানীয় লোক একটু বিরক্ত। আমাদের সব ক-টা ওয়ার্ডেই তৃণমূল জিতেছে। সব জায়গাতেই তৃণমূলের পতাকা রয়েছে, পার্টি অফিস আছে। তা দিয়ে কি যোগাযোগ বোঝা যায়?
খাগড়াগড়ের বাড়িতে রান্নার কোনো সরঞ্জাম খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাবুরবাগের বাড়িতে রান্না হত। সেখান থেকে খাগড়াগড়ের বাড়ি দশ মিনিট হাঁটা পথ। মনে করা হচ্ছে, বাবুরবাগের বাড়ি থেকে খাবার যেত। কিংবা হয়তো ওরা বাইরে খেত।
এর মধ্যে বিজেপির রাহুল সিনহা গিয়ে বর্ধমান স্টেশনের কাছে উত্তেজনাপূর্ণ ভাষণ দিয়েছেন। সেখান থেকে আধঘণ্টা হেঁটে গেলে খাগড়াগড়ে পৌঁছানো যায়। তিনি বলেছেন, সমস্ত মাদ্রাসা এর সঙ্গে জড়িত আছে এবং মাদ্রাসা থেকেই সব হচ্ছে। এরা মুসলমান বলে সমস্ত মুসলমানই খারাপ এরকম একটা প্রচার করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে সব চলে আসছে; এই সরকার এদের সহযোগিতা করছে। আমি বাজার করতে যাচ্ছি, টোন-টিটকিরি হচ্ছে। আমাদের এখানে হিন্দু ৬০%, মুসলমান ৪০%। তির্যক মন্তব্য ছুঁড়ে দেওয়া হচ্ছে — এই বোমগুলো মুসলমানরা তৈরি করেছিল পুরো বর্ধমান শহরটাকে উড়িয়ে দেওয়ার জন্য, আমাদের পুজোটাকে মাটি করে দেওয়ার জন্য। একজন বলল — আমাদেরও তৈরি থাকতে হবে ওদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য। যারা এসব বলছে, ব্যবসাদার দোকানদার। যেখান থেকে আলু কিনি, তিনি হিন্দু, বললেন, দু-চারজন মুসলমানদের জন্য সব মুসলমানকে দোষ দেওয়া হবে?
তবে একথা ঠিক, ওই জঙ্গিরা বর্ধমান শহরটাকে বেছেছিল কারণ এটা শান্তির শহর। এই শহরে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ভালো মিল আছে। দাঙ্গা ইত্যাদি নাই। আমাদের বাবুরবাগে মুসলমান কাউন্সিলার। হিন্দুরাও তাকে ভোট দিয়েছে। দিল কেন? যদি পাড়ার লোকে জেনে বুঝে ওদের পাড়ায় জায়গা দিয়ে থাকে, তাহলে তারাই আবার থানা-পুলিশে খবর দেবে কেন? আসলে সাংবাদিকেরা খুব বাড়াবাড়ি করছে। আমাদের বাবুরবাগে তো কিছুই ঘটেনি। কিন্তু যত কাগজ আর চ্যানেল ঝাঁপিয়ে পড়েছে।

মানবাধিকার খাগড়াগড়, জিহাদ, বাবুরবাগ, মাদ্রাসা, মুসলমান, শিমূলিয়া, সন্ত্রাসবাদ

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

সম্পাদকীয়

নীমা তেনজিনদের স্বপ্ন কি সার্থক হবে ?

একটি রাজনৈতিক সুইসাইড নোট

এই বিভাগের আরও

দেশের খবর

নিজেদের চাষের খবর দিলেন, দিল্লির আন্দোলনের খবর নিলেন সরবেড়িয়ার চাষিরা

গ্রামে বাড়ছে অভাবী বিক্রি। কৃষক মান্ডির হ্যাপার চাইতে চাষির ভরসা কাছের আড়ৎ।

এই বিভাগের আরও

সংস্কৃতির হাল

মরজীবনের গান গাইতে মিলনের অপেক্ষায় থাকে আজাহার ফকিরের অমর মেলা

ঘরে রাখা শস্যের বীজ ভালো আছে কিনা দেখে নেওয়া হয় ‘শস’ পাতার মধ্যে দিয়ে

এই বিভাগের আরও

খবরে দুনিয়া

‘গান গাইবি না, খাবারও পাবি না’// ফ্রান্সের মেনিল আমেলো’র ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে অভিবাসীদের এজাহার

মার্কিন মুলুকে নির্বাচন : বার্নি স্যান্ডার্সের প্রচারের একজন সমর্থকের সঙ্গে কিছু আলাপ, কয়েক মাস আগে

এই বিভাগের আরও

পথের খবর

সকালের ডাউন রানাঘাট লোকালে ‘জয় শ্রীরাম’ / ‘ভারতমাতা কী জয়’ গর্জন আর শোনা যাচ্ছে না

জাতীয় পতাকা নামিয়ে দিয়েছে লালকেল্লা থেকে, আপনি দেখেছেন?

এই বিভাগের আরও

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • Soumitra Seth on ময়দা কালীবাড়ি, বহরু
  • Suman mondal on চীনের সাথে চুলের ব্যবসা। বেলডাঙার বিদেশ-ব্যাপারী
  • রাজেশ মাহাতে on আদিবাসী কুড়মি সমাজের তিন জেলায় একদিনের অনশন
  • Dipanjan Das on নতুনহাটের মেছুড়ে জয়নালের কীর্তি

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in