• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • ২০১২-র আগস্ট অব্দি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

কোচবিহারের কারিশালের হুজুর সাহেবের মেলা

March 7, 2014 admin Leave a Comment

মণীষা গোস্বামী, কোচবিহার, ২৮ ফেব্রুয়ারি#

হুজুর সাহেবের মেলার ছবি তুলেছেন সোমনাথ চৌধুরি, ২৬  ফেব্রুয়ারি।
হুজুর সাহেবের মেলার ছবি তুলেছেন সোমনাথ চৌধুরি, ২৭ ফেব্রুয়ারি।

কোচবিহারের টাকাগাছ অঞ্চলের কারিশাল গ্রামে ২৬শে ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু করে দুদিন ব্যাপী হয়ে গেল হুজুর সাহেবের মেলা । গতবছরও সময়টা সঠিকভাবে না জানার জন্যে এই মেলায় গিয়েছিলাম, কিন্তু মেলাটা ঠিক কোন সময়ে হয় সেটা না জানার কারনে এবারো হয়তো যাওয়া হত না, কিন্তু সকালবেলায় রামজীবনদা যখন ফোন করে এই মেলার খবর দিল তখন ওর সাথেই যাওয়ার পরিকল্পনা করে ফেললাম। রামজীবনের বাড়ি থেকে মেলা পর্যন্ত হাঁটা পথে মিনিট কুড়ি মত লাগে।হাঁটতে হাটতে পৌঁছে গেলাম।

তোর্ষা নদীর বাঁধের উপর দিয়ে গিয়ে শেষে মেলায় ঢুকতে হয়। বাঁধের রাস্তার বাঁদিক জুড়ে প্রায় সম্পূর্ন রাস্তা জুড়ে শুয়ে আছে ভিখারিরা। তাদের ভয়াবহ শারিরীক বিকলাঙ্গতা দেখে শিউরে উঠতে হয়। বেশিরভাগেরই হাত–পা কাটা, শরীর ছোট, তার মধ্যে বেশ কয়েকজনের কাছে ব্যাটারী চালিত ছোট মাইক, এমনকি কয়েকজনকে রীতিমত USB system এ ভিক্ষার আবেদন রেকর্ড করে চালাতে দেখা গেল। তারই মধ্যে একজন লোককে দেখা গেল সব ভিখারীদের কাছে ঘোরাঘুরি করতে, তার তৎপরতা দেখে কোথাও যেন এই ভিখারী শিল্প নিয়ে গার্দিস সিনেমার অন্নু কাপুরের কথা মনে পরছিল। রাস্তার দুপাশে পূণ্যার্থীদের জন্যে জল, সরবত রাখা জায়গায় জায়গায় ,সেগুলো পেরিয়ে এরপর মেলায় ঢুকে গেলাম, দুপাশে দোকান পেরিয়ে হাজির হলাম হুজুর সাহেবের মাজার এ। যদিও হুজুর সাহেবের মাজার বা মেলা বলতে কোচবিহারের হলদিবাড়ির মেলাকেই (ইসালে সওয়াব)বোঝে লোকে।হলদিবাড়িতে এই মেলার প্রচলন করেন মহঃ এক্রামুল হক ১৯৪৪ সালে, ফাল্গুন মাসের ৫ ও ৬ তারিখে এই মেলা হয়। কোচবিহারে তাঁরই ভাইয়ের মাজারের পাশে মেলার আসর বসে। এখানে এখন হুজুর সাহেবের ছেলে পীর শাহ সুফী সোইয়দ মৌলানা খন্দকার জিয়ায়ুল হক মর্শিদাবাদী (রহঃ) এর মাজার শরীফ।

মাজার শরীফের কাছে গিয়ে দেখালাম দুজন পীর বাড়ান্দায় একটা উঁচু জলচৌকিতে বসে আছেন, লোকে ওনাদের কাছে গিয়ে ১০টাকা করে দিচ্ছেন আর ওনারা ভক্তদের মাথায় ফু দিয়ে দিচ্ছেন। জীবনের সব দুঃখ যন্ত্রনা সমস্যাও যদি এভাবে ফু দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া যেত। মানুষ এখনো কতটা কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও অন্ধবিশ্বাসী সেটা দেখতে দেখতে খারাপও লাগছিল। একটু জলপড়া, তেলপড়া, মাদুলি, বা নিতান্ত একটা ফু এর জন্যে কত দূর দূর থেকে মানুষ এসে ভীড় করেছে এখানে, হুজুর সাহেব তাদের কাছে ভগবানপ্রতিম। পাশের একটা ছোট জায়গা তখন ধুপের ধোঁয়া আর গন্ধে ভরে আছে। মানুষ এসে মানত করেন এই হুজুর সাহেবের মাজারে, আশা পূর্ণ হলে এসে ওখানে ধুপকাঠি, মোমবাতি জ্বালান ও নকুলদানা বাতাসা ছুঁড়ে দেন মাটিতে। পাশের মঞ্চে তখন পবিত্র কোরানের ব্যাখ্যা করে যাচ্ছিলেন ।

সে সব ছাড়িয়ে আবার মেলার দিকে ঢুকলাম। সব মেলার মত এখানেও সেই একই ধরনের খাবারের দোকান, মেয়েদের সাজগোজের দোকান, পোষাকের দোকান থেকে শুরু করে ম্যালামাইন, পোস্টার সবকিছুই সহজলভ্য, যদিও দামটা বেশ চড়া। স্থানীয় রাজমিস্ত্রী আজিজার রহমানের কাছে জানা গেল মাজারের পাশের যে বিরাট নির্মান হয়েছে সেটা তারই হাতে তৈরী, এর পাশে অনেকটা জায়গা নিয়ে একটা বিরাট মসজিদ তৈরীর কাজও শুরু হয়েছে। মেলায় সে একটা দোকান ও দিয়েছে, কিন্তু প্রচুর ভীড় হলেও বিক্রি খুবই কম, লাভ তো দূরের কথা খরচাই ওঠেনা।

সেখান থেকে এগিয়ে চললাম, নদির ধারে বালিতে দাঁড় করানো উঁটের পাল, পাশেই মাংসের দোকান, সেখানে বিক্রি হচ্ছে উঁটের মাংস।এসব দেখতে দেখতে এগিয়ে চললাম, ঢোল আর থালা বাজানর আওয়াজ শুনে দেখি শুরু হয়েছে ভানুমতীর খেল। একটা ৭–৮ বছরের বাচ্চা মেয়ে হাতে বাঁশ নিয়ে চলছে দুপাশে বাঁশের ফ্রেমে বাঁধা দড়ির উপর দিয়ে । প্রথমে খালি পায়ে তারপর, চটি পায়ে, তারপর একটা স্টীলের থালার পায়ের তলায় রেখে, আর শেষ পর্যন্ত একটা সাইকেলের চাকার রিং রেখে। যে মেয়েটার স্বাভাবিকভাবে ইচ্ছে করা উচিত কেনাকাটা করতে, পাঁপরভাজা বা ফুচকা খেতে, কিন্তু শুধুমাত্র বেঁচে থাকার দায়ে ঝুঁকি নিয়ে আমাদের মনোরঞ্জন করে যাচ্ছে দুবেলা খাওয়ার জন্যে। যদিও মেলায় মেলায় খেলা দেখিয়ে বেড়ানোর জন্যে হয়তো মেলার আকর্ষনও তার কাছে সেভাবে নেই।

এবার ফিরে আসার পথ ধরলাম। আসার পথেও একজায়গাতে সেই ফু এর দোকান চোখে পরল, এখানে ভীড় প্রায় নেই, তবে যারা আসছেন তারা প্রত্যেকেই কমপক্ষে ১০ টাকার বিনিময়ে একটি করে ফু কিনছেন মাথাতে। আমি শুনেছিলাম এখানকার মেলাতে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষকেই যোগদান করতে দেখা যায়, কিন্তু এই মেলাতে অন্তত গতকাল ( ২৭শে ফেব্রুয়ারী) হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে, হয়তো একই দিনে শিবরাত্রি থাকার কারনেও এরকম হতে পারে।

ফেরার সময়ে ভীড়ের চাপে দমবন্ধ অবস্থা প্রায়, তার মধ্যে দিয়ে কোনওমতে বাঁধ পেরিয়ে দূর্বল বাঁশের সেতুতে উঠে মনে হল সেটা এখনই ভেঙ্গে পরবে। একসঙ্গে এতো মানুষের চাপ সেই সেতুর নেওয়ার ক্ষমতা আছে বলে মনে হচ্ছিল না। শেষকালে বাড়ি পৌছালাম। ঘটনাটা এখানে শেষ হয়ে গেলেই ভালো হত।

আজ সকালে রামজীবনের ফোনে জানলাম সেই সেতু ভেঙ্গে পরেছে গতকাল রাতে – জলে পরে ভীষনভাবে আহত হয়েছেন ৩০ জন।

হুজুর সাহেবের মেলার ছবি তুলেছেন সোমনাথ চৌধুরি, ২৭ ফেব্রুয়ারি
হুজুর সাহেবের মেলার ছবি তুলেছেন সোমনাথ চৌধুরি, ২৭ ফেব্রুয়ারি
হুজুর সাহেবের মেলার ছবি তুলেছেন সোমনাথ চৌধুরি, ২৭ ফেব্রুয়ারি।
হুজুর সাহেবের মেলার ছবি তুলেছেন সোমনাথ চৌধুরি, ২৭ ফেব্রুয়ারি।

সংস্কৃতি কারিশাল, কোচবিহার, মাজার, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, হিন্দু-মুসলিম, হুজুর সাহেবের মেলা

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

সম্পাদকীয়

নীমা তেনজিনদের স্বপ্ন কি সার্থক হবে ?

একটি রাজনৈতিক সুইসাইড নোট

এই বিভাগের আরও

দেশের খবর

নিজেদের চাষের খবর দিলেন, দিল্লির আন্দোলনের খবর নিলেন সরবেড়িয়ার চাষিরা

গ্রামে বাড়ছে অভাবী বিক্রি। কৃষক মান্ডির হ্যাপার চাইতে চাষির ভরসা কাছের আড়ৎ।

এই বিভাগের আরও

সংস্কৃতির হাল

মরজীবনের গান গাইতে মিলনের অপেক্ষায় থাকে আজাহার ফকিরের অমর মেলা

ঘরে রাখা শস্যের বীজ ভালো আছে কিনা দেখে নেওয়া হয় ‘শস’ পাতার মধ্যে দিয়ে

এই বিভাগের আরও

খবরে দুনিয়া

‘গান গাইবি না, খাবারও পাবি না’// ফ্রান্সের মেনিল আমেলো’র ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে অভিবাসীদের এজাহার

মার্কিন মুলুকে নির্বাচন : বার্নি স্যান্ডার্সের প্রচারের একজন সমর্থকের সঙ্গে কিছু আলাপ, কয়েক মাস আগে

এই বিভাগের আরও

পথের খবর

সকালের ডাউন রানাঘাট লোকালে ‘জয় শ্রীরাম’ / ‘ভারতমাতা কী জয়’ গর্জন আর শোনা যাচ্ছে না

জাতীয় পতাকা নামিয়ে দিয়েছে লালকেল্লা থেকে, আপনি দেখেছেন?

এই বিভাগের আরও

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • Soumitra Seth on ময়দা কালীবাড়ি, বহরু
  • Suman mondal on চীনের সাথে চুলের ব্যবসা। বেলডাঙার বিদেশ-ব্যাপারী
  • রাজেশ মাহাতে on আদিবাসী কুড়মি সমাজের তিন জেলায় একদিনের অনশন
  • Dipanjan Das on নতুনহাটের মেছুড়ে জয়নালের কীর্তি

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in