যোগীনের পাঠানো প্রতিবেদন ও ‘দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ পত্রিকার তথ্য থেকে। ১০ অগাস্ট, ২০২০।#
আদিবাসী দের পবিত্র স্থান থেকে মাটি চুরি করে বিজেপি রাম মন্দিরের জমিতে নেবার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও কেস করলো ঝাড়খণ্ডের আদিবাসীসমাজ। উন্মোচন করলো হিন্দুত্ববাদী দের আদিবাসী সমাজের বিরোধিতা।
হিন্দুত্ববাদের বিশ্বাস হল আদিবাসী সমাজ আদিবাসী নয়। আর্যরাই আসল আদিবাসী, ৩০ হাজারের উপর পুরনো। যারা নিজেদের আদিবাসী বলে তারা মিথ্যা বলে। এরা হল রাম সেবক, একটু মাথা মোটা, বনবাসী।
স্বাধীনতার পর পাঁচের দশক থেকে প্রকৃতি-পূজক আদিবাসীদের ভাষা ও সংস্কৃতির উপর হিন্দি-হিন্দুত্বের আগ্রাসনের নানা রকম প্যাঁচ কষতে থাকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও সঙ্ঘ পরিবার। কখনো ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য করা তো কখনো ‘একাল বিদ্যালয় ফাউন্ডেশন'(EVF) এর মত এন.জি.ও. গুলির মাধ্যমে আদিবাসীদের মাথা খাওয়া। সঙ্ঘ পরিবারের দাবী সমস্ত অ-খ্রিস্টান আদিবাসীই নাকি হিন্দু। এমনকি সর্নধর্মও আসলে সনাতন ধর্ম। গত ৫ আগস্ট অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের ভূমিপূজনে ঝাড়খন্ডের ২১০০ পবিত্র জায়গা থেকে মাটি সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়া হয়, যার মধ্যে ১১০০ টি সর্নস্থল আছে, জানায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।
এতে বেজায় চটেছে আদিবাসী সমাজ। কেননা সর্নস্থল বা জাহের থান গুলি আদিবাসী গ্রামগুলির নিজস্ব পবিত্র জায়গা। আদিবাসী সমাজ ও গ্রাম-পুরোহিত পাহান এর অনুমতি ছাড়া কেউ সর্নস্থলের মাটি নিতে পারেনা। আদিবাসী সমাজের নেতা ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. কর্ম ওঁরাও বলেছেন, এই ঘটনা আদিবাসী জনজাতির আত্মপরিচয় ও সংস্কৃতির উপর প্রত্যক্ষ আক্রমণ, যা কখনোই বরদাস্ত করা হবেনা। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সারা দেশ জুড়ে সম্মেলন করা হবে এবং বিজেপির মদতদাতা সঙ্ঘপরিবার, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ -এদের চক্রান্তের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার চালানো হবে। তিনি আরো বলেন আদিবাসী জনজাতির সাথে আর্যদের কোনো মিল বা সম্পর্কই নেই। উভয়ে সম্পূর্ণত আলাদা। সহজ সরল ও গরীব আদিবাসীদের ভুল বুঝিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা হচ্ছে।
আদিবাসীদের অনুমতি ছাড়াই সর্নস্থলের মাটি চুরির অভিযোগে প্রাক্তন এম. এল. এ. ও বিজেপির মহিলা শাখার সভাপতি আরতি কুজুর এবং আদিবাসী নেত্রী মেঘা ওঁরাও এর বিরুদ্ধে এফ. আই. আর. করা হয় চানহো ও ধুরবা থানায়। আদিবাসী জন পরিষদের সভাপতি প্রেম শশী মুন্ডা বলেছেন, অযোধ্যায় মন্দির টন্দির হলে আমাদের কিছুই যায় আসে না। আমরা নিজেদের হিন্দু বলে মনেই করিনা।
Leave a Reply