এখন তার জায়গা নিয়ে অমিতাভ বচ্চনের ভারী গলায় হিন্দিতে করোনার সতর্কবাণী। “যবতক দাবাই নেহি, তবতক ঢিলাই নেহি” পাল্টে এখন যেটা বোঝাতে চাওয়া হচ্ছে — ভ্যাকসিন এসে গেছে, তবু মুখোশ পরে থাকতে হবে। দেখলাম, নিত্যযাত্রীরা বিরক্ত এই ঘোষণায়। অনেক নিত্যযাত্রীই সকালের ট্রেনে উঠে একটু ঘুমিয়ে নেয়। মিঠে গান হলে তাদের ঘুম তোফা হয়। কিন্তু মাঝে মাঝে অমিতাভ বচ্চনের গলার আওয়াজ তাদের পক্ষে বেশ বিরক্তিকর। কেউ কেউ বলছে — বচ্চনের পরিবারের সবাই তো করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তাহলে ও এত বড় বড় কথা বলছে কেন?
রেলের অন্দরেই বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে কর্মচারিরা। বাইরে জনগণ উত্তাল রেল চালানোর দাবীতে।
রেলমন্ত্রক ২০১৯ সাল থেকে বিভিন্ন বিজ্ঞপ্তি জারি করছে, ঐসব বিজ্ঞপ্তিতে ১৯৭২ ও ১৯৮৭ সালের নিয়মের উল্লেখ করে কর্মচারীদের আগাম অবসরের বার্তা পাঠাচ্ছে। রেলের বিভিন্ন ডিভিশনে ও ওয়ার্কশপে কর্মচারীদের (যাদের বয়স ৫৫ বছর বা কর্মজীবন ৩০ বছরের) তালিকা ইতিমধ্যেই প্রস্তুত করা হয়েছে। অবিলম্বেই তাদের অবসর গ্রহণের চিঠি ধরানো হবে। এই আকষ্মিক অবসর গ্রহণে ঐসব কর্মচারী ও তাদের পরিবার যে আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে সেকথা এই সরকারের ভাবনাতেই নেই। সরকার ১৯৭২ সালের নিয়মের সুযোগ নিচ্ছে যা পূর্বের কোনো সরকারই প্রয়োগ করেনি। আগের সরকার কর্মচারীদের স্বার্থের কথা ভেবে স্বেচ্ছাবসরের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রকল্প অনুমোদন করেছিল। বর্তমান সরকারের কোনো ক্ষেত্রেই কোনো মানবিক মুখ দেখা যাচ্ছে না। সেটা শুধু সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রেই নয়, লকডাউন পিরিয়ডে ভিন্নরাজ্যে আটকে থাকা শ্রমিকদের ঘরে ফেরানো, কৃষকের ঋণ মুকুব, নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র সংগ্রহে দুর্দশাগ্রস্ত আবালবৃদ্ধবনিতা, নোটবন্দীর সময়ে ব্যাঙ্কের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানো বয়স্ক নাগরিক – কোনো ক্ষেত্রেই সরকারকে মানবিক ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি।
নিউ নরম্যালে মেট্রোর চাকা গড়িয়েছে, এখনও কেন অচল-অনড় রয়েছে লোকাল ট্রেন?
মধ্যবিত্তের পেটে খিদে থাকলেও মানসম্মানের বড় চিন্তা। তাই আবার বাইকই ভরসা – আবার ভয়- আবার চিন্তা। সকলের হয়ে আমার একটাই প্রশ্ন- এখনো কি সময় হয়নি ট্রেনের লকডাউন ছাড়াবার? কারণ এবার যে রোগের চেয়ে পেটের জ্বালায় মরার সময় এসে গেছে। যারা সর্বময় কর্তা তাদের কাছে আমাদের মত স্বল্প বেতনের নিম্ন বেতনের নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ তাদের হয়ে আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ, সচেতনতা বাড়িয়ে যদি ট্রেনের চাকা গড়ানো যায় তাহলে আমাদের মত অনেককেই জীবন বাজি রাখতে হবেনা।
সাম্প্রতিক মন্তব্য