কৃষিমান্ডিতে ধান দেব বললে তো হবে না। গেলে তো নিবে না। স্লিপ ধরে দিবে। তাও গেলেই যে স্লিপ পাবে, তা’ও না। তারপর কবে ডাক আসবে, কবে টাকা পাব, তার ঠাঁইঠিকানা নেই। যার জন্য বাধ্য হয়ে চরণবাবুদের আড়তে দিয়ে এলাম সাড়ে বারশো কুইন্টালে। তারপর ধলতা কেটে নিল। কুইন্টালে চার কেজি, মানে পঞ্চাশ টাকা বাদ।
দিনের শেষে চাষি তার ফসলের দাম বলতে পারবে না বুক ঠুকে। ব্যবসাদারই সব ঠিক করবে
আলু খুব যত্নের গাছ তো। একটা জমিতে ধসা লাগলে আশেপাশের সব জমিতে ছড়িয়ে যায়। করোনার মত। ওষুধের খরচাটা বিশাল। এমনিতেই এবার আলুবীজের দাম চড়া। ফার্স্ট-কাট চার-পাঁচ হাজার টাকা বস্তা। বিঘাতে দুটো থেকে আড়াইটা লাগে। সার বিষ সব কিছু দিয়ে এবছর বিঘাপ্রতি খরচ তিরিশ হাজার টাকা। গতবছর যেটা ছিল কুড়ি-বাইশ হাজারের মধ্যে। এবার সবাই এত আলুর দিকে মন দিয়েছে, যে অন্যান্য সবজির দামও বাড়বে। আর সামনের বার আলুর প্রোডাকশানও বেশি হবে। ফলে চাষি দাম পাবে না। সাধারণ মানুষেরও ফাটবে বাজারে গিয়ে।
বাকি পথটুকু সাবধানে সাইকেল চালাতে চালাতে কানে বাজছিল চা দোকানের আরো নানারকম ছেঁড়া ছেঁড়া কথাবার্তা। — চাষ কারা করে বলুন তো?—হয় যাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, তারা; নয়তো বোকারা’।
যেখানে অধিকাংশ চাষিই ভাগচাষি, সেখানে কর্পোরেটদের সাথে চাষির চুক্তি হবে কী করে?
অমিত কিন্তু ফড়ে তথা আড়ৎদারদের পক্ষে দাঁড়ায়। এই আড়ৎদাররাই তো চাষের সময় চাষিকে কিছু অর্থ দিয়ে সাহায্য করে। সরকারি লোককে তখন আমরা পাব কোথায়? আবার ফসল বিক্রির সময় সরকারি লোকেদের সময় মত পাওয়া যায়না। অগত্যা আড়ৎদারই ভরসা। আর সরকারি প্রতিনিধিরাও নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে সেই আড়ৎদারদের থেকেই কেনে। কারণ সর্ষের ভিতরেই ভূত।
অমিত বলে, কৃষিবিল আসলে চাঁদার বিল না অন্যকিছু তা এখানকার চাষি জানেনা, জানতেও চায়না। সে যেভাবে বোঝে, সেভাবেই চাষ করে। কৃষিদপ্তর আর কৃষকের জমির মধ্যে থেকে যায় অনেক ফাঁক।
চাষির চোখে সবজি বাজার
নদীয়া জেলায় ফুলকপি আর শীতের অন্যান্য সবজির জন্য বিখ্যাত মদনপুরের মাজদিয়া গ্রামের ছোটো চাষি বাসুদেব পরামাণিক-এর সাথে কথোপকথনে শমীক সরকার ও সম্রাট সরকার। বাসুদেবের কথা সম্পাদনা করেছেন শমীক সরকার। বাসুদেবের ছবি প্রতিবেদকের তোলা, মদনপুর, ১৪ জুলাই# ‘মদনপুর বাজার যখন শুরু হয়েছিল, তখন বলা হয়েছিল, ‘চাষির মাল চাষিই বিক্রি করবে’ … ‘ এবার দশ-পনেরো দিন আগে […]
সাম্প্রতিক মন্তব্য