অর্ক ভাদুড়ি। ঢাকা। ২৭ জুলাই, ২০২০।#
শরিয়ত সরকার বাংলাদেশের সুফি ঘরানার জনপ্রিয় পারফর্মারদের একজন। উনি শরিয়ত বয়াতি নামেই পরিচিত। গত বছর ২৪ ডিসেম্বর রাতে ঢাকার ধামরাই এলাকায় পীর হজরত হেলাল শাহের বার্ষিক পালাগানের অনুষ্ঠানে শরিয়ত বয়াতি ইসলাম ধর্ম এবং মহানবি হজরত মহম্মদকে কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ। টাঙ্গাইলের মওলানা ফরিদুল ইসলাম শরিয়ত বয়াতির বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেন। এরপর শরিয়ত বয়াতিকে গ্রেফতার করা হয়। এখনও উনি জামিন পাননি। শরিয়ত বয়াতির বিরুদ্ধে যে আইনে মামলা হয়েছে, তার নাম ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট। এই আইনে সর্বোচ্চ সাজা হতে পারে দশ বছর জেল। ২০১৮ সালে এই আইন এনেছে শেখ হাসিনার সরকার। তারপর থেকেই অসংখ্য অ্যাক্টিভিস্টকে জেলে পোরা হয়েছে এই আইনে।
আল জাজিরায় সরকারের সমালোচনা করে শহীদুল আলমের মতো বিশ্ববরেণ্য ফটোগ্রাফার গ্রেফতার হয়েছেন। গত বছর এই আইনে কবি হেনরি স্বপনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত বছর মোট ২৯ জন এই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে জেলে গেছেন। কাজল নামে ফটোগ্রাফারও জেলে পচছেন। শরিয়ত বয়াতি ও কাজলের মুক্তির দাবিতে খুব সীমিত শক্তি নিয়েও বাংলাদেশের বামপন্থী এবং মানবাধিকার শক্তিগুলি আন্দোলন করছে। দিন দুই আগে ঢাকায় একটা নজরকাড়া জমায়েতও করেছে। লোক বেশি ছিল না, তবে বেশ চিত্তাকর্ষক প্রোগ্রাম নিয়েছিল।
গত ১০ মার্চ সন্ধ্যায় হাতিরপুলের অফিস থেকে বের হওয়ার পর ফটোসাংবাদিক ও দৈনিক পক্ষকালের সম্পাদক শফিকুল ইসলাম কাজল নিখোঁজ হন। কয়েকদিন আগে ফেসবুকে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মনোরম পলক লিখেছিলেন, ‘আমার সাংবাদিক এবং সম্পাদক বাবা আজ ১৩৪ দিন হলো বাসায় ফিরতে পারেননি। আমরা তার সঙ্গে দেখাও করতে পারছি না… আমি আজ জেলের গেট থেকে ফিরে এসেছি। আমার বাবার অপরাধ তিনি একটি জাতীয় দৈনিকের একটি সংবাদ শেয়ার করেছেন।'
জাহিদুল ইসলাম সাজিবের তোলা ছবি প্রতিবেদক সূত্রে পাওয়া
“গান-বাজনা হারাম কোরানের কোথাও বলা হয় নাই। কেউ যদি হারাম প্রমাণ দিতে পারে তবে তাকে আমি ৫০ লাখ টাকা দিব এবং জীবনের জন্য কবিগান ছেড়ে দেব।”- পালাগানের আসরে এই কথা বলার অপরাধে বয়াতি শরিয়ত সরকারকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করেছে হাসিনার সরকার।
Leave a Reply