সৈকত। অশোকনগর। ২ ডিসেম্বর, ২০২০।#
জমি ও জমিলুঠের কিসসা সর্বত্রই এক। আর. আর. এখনো ও. এন. জি. সি. -কে ক্লিয়ারেন্স দেয়নি। কৃষকেরা অনুমতি-দখলসত্ত্বে ক্ষতিপূরণও পাননি। জমির লুঠতরাজের ভাগের গঙ্গায় শাসক-বিরোধী সকলেরই অবাধ অবগাহন। কার টাকা কে খায়? এর উত্তর সময় বলবে। প্রোজেক্টের সামনে জনৈক আধিকারিকের সাথে কথা হচ্ছিল। তাঁর জবাব -“ক্ষতিপূরণ ছাড়া ও.এন.জি.সি. প্রোজেক্ট করে না। কতটা তেল আমরা নিশ্চিত নই। খোঁজ চলছে। আর রিফাইনারির কোন পরিকল্পনা আপাতত নেই”। প্রোজেক্টের বাইরে কয়েকজন শ্রমিক। আনন্দ তামিলের ছেলে, বারাণসী থেকে মুকেশ, মহারাষ্ট্রের বিশাল। সবাই কন্ট্রাক্ট কর্মী। ঠিকাদারের অধীনে শুরু থেকে কাজ করছেন। স্থানীয় কজন – তারা কেউ বলতে পারলেন না। গেটে দাঁড়ানো সিকিউরিটি কর্মীটি বাঁকুড়ার। তিনিও এজেন্সির। সদ্য পাথর বিছানো রাস্তা দিয়ে পৌঁছাতেই, দেখা গেল চেয়ার পেতে বসা রবীনকে। রাস্তার ঠিকেদার তপন ভৌমিকের অধীনে কাজ করেন। মোট কুড়িজন কাজ করছেন রাস্তা তৈরির। ১২ জন বাইরের, আটজন স্থানীয়। বোরিং-এর দায়িত্বে ঠিকেদার তপন মাজি। ঊনিশ জন কাজ করছেন। তারা দক্ষিণ ২৪ পরগণা থেকে এসেছেন। স্থানীয় পাঁচজন। কিছুটা দূরে ছোট্ট চালাঘর। উঁকি দিতে দেখা গেল তক্তাপোষে একজন প্রবীণ শুয়ে ছিলেন। তিনি হারান দাসের জমি ভাগে চাষ করেন। মুসলেম হাজি। এই জমি তিন ফসলি। বর্ষায় জল কম হলে কখনও ধান হয়। জঙ্গল সাফ করছিলেন আর একজন। তিনি হাজি সাহেবের থেকে জমি নিয়ে চাষ করেন, আলাউদ্দিন ভাই। জমি গেলে কী করবেন? ভাষাহীন চোখে তাদের জবাব -“জানিনা। চলে যাব”।
Leave a Reply