• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

অশোকনগরে ও.এন.জি.সি. তেল প্রকল্প: কয়েকটি প্রশ্ন ও অমীমাংসিত সম্ভাবনা। 

December 2, 2020 admin Leave a Comment

সৈকত। অশোকনগর। ২ ডিসেম্বর, ২০২০।#
‘তেলের খনি’ অতএব উন্নয়ন। উন্নয়ন কথাটা বাতাসে ভেসে ভেসে আজ প্রায় জনশ্রুতি হয়ে উঠেছে। শব্দটা শুনলে  ভক্তিভরা নতশির এতটা ঝুঁকে যায় যে, কেন বা কিসের উন্নয়ন তা আর মনে আসেনা। স্বাভাবিক। ভক্তির গুণ এমনই।
বাইগাছি অঞ্চলে তেলের খনি পাওয়া গেছে। এরপর কী? সেটা অবশ্য কারোরই জানা নেই। সুতরাং এরপর কল্পনার মাধুরী মেশানো। কয়েকদিন লাগাতার প্রশ্ন-প্রতিপ্রশ্নের ভিড়ে সত্য-মিথ্যার এত মিশেল ঘটে গেছে অন্তত অকুস্থলে না গিয়ে পারা গেল না। উন্নয়ন আদৌ কতটা হবে সে আলোচনা আপাতত তোলা থাক।
যে অঞ্চলে ও.এন.জি.সি.-র তেল প্রকল্প শুরু হয়েছে, সেটা মূলত অশোকনগর পৌর অঞ্চলের ২২ নং ওয়ার্ড সংলগ্ন বাইগাছি মৌজার অন্তর্ভুক্ত। বাইগাছি গ্রাম পত্তন হয়  মূলত উদ্বাস্তু মানুষদের পুনর্বাসন দেওয়ার ফলে। উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দপ্তর স্বাধীনতার পর নানা ক্যাম্প থেকে লোকজন এনে এখানে বসবাস ও চাষের জন্য অনুমতি-দখল-স্বত্ব দেয়।
অশোকনগরের ইতিহাসও তাই। আর.আর. বা রিফিউজি রিহ্যাবিলিটেশন দপ্তরের আনুকুল্যে উদ্বাস্তু মানুষের পুনর্বাসনের ফলাফল অশোকনগর। বাইগাছি অঞ্চলের সাথে ফারাকটা এই- অশোকনগরের বাসিন্দাদের অনুমতি-দখলপত্রের সাথে শর্তসাপেক্ষ মালিকানা দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে বাইগাছির অনেকে দখলসত্ত্বের সাথে মালিকানা পেলেও যে অঞ্চলে প্রোজেক্টটা হচ্ছে তার  অন্তর্ভুক্ত বেশিরভাগ জমির  মালিক অনুমতি-দখলের কাগজ পেলেও সরকার মালিকানা দেয়নি। অথচ সেই জমির উপর দখলসত্ত্ব কারো কারো চল্লিশ থেকে ষাট বছরের উপর। তেল প্রকল্পের জন্য যে ৬ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তার মধ্যে বেশিরভাগ জমি পরি সেন, হারান দাসের। এছাড়াও বিপুল মন্ডল, জীবন সিকদার সহ একাধিক কৃষকের অনুমতি-দখলের কাগজ থাকা সত্ত্বেও কোন রকম মূল্য ছাড়া ও.এন.জি.সি. জমি দখল করেছে।
 একটা কথা অনেকেই বলছেন, ওই এলাকার জমিটা ‘ভেসটেড ল্যান্ড’। যারা বলছেন, তারা উদ্বাস্তু অশোকনগরের ইতিহাসের দিকে লক্ষ্য না রেখেই বলছেন। কারণ অশোকনগরের সব জমিই সেই অর্থে ‘ভেসটেড’। আর.আর. বা উদ্বাস্তু দপ্তরের। বসবাসকারীদের শর্তসাপেক্ষ অনুমতি-দখল এবং পরে শর্তসাপেক্ষ মালিকানা  দেওয়া। সুতরাং যারা ” ভেসটেড” এর কথা বলছেন তাদের ” ভেসটেড” ইন্টারেস্ট কোথায় সে বিষয়ে পরে আসছি।
বাইগাছি মৌজার এই  অংশে যারা চাষ করছেন, তাদের পুনর্বাসন দেওয়া হয় স্বাধীনতার পর। প্রথমে বাস্তু জমি, পরে চাষের জমি। সবটাই অনুমতি-দখলসত্ব৷ আর.আর. দপ্তর বাস্তুজমির মালিকানা দিলেও চাষের জমির কোন মালিকানা দেয়নি। চাষের জমির বেশিরভাগের অনুমতি-দখলসত্ব পান পরি সেন ও হারান দাস৷ অন্যান্যরাও কিছু কিছু পান। অনুমতি দখলের জমি একাধিকবার হস্তান্তর হয়েছে। গরীব চাষির কাছে বেআইনি ভাবে বিক্রি করা হয়েছে। সব সরকারের আমলেই। ‘৯২ সাল নাগাদ বিপুল মন্ডল ২ বিঘা ৫ শতক জমি স্ট্যাম্প ডিউটি মিটিয়ে, রেজিস্ট্রি ফি দিয়ে কিনে নেন। তার কাছে দলিল ও অনুমতি-দখলের সত্ত্ব সবটাই আছে। তার ২ বিঘা ৫ শতক জমিই তেল প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু তিনি কোন ক্ষতিপূরণ পাননি। যথাক্রমে জীবন সিকদারের পৌনে চার বিঘা জমি,  তপন দাসের ছয় বিঘা,পরি সেনের বিঘা দশেক (সঠিক পরিমাপ পাওয়া যায়নি) ও অন্যান্য জনা পঞ্চাশেকের বেশি কৃষকের জমি ইতিমধ্যে অধিগ্রহণ করা হয়েছে। আরও অধিগ্রহণ করা হবে বলে তাদের আশঙ্কা।
 প্রশ্নটা হল ও.এন.জি.সি. সাধারণত জমির দাম মিটিয়ে প্রোজেক্ট শুরু করে। ব্যতিক্রম আছে অবশ্যই। এই প্রোজেক্টের ক্ষেত্রেও কি তবে ব্যতিক্রম হল? এই প্রশ্নের অনুসন্ধান করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সব কৃষকের মুখে শোনা গেল ও.এন.জি.সি. নাকি বলেছে তারা জমির মূল্য পৌরসভাকে দিয়ে দিয়েছে। পৌরসভার পৌরপ্রধান বলছেন – ভেসটেড ল্যান্ড। অথচ সেই ল্যান্ডের জন্যই বরাদ্দ অর্থ পৌরসভায় গচ্ছিত। এখানেই অস্পষ্টতা। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেল কয়েকদিন আগে হাজার দুয়েক কৃষকের জমায়েত হয়েছিল। এর আগে দুবছর ধরে তারা সব দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন। এমনকি তাদের অসহায়তার কথা বলে নবান্নে চিঠি দিয়েছেন। কেউ ভ্রুক্ষেপ করেননি। কৃষকের জমায়েত তুলতে পুলিশ সদল বলে হাজির হয়। যারা একদিন কৃষকের জমি দখলের বিরুদ্ধে কথা বলে ক্ষমতায় এসেছেন, তাদের পরিচালিত জেলা প্রশাসনের ডি.এম. দুহাজার লোককে হঠাতে লাঠি চার্জের নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় পুলিশ জানান দুহাজার লোককে হঠানোর ফোর্স নেই। তারপর আসেন পৌরপ্রশাসক মন্ডলীর সদস্যরা। কয়েকজন কৃষক প্রতিনিধিকে আলোচনার জন্য পৌরসভায় ডেকে নিয়ে কার্যত আটকে রাখা, ভয় দেখানো হয় বলে অভিযোগ। পৌরপ্রশাসক নাকি তাদের ক্ষতিপূরণের লিখিত প্রতিশ্রুতিও দেন। অথচ সেই প্যাডে তিনি কোন তারিখের উল্লেখ করেননি। এটা ভুল না ইচ্ছাকৃত? সেটা তিনিই বলতে পারবেন।
কে ঠিক? ও.এন.জি.সি. নাকি পৌরপ্রশাসকেরা? ক্ষতিপূরণের টাকা পৌরসভায় জমা পড়েছে নাকি আদৌ পড়েনি? কৃষকেরা বলছেন টাকার বিলিবন্টন ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। বিঘাপ্রতি কোটি টাকার ‘বখরা’। সত্যি কিনা জানিনা। আজ বামদলের জনৈক চেনা মুখ দেখলাম। কৃষকদের এবং ও.এন.জি.সি.-র মধ্যস্থতা করতে এলেন। কৃষক কল্যাণ সমিতির সভাপতি তপন দাসের জবাব – “এতদিন কোথায় ছিলেন? দুবছর ধরে লড়ছি। অবরোধ হল, অমনি চলে এলেন। আমরা কোর্টে গেছি। মামলা বিচারাধীন”।  বাম নেতার পাল্টা জবাব -“অবরোধ করে কী হবে? এসব করে কী হবে?” তপন দাস স্পষ্ট বললেন -“কিছুই করব না।জমির দাম আপনারা  আদায় করে দিন।” মধ্যস্থতাকারী নেতাটি চুপ করেন। তপন দাসের জবাব, “অবরোধ করেছি বলেই আপনারা আজ এলেন। না হলে কেউ জানতেও পারতেন না। জানার চেষ্টাও করেননি।” তিনি সরে পড়লেন। কৃষকদের সাথে কথা বলে বোঝা গেল এরা চাইছেন প্রোজেক্ট হোক। তাদের বক্তব্য, “আমরা চাই প্রোজেক্ট হোক। আমাদের আরও জমি আমরা দেব। জমি আমাদের জীবন-জীবিকা। ক্ষতিপূরণ না পেলে আমরা সর্বস্বান্ত হব। ও.এন.জি.সি. কথা বলুক আমাদের সাথে।ক্ষতিপূরণ সরাসরি আমাদের দিক। দালালেরা টাকা মেরে দিচ্ছে। প্রোজেক্ট হলে তো আমরাও উপকৃত হব।”
শুরু হয়েছে ভুঁইফোড় উন্নয়নের কাজ। প্রোজেক্ট সাইটের ছবিগুলি প্রতিবেদকের তোলা।

জমি ও জমিলুঠের কিসসা সর্বত্রই এক। আর. আর. এখনো ও. এন. জি. সি. -কে ক্লিয়ারেন্স দেয়নি। কৃষকেরা অনুমতি-দখলসত্ত্বে ক্ষতিপূরণও পাননি। জমির লুঠতরাজের ভাগের গঙ্গায় শাসক-বিরোধী সকলেরই অবাধ অবগাহন। কার টাকা কে খায়? এর উত্তর সময় বলবে। প্রোজেক্টের সামনে জনৈক আধিকারিকের সাথে কথা হচ্ছিল। তাঁর জবাব -“ক্ষতিপূরণ ছাড়া ও.এন.জি.সি. প্রোজেক্ট করে না। কতটা তেল আমরা নিশ্চিত নই। খোঁজ চলছে। আর রিফাইনারির কোন পরিকল্পনা আপাতত নেই”। প্রোজেক্টের বাইরে কয়েকজন শ্রমিক। আনন্দ তামিলের ছেলে, বারাণসী থেকে মুকেশ, মহারাষ্ট্রের বিশাল। সবাই কন্ট্রাক্ট কর্মী। ঠিকাদারের অধীনে শুরু থেকে কাজ করছেন। স্থানীয় কজন – তারা কেউ বলতে পারলেন না। গেটে দাঁড়ানো সিকিউরিটি কর্মীটি বাঁকুড়ার। তিনিও এজেন্সির। সদ্য পাথর বিছানো রাস্তা দিয়ে পৌঁছাতেই, দেখা গেল চেয়ার পেতে বসা রবীনকে। রাস্তার ঠিকেদার তপন ভৌমিকের অধীনে কাজ করেন। মোট কুড়িজন কাজ করছেন রাস্তা তৈরির। ১২ জন বাইরের, আটজন স্থানীয়।  বোরিং-এর দায়িত্বে ঠিকেদার তপন মাজি। ঊনিশ জন কাজ করছেন। তারা দক্ষিণ ২৪ পরগণা থেকে এসেছেন। স্থানীয় পাঁচজন। কিছুটা দূরে ছোট্ট চালাঘর। উঁকি দিতে দেখা গেল তক্তাপোষে একজন প্রবীণ শুয়ে ছিলেন। তিনি হারান দাসের জমি ভাগে চাষ করেন। মুসলেম হাজি। এই জমি তিন ফসলি। বর্ষায় জল কম হলে কখনও ধান হয়। জঙ্গল সাফ করছিলেন আর একজন। তিনি হাজি সাহেবের থেকে জমি নিয়ে চাষ করেন, আলাউদ্দিন ভাই।  জমি গেলে কী করবেন? ভাষাহীন চোখে তাদের জবাব -“জানিনা। চলে যাব”।

সদ্য তৈরি হওয়া রাস্তা দিয়ে হেঁটে জিরাট রোডে পড়া গেল। রাস্তা পার করলে হাফিজের চায়ের দোকান। চা খেতে খেতে কথা হচ্ছিল। হাফিজ খুশি। তার জবাব, এবার ওর বিক্রি বাড়বে। জমি প্রসঙ্গে জানতে  চাইলে বলল, ও তো ভেসটেড ল্যান্ড।
-চাষিদের কী হবে? তার জবাব-“সে যা হবার হবে”। দোকানে এলেন আনোয়ার ভাই। দুজনে আলোচনায় মেতে উঠলেন। সাহেবরা বলেছে, ওদিকের পাঁচিলঘেরা জমিতে মিটিং আর পার্টি করবে। ব্যবস্থা করে দিতে। তাহলে তারাও …… পাবে।

শক্তি, শিল্প ও বাণিজ্য উদ্বাস্তু পুনর্বাসন গ্রাম, উন্নয়ন, ও.এন.জি.সি., কৃষিজমি, খাসজমি, জ্বালানি তেলের কারবার

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in