• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

বহিরাগত বিতর্ক

ছন্দক চট্টোপাধ্যায়

গৌতম ভদ্রের একট লেখায় পড়েছিলাম, তিনি বলছেন বিতর্কটা চলছে উন্নয়নপন্থী কানুননিষ্ঠ নিয়ন্ত্রণবাদী বুদ্ধিজীবী এবং উন্নয়নপন্থী উদারনৈতিক বিজ্ঞাননিষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে। ধরনা, ঘেরাও, হরতাল, বহিরাগত !!! প্রশ্নটা শালীনতা বৈধতা আইনসিদ্ধ কিনা এই নিয়ে। কথা হল এই আলোচনা, বিতর্কগুলোই শালীনতার গণ্ডি ছাড়িয়ে গেছে বলে মনে হয়। প্রতি সন্ধ্যায় দাঁত চিবিয়ে খেউরচন্দ্রিকা আর চা বিস্কুট ভক্ষণই তাদের দস্তুর। বহু বছরের রক্তঝরা আন্দোলনের ফসল এই হাতিয়ারগুলো। ছাত্র যুব মেহনতি আমজনতার প্রতিবাদ প্রতিরোধে অর্জিত। কোনো কোয়েম্বাতুর বা কাকিঝরের পার্টি কংগ্রেস যেমন ঠিক করে দিতে পারে না, শ্রমজীবী জনতা এগুলো বন্ধ করবে কিনা, তেমনই কোনো শীততাপ নিয়ন্ত্রিত প্রতিপক্ষও নয়। একটা মিটিংয়ের অভিজ্ঞতা না বলেই পারছি না, ইরাকে আমেরিকার হস্তক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, মোদ্দায় প্রায় সকলেই এই হস্তক্ষেপের বিরোধী, কেবল দুজন ছাত্র ক্রমাগত আমেরিকার পক্ষে কথা বলে গেল। মিটিং শেষের দিকে যখন সকলে প্রচণ্ড উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে, তখন দুজনেই জোড়হাতে জানালো আগামীকাল তাদের পার্লামেন্টারি ডিবেট আছে, তাতে তাদের আমেরিকার পক্ষে কথা বলতে হবে। বুঝুন!!!

কোনো একটি রাজনৈতিক সংঘর্ষের পরে দুই পার্টির নেতা যখন নিজেদের মধ্যে লাশ নিয়ে সংখ্যাতত্ত্ব দেন, ডায়েরির পাতা উল্টে বের করেন কোথায় বিরোধীপক্ষ খুন রাহাজানি ধর্ষণ বোমাবাজি করেছিল, যখন ‘আমরা ৫০০ লাশ ফেলেছি তো কি তোরা ৫৩৩’ বলে আনন্দে কুলকুচি করেন, তেমন উলঙ্গ এই আলোচনাগুলোও। একমাত্র গণআন্দোলনই ঠিক করতে পারে তার পথগুলো কী হবে। তেভাগা, স্বাধীনতা সংগ্রামের থেকে শিক্ষা নিয়েই নন্দীগ্রামের মানুষ পুলিশ এবং চটি পরা ক্যাডারদের হাত থেকে বাঁচতে রাস্তা কেটেছিল। কোনো ‘আন্দোলন করিবার ১০০টি উপায়’ নামক পুস্তিকা তাদের এই পথ বাতলে দেয়নি। ফলে আজ যদি সংগ্রামরত জনগণ মনে করে রাজপথে হামাগুড়ি দিতে দিতে ‘হালুম’ বলে ডাক পারলে বা গণ ডুবসাঁতার কাটলে সবথেকে বেশি প্রতিবাদ করা যাবে, সেটাই নতুন যুগের নতুন আঙ্গিক, তাহলে তারা তাই করবে। এই নিয়ে তেল চিটচিটে ঘাড়ে রোঁয়া ওঠা দাদাঠাকুরের দল তাদের মতামত না দিলেই তো ভালো।

এই পরিপ্রেক্ষিত মাথায় রেখে বলা যায়, বাহির এবং অন্তরের ভেদ একটি রাষ্ট্রিক চোখের দৃষ্টি। তার সীমান্ত, কাঁটাতার, নির্দ্দিষ্ট কানুন থাকে। প্রশাসন থেকে কর্তৃপক্ষ ফ্ল্যাট বাড়ির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়কে গুলিয়ে ফেলেছে। ফ্ল্যাট বাড়িতে হকার দাদাদের জন্য সতর্কতা থাকে দরজা জুড়ে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবনাটাই তো ইন্টারন্যাশনাল, মেলাবে মানব জাত। দিবে আর নিবে মিলাবে মিলিবে। একটা শতফুল বিকশিত হোকের স্বপ্ন।

বহুদিন যাবৎ প্রেসিডেন্সির যে ছাত্রছাত্রীরা যাদবপুরের আন্দোলনের পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিল, তাদের বহিরাগত বলে একটা অ্যাজেন্ডা করা হচ্ছে। রাত দুটোয় যখন শোনা যাচ্ছে পুলিশ ঢুকবে, তখন প্রেসিডেন্সির ছাত্রছাত্রীরা গিয়েছিল পাশে দাঁড়াতে। আর যারা পাটিপাটি করে চুল আঁচড়ে, ইলিশ মাছের ঝোল দিয়ে ভাত সাবড়ে ঘাড়ে পাউডার মেখে চ্যানেলে চ্যানেলে এই নিয়ে আলোচনা করছে তারা, আগেই উল্লেখ করেছি, আমেরিকার পক্ষে দাঁড়িয়েছিল, তাদের মতোই। কারণ এরা আলোচনাজীবী। পাশে না দাঁড়ালে সমাজতত্ত্বের ইয়া মোটা বই খুলে এই প্রজন্মকে আত্মকেন্দ্রিক ঘোষণা করে দিত।

আর শাসকদলের ছাত্র সংঠনের তরফে শঙ্কু পাণ্ডা যে বহিরাগত বলে চেঁচাচ্ছেন, তিনি এবং আরাবুল ইসলাম যে নানা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্যের ঘরে গিয়ে বসে থাকেন, হল্লা করেন, তাঁরা কোন কলেজে পড়েন?

মমতা ব্যানার্জি যতদূর জানি সিঙ্গুরের কৃষক ছিলেন না, তাহলে তিনি আন্দোলনে গেলেন কীভাবে? তিনিও তবে বহিরাগত!!! এক নিন্দুক ফেসবুক নিয়ে মজা করেই হয়তো পোস্ট করেছেন, শাসকদলের এক নেতা নাকি বলেছেন চাঁদে কলঙ্ক থাকতে পারে দিদিতে নয়। তেমন হলে কিছু বলবার নেই। তারা ফুটবল খেলার বাজি ধরে ওয়াটার পোলো খেলবার আবদার করেছে। ওভাবে দেখলে গান্ধী চম্পারনে এবং চে দেশে দেশে বহিরাগত ছিলেন। তাও চার্লি চ্যাপলিনের মতোই বলতে চাই, সেদিন রাতে বন্ধুদের পাশে দাঁড়িয়ে যদি বহিরাগত তকমা পেতে হয়, তবে একশোবার আমরা বহিরাগত হতে রাজি। একটা তথ্য কেবল দিয়ে রাখি। প্রেসিডেন্সি আর যাদবপুরের ক-জন প্রেম করে জানেন পুলিশ কমিশনার?? প্রেমিকা প্রেমিককে বাঁচাতে গেলে, ব্যারিকেড গড়লে তারা বহিরাগত? প্রেমের কসম, পৃথিবীর প্রেমিক প্রেমিকা এক হও।

ওয়াল্টার বেঞ্জামিন তাঁর প্রবন্ধ ‘ওয়ার্ক অফ আর্ট ইন দি এজ অফ মেকানিকাল রিপ্রোডাক্‌শন’-এ দেখাচ্ছেন কীভাবে সংবাদপত্র প্রকাশের সাথে সাথেই একজন পাঠকও লেখক হয়ে উঠছেন। তিনি সংবাদপত্রে চিঠি লিখছেন, ছবি পাঠাচ্ছেন, ইণ্টারভিউ দিচ্ছেন, দিতে দিতেই অংশগ্রহণ করে ফেলেছেন। কারিগর হয়ে উঠেছেন। বিশ্বায়ন পরবর্তী দেশের নতুন প্রজন্ম সব কিছুকেই পুনর্গঠন করতে চায়। এই প্রজন্ম কেবল ক্রেতা হয়ে থেকে যেতে চায় না। চায় নির্মাতা হতে । ফেসবুকে সে যখন কমেন্ট করে তখন সে লেখক। ফটো তুলে নিজেই এডিট করে। সিনেমা হল থেকে বেরিয়েই সে ক্যামেরা হাতে ডকু বানায়। সে ভোক্তা নয়, নতুন এক নির্মাতা। এ এমন এক আম আদমি যে নিজের দেশ, নিজে হাতে গড়তে চায়। এই শ্রেণীটিকে আমরা দেখেছিলাম প্রজন্ম চত্বরে (শাহবাগ)। আমাদের দেশে, যেটা আগে একমাত্র দেখা গিয়েছিল নেহেরুর সরকারের জাতি গড়ার প্রকল্পে। এখানেই লুকিয়ে আছে COMMON MAN সেন্টিমেন্ট। ইন্টারনেট ব্যবস্থা আসবার পরে মানুষ আজ বিশ্বগ্রামের বাসিন্দা। চিলি থেকে চিংড়িহাটা, হেদুয়া থেকে হংকং এক হয়ে গিয়েছে। হংকংয়ের হলুদ ছাতা বিদ্রোহ থেকে চিলি লন্ডনের ছাত্র বিক্ষোভ। শাহবাগের লড়াকু জনতা আজ আমাদের বন্ধু। তেহরির থেকে ওয়াল স্ট্রীটের জমায়েতে একটা বড়ো ভূমিকা নিয়েছিল ফেসবুক। ফলে কে বহিরাগত? যে যেখানে লড়ে যায় আমাদেরই লড়া।

বহিরাগত শব্দটা রাষ্ট্রের তৈরি শব্দ বা সেই সেলফিস জায়ান্টের। যে তার বাগানে ঝুলিয়ে দিয়েছিল ট্রেসপাসার্স নট অ্যালাউড। তারপর থেকে তার বাগানে কোনো ফুল ফোটেনি, পাখি ডাকেনি, বসন্ত আসেনি। যাদবপুরে এর মধ্যেই টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে আদালতের ফতোয়া। যাদবপুর লেজে, গ্রিন জোনে বসন্ত কি আসবে? প্রেমিক প্রেমিকার গোপন অভিসারের পথ ঝিলপারে আই কার্ড দেখাতে বলেছেন কর্তৃপক্ষ। সকালবেলায় গোমড়ামুখো বুড়োদের লাফিং ক্লাবে আই কার্ড দেখাতে বলছেন কর্তৃপক্ষ। ক্লাস করতে, সেমিনারে, প্রেম করতে, আড্ডা মারতে, চোর-পুলিশ খেলতে এলেও আই কার্ড দেখাতে হবে। আমাদের আরশিনগরে দ্বাররক্ষী বসাতে চাইছে কর্তৃপক্ষ। অচিনপাখির যাতায়াত কি জাল বন্দি করা যায়?

ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় কলরব হয়েছে, তোমার নাম আমার নাম/ভিয়েতনাম ভিয়েতনাম। আগুনে ৬০ যাদবপুরের দেওয়াল খোদাই করে দিয়েছিল ‘বহিরাগত’ সরবোন-কে। সেদিন স্টুডেন্টস পাওয়ারের ভাসিয়ে দেওয়ার দিন ছিল। যখন সরবোনে লাতিন কোয়াটারের নতুন নাম দেওয়া হয়েছিল ভিয়েতনাম কোয়াটার । মূল প্রেক্ষাগৃহের নাম বদলে রাখা হয়েছিল চে গুয়েভারা হল। তখন যাদবপুর লিখেছিল সরবোন থেকে যাদবপুর/সংগ্রামের একই সুর। আর আজ লাঠির মুখে গানের সুর/পথ দেখাল যাদবপুর।

দুনিয়ার বহিরাগত এক হও।

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in