১৬ সেপ্টেম্বর অবস্থানরত ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর পুলিশি হামলার আগের পর্বে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন নিয়ে আর্টস ফ্যাকাল্টি (AFSU) এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি (FETSU)-র ছাত্রছাত্রী ইউনিয়ন দুটির প্রতিনিধিত্বমূলক বয়ান।
আর্টস ফ্যাকাল্টির ছাত্রছাত্রী ইউনিয়নের একটি লিফলেট (সম্ভাব্য তারিখ : ৯ সেপ্টেম্বর)
তদন্ত, অগ্রগতি (?) ও আন্দোলন
ঘটনা ১ : ২৮ আগস্ট আমাদের এক সহপাঠী অভিযোগ করে ক্যাম্পাসের মধ্যে সে শ্লীলতাহানির শিকার।
ঘটনা ২ : ক্যাম্পাসের মধ্যে এরকম একটি গুরুতর অভিযোগ শোনার সাথে সাথে আমাদের ফ্যাকাল্টির ছাত্রছাত্রীরা দলমত নির্বিশেষে বলিষ্ঠ নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে। প্রসঙ্গত ছাত্রছাত্রীরা কোনোরকম বিভাজন ছাড়াই ঐক্যবদ্ধভাবে তদন্তের দাবি সোচ্চার করে।
ঘটনা ৩ : কমিটি ICC গত শুক্রবার তদন্তের কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় মিটিংয়ে।
ঘটনা ৪ : পরদিনই জানা যায়, ICC-র পক্ষ থেকে দু-জন সদস্য অভিযোগকারী ছাত্রীর বাড়ি যান তদন্তের কাজে। অবশ্য ছাত্রীটির অভিযোগ, ICC-র সদস্যরা তাকে অস্বস্তিকর অনভিপ্রেত কিছু প্রশ্ন করে। এই অভিযোগ তদন্ত কমিটির নিরপেক্ষতাকে চ্যালেঞ্জ করে।
তদন্ত কমিটি পক্ষপাতদুষ্ট এবং পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে — এ হেন অভিযোগ নিরপেক্ষ তদন্তের পক্ষে ক্ষতিকারক। আমরা প্রথম থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি। তদন্তের নিরপেক্ষতা প্রশ্নাতীত হওয়া উচিত।
অথচ তদন্ত কমিটিই যখন অভিযুক্ত, তখন স্বাভাবিক কারণেই শঙ্কিত। গতকাল ICC-র মিটিংয়ে AFSU-র প্রতিনিধি (সাধারণ সম্পাদক) এই উদ্বেগের কথা তুলে ধরে। এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিকে আবারো সোচ্চার করে। অথচ কমিটির একাধিক সদস্যের পক্ষপাতদুষ্ট মন্তব্যের জেরে সাধারণ সম্পাদক তৎক্ষণাৎ তদন্ত কমিটি থেকে ইস্তফা দেয়। ছাত্রছাত্রীদের অবস্থান চলে সভাকক্ষের বাইরে।
পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগে অভিযুক্ত তদন্তের বদলে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি ছাত্রছাত্রীদের ঐক্যবদ্ধ দাবি। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিভাজন তৈরির যত চেষ্টাই হোক, আমরা বিশ্বাস করি, ছাত্র-ছাত্রী/দল-মত/হস্টেল-নন হস্টেল নির্বিশেষে সব ছাত্রছাত্রীই নিরপেক্ষ তদন্ত চায়।
গতকাল আন্দোলনের চাপে, ICC কার্যকর নিরপেক্ষ তদন্ত করতে আশ্বস্ত করে এবং আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্তের কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু যেহেতু তদন্তের নিরপেক্ষতা ইতিমধ্যে অভিযোগের মুখে, তাই আমরা এ বিষয়ে কড়া দৃষ্টি রাখতে চাই। এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে কোনোরকম আপোষ না করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে দায়বদ্ধ।
নিশ্চয়, সমস্ত ছাত্রছাত্রী নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে লড়াইয়ে পাশে থাকবে।
AFSU
আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের পক্ষ থেকে তন্ময়, গীতশ্রী, অন্তরা, সোনালী কর্তৃক প্রকাশিত।
———–
ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি ছাত্রছাত্রী ইউনিয়নের (FETSU) পদাধিকারীদের প্রাথমিক বয়ান (সম্ভাব্য তারিখ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪)
বন্ধু,
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ঘটনা (এক ছাত্রীর ওপর কিছু ছাত্রের ‘যৌন নিগ্রহ’-র অভিযোগ) প্রসঙ্গে এখানে কিছু পর্যবেক্ষণ বিবৃত করছি যার ভিত্তিতে ইউনিয়নের সাধারণ সভায় আলোচনা হতে পারে। যদিও সাধারণ সভা আলোচনার শেষে এই পর্যবেক্ষণ আংশিক/সম্পূর্ণত সংশোধন/খারিজ অথবা সহমতের ভিত্তিতে গ্রহণ করতে পারে ফেটসুর দীর্ঘ প্রগতিশীল ইতিবাচক আন্দোলনের ঐতিহ্যকে মাথায় রেখে। সাধারণ সভার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ যা সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই ইউনিয়নের সিদ্ধান্ত হবে। সেই সিদ্ধান্ত সবাইকে মানতে হবে এমন নয়, কেউ নিজের ব্যক্তিগত মতামত রাখতেই পারে। তবে ইউনিয়ন সংখ্যাগরিষ্ঠের বক্তব্য মানতে বাধ্য।
যাতে ছাত্রছাত্রীরা ঘটনা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পায় ও প্রকৃত অর্থে সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে, তাই আমাদের কিছু দিন সময় লাগল ঘটনার সব ধরনের বিবরণ জড়ো করতে। গুজরাত, কামদুনি, নন্দীগ্রাম প্রভৃতিতে ঘটে যাওয়া যৌননিগ্রহ/ধর্ষণের সাথে এই ঘটনার তুলনা চলে না (তথ্য বা বিবরণ সংগ্রহের প্রেক্ষিতে … কারণ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেকার; বিশেষত, এখানে অভিযুক্ত যখন কিছু ছাত্র, যারা অন্য সব FET ছাত্রী-ছাত্রদের মতোই ফেটসুর সদস্য)।
জন্মলগ্ন থেকে ফেটসু যে কোনো রাষ্ট্রীয়/দলীয়/ব্যক্তিক হিংসা/অবমাননার বিরুদ্ধে কথা বলেছে। জনমত তৈরিতে সচেষ্ট থেকেছে। অন্যায়ের সাথে আপোষ করার পথ ফেটসু কখনো নেয়নি। লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে অর্থাৎ লিঙ্গ সাম্যের প্রশ্নে বারবারই আমাদেরকে ক্যাম্পাসে ও রাজপথে সক্রিয় হতে দেখা গেছে, বিশেষত ২০০৬-২০০৭ পরবর্তী বছরগুলিতে (যাতে ডে-স্কলারদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অগ্রণী ভূমিকা নিতে দেখা গেছে হস্টেলে থাকা ছাত্র-ছাত্রীদের)। তবু এই প্রশ্নে ইতিবাচক ভূমিকা নেওয়ার কাজ এখনও বহুলাংশে বাকি।
ফেটসুর পর্যবেক্ষণ
১। গত ২৮ আগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আর্টস কলেজের বার্ষিক উৎসব ‘সংস্কৃতি’র শেষ দিনে আর্টস কলেজের এক ছাত্রীকে ‘যৌননিগ্রহ’ ও ‘ধর্ষণের’ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে হস্টেল-আবাসিক কিছু ছাত্রের বিরুদ্ধে। আরও অভিযোগ ওই ছাত্রীর সঙ্গে থাকা বন্ধু (যিনি পুরুষ)-কে দৈহিক নিগ্রহ করা হয়, বলপূর্বক ছাত্রীটিকে হস্টেলের একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে মানসিক ও শারীরিক হয়রানি করা হয়।
২। আরও অভিযোগ, উক্ত ঘটনাবলী ঘটতে দেখেও হস্টেলের সুপার ও গার্ড কোনো বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেননি।
৩। অভিযোগকারিণী অভিযোগ করার পর কর্তৃপক্ষ তাকে পরামর্শ দেয় পরবর্তী পনেরো দিন ক্যাম্পাসে না আসতে। তদন্ত কমিটি গড়ে তুলতে না কি সময় লাগবে! যৌন হেনস্থা বিরোধী সেল (CASH) যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে তা তাকে জানানো হয় না বলেই অভিযোগ।
৪। মূলত আর্টস কলেজে ছাত্রছাত্রীদের প্রশংসনীয় সক্রিয়তায় চলমান আন্দোলনে কর্তৃপক্ষ-প্রশাসনকে আবার হস্তক্ষেপ করতে দেখা গেল, যখন গত পরশু (সোমবার) অরবিন্দ ভবনে উপাচার্যের ঘরের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থানরত ছাত্রছাত্রীদের বলপূর্বক সরিয়ে দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
৫। কর্তৃপক্ষ আজ বুধবারের মধ্যে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের দাবির উত্তর দেবেন বলেছিলেন। আজ সন্ধে পর্যন্ত তাঁদের তরফে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি।
৬। উল্টে আজ যখন ছাত্রছাত্রীরা অরবিন্দ ভবনের সামনে দীর্ঘস্থায়ী অবস্থানের সিদ্ধান্ত নিয়ে ধারাবাহিক লড়াইয়ের spirit দেখাচ্ছে, তখন পুলিশের গাড়ি চক্কর মেরে যাচ্ছে সংগ্রামী ছাত্রছাত্রীদের মনে ভয় ধরানোর জন্য। কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় ভুলে যায়নি, যাদবপুর মানে … লাঠির মুখে গানের সুর।
৭। এই পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ থেকে এটা স্পষ্ট যে বরাবরের মতোই এই ক্ষেত্রেও কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ছাত্রস্বার্থ বিরোধী এবং তদন্ত প্রক্রিয়া দীর্ঘ করার ক্ষেত্রে সঠিক ন্যায় বিচারের কারণে তাদের সময় লাগছে এই যুক্তিতে কোনো একজন ছাত্র বা ছাত্রীও যেন বিভ্রান্ত না হয়। বরং বরাবরের মতোই কর্তৃপক্ষের প্রতিটি আচরণকেই ছাত্রস্বার্থের উল্টোদিক থেকেই আমাদের দেখতে হবে।
৮। সুতরাং, বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে গত এক সপ্তাহব্যাপী ক্লাস ক্যাম্পেন ও গ্রুপ আলোচনাগুলির সূত্র ধরে ফেটসু এটাই বলতে চায় যে, কর্তৃপক্ষ-বিরোধিতার অক্ষ থেকে বিচ্যুত হওয়া আমাদের চলবে না। দ্রুত ভিত্তিতে প্রকৃত নিরপেক্ষ তদন্ত করে আইনমাফিক যাবতীয় ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে।
৯। রাষ্ট্রীয়/সামাজিকপ্রতিষ্ঠানের অন্যতম প্রধান একটি স্তম্ভ হিসাবে পিতৃতন্ত্রকে চিহ্নিত করে ফেটসু। লিঙ্গভিত্তিক নির্যাতন যার অন্যতম প্রধান উদাহরণ। এই সমস্যা সমাধানের প্রধান উপায় রাষ্ট্রীয়/প্রশাসনিক আইনের ছিটেফোঁটা পরিসর নয়, বরং তার বাইরের সামাজিক পরিসর, যেখানে সচেতন প্রগতিশীল মত, সদিচ্ছা, সমানুভূতি মুক্তভাবে প্রকাশিত হতে পারে বিচিত্র ও বহুরূপে। সম্মিলিত সামাজিক নিন্দা ও সংশোধনের উদ্যোগের অধীনে শাস্তির যন্ত্রণাও কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে সেক্ষেত্রে। তবে এর পাশাপাশি কিছু ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে, যারা মনে করে, যে কোনো অপরাধের সমাধান একমাত্র আইনি শাস্তিতে বা অন্যতম একটি সমাধান হল আইনি শাস্তি, তাই বর্তমান সমাজ বাস্তবতায় রাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক আইনি পথে শাস্তির প্রশ্নটিকেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সেজন্যই প্রশাসন/কর্তৃপক্ষের তরফে প্রকৃত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি প্রথম থেকেই ফেটসু করে এসেছে। একই সাথে অভিযোগকারিণী ও তাঁর পরিবারের সামাজিক সুরক্ষা/নিরাপত্তার পক্ষেও সওয়াল করেছে ফেটসু। এবং এক্ষেত্রে একজন ছাত্রী অভিযোগ করেছে (যা এখনও প্রমাণিত নয়), এই অবস্থায় তার আইনি যা যা অধিকার রয়েছে, সেগুলি পাওয়ার অধিকারও তার রয়েছে।
১০। তবে, কিছু কথা বলার রয়েছে, যা স্পষ্ট করা প্রয়োজন। এটা ঠিক যে, একটি ইস্তাহার কোনো আলোচনা ছাড়াই সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ করতে পারত। কিন্তু সময় নিয়ে সাধারণ সভা ছাড়া ইউনিয়ন সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীর প্রতিনিধিত্বকারী মত প্রকাশ করত কীভাবে? বিশেষত এমন অভিযোগের ঘটনা সাম্প্রতিককালে এভাবে আসেনি। ঘটনার পর অভিযোগকারিণীর পক্ষ থেকেও কোনো অভিযোগ ফেটসু-তে আসেনি। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বেশির ভাগ ছাত্রী-ছাত্রই অভিযোগটি নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করছিল। ফলে সর্বপ্রকার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ফেটসুর পদাধিকারীদের একটু সময় লাগল সাধারণ সভা ডাকতে। সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে Mid Sem চলাটাও আমাদের গতি বিলম্বিত করেছে। এর মধ্যে পর্যাপ্ত মত বিনিময় চলেছে ফেটসুর দীর্ঘ ইতিবাচক সংগ্রামী ঐতিহ্যের সাথে বর্তমান সমাজ-পরিস্থিতি, লিঙ্গবৈষম্য ও ঘটনাটির সম্পর্ক নিয়ে।
১১। ঘটনার প্রাথমিক বয়ান পাওয়া গেছে বিভিন্ন মিডিয়ার বিভিন্ন ধরনের রিপোর্টিং মারফত। যা ঘটনা সম্পর্কে প্রকৃত সত্য জানতে সাহায্য করার পরিবর্তে নানান বিভ্রান্তি ছড়াতে সাহায্য করেছে (মিডিয়ার deterministic reporting দেখে মনে হচ্ছে যেন তারা ঘটনার সময় উপস্থিত ছিল!)। অপর প্রাথমিক বয়ানটি পাওয়া গেছে অভিযোগকারিণীর পরিচিতা ছাত্রী-কৃত facebook পোস্ট থেকে।
১২।অভিযোগকারিণীর অভিযোগ যা সে VC, পুলিশ, তার বান্ধবীকে জানিয়েছে বা বিবৃত করেছে … তা প্রত্যক্ষভাবে আমরা জানতে পারিনি। অল্পখানিক অপেক্ষা করার পর ফেসবুক ইত্যাদিতে নাম করে বা না করে নজিরবিহীন তৎপরতায় এই ধারণা ব্যক্ত হতে থাকে যে, ফেটসু এবিষয়ে ইতিবাচক ভূমিকা নাও নিতে পারে বা নেবে না। প্রত্যক্ষভাবে জানার চেষ্টা করলে এই প্রক্রিয়া বেড়ে গিয়ে প্রকৃত ইতিবাচক ভূমিকা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে — এই আশঙ্কায় প্রত্যক্ষভাবে জানবার সম্ভাব্য সবরকম প্রয়াস নেওয়া যায়নি।
১৩। এমতাবস্থায় ফেটসু ঘটনার গভীরতা যথাসম্ভব অনুধাবন করে বিষয়টি নিয়ে সজাগ ও সহানুভূতিশীল অবস্থান রাখার চেষ্টা করেছে।
১৪। ফেটসু মনে করে প্রকৃত গণতন্ত্র অ-পিতৃতান্ত্রিক/লিঙ্গ-সহানুভূতিশীল/মানবী-অধিকার রক্ষাকারী হতে বাধ্য। তা না হলে সেটি গণতন্ত্রই নয়। একই সাথে প্রকৃত পিতৃতন্ত্র বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গিও এমন হতে পারে না, যা লিঙ্গ বৈষম্য ব্যতীত অন্য কোনো বৈষম্যকে প্রযুক্ত হতে সাহায্য করে ফেলল। তাই এই সিস্টেমের মধ্যে যথাসম্ভব সার্বিক ও সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি মূল্যায়ন ও সমাধানে ক্রমশ পৌঁছানোর চেষ্টা করাটাই ফেটসুর পক্ষে সমীচীন মনে হয়েছে, যাতে কারো সাথেই কোনো অন্যায় না হয়।
গঠনমূলক সমালোচনাকে প্ররোচনা হিসেবে দেখে ফেলার সম্ভাবনা ছিল ছাত্রী-ছাত্রদের বড়ো অংশের তরফে, যা আমরা অক্লান্তভাবে আটকেছি প্রকৃত ন্যায় বিচারের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ গড়ে তোলার জন্য। যদি কোনো প্ররোচনা থেকেও থাকে, আমরা চেষ্টা করেছি সেগুলিকেও গঠনমূলক সমালোচনা হিসাবে দেখতে।
১৫। ফেটসু যে সামাজিক বিচার পদ্ধতির কথা আগে বলল, তা তথাকথিত সংসদীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয়-প্রশাসনিক-কর্তৃপক্ষীয় বিচার পদ্ধতির চেয়ে উন্নত।
প্রথমত, এমন কোনো বিচার পদ্ধতি ও সিদ্ধান্তের জন্য আকাঙ্ক্ষা থাকা উচিত নয়, যা উপরিউক্ত রাষ্ট্রীয়-প্রশাসনিক-কর্তৃপক্ষীয় বিচার পদ্ধতির চেয়েও খারাপ। ‘শারীরিক লক্ষণ-চিহ্নে নারী’ এমন একজন ‘শারীরিক লক্ষণ-চিহ্নে পুরুষ’ এমন কয়েকজন সম্পর্কে অভিযোগ আনলেন ঘটনার বেশ কিছু সময় পর, যে অভিযোগের বয়ানের পক্ষের সাক্ষী তিনি নিজে এবং তাঁর বন্ধু (যারা ঘটনার অংশ) … অন্য যারা ঘটনায় জড়িত, তাদের সবার সাক্ষ্যই অন্যরকম (‘ধর্ষণের চেষ্টা’র অভিযোগের প্রেক্ষিতে )… এই পরিস্থিতিতে ‘ধর্ষণের চেষ্টা’র অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো রকম তদন্ত ছাড়াই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ওই কারণে করা যায় কি না তা নিয়ে ছাত্রীছাত্রদের বড়ো অংশের সন্দেহ রয়েছে।
দ্বিতীয়ত, কর্তৃপক্ষ-প্রশাসন দ্রুত তদন্ত করে শাস্তি দিক — এই দাবি তুলে তথাকথিত আইনি পদ্ধতিগুলোর ওপর নির্ভরতা তৈরি করব, নিজেরাও নির্ভর করব অথচ সেই প্রক্রিয়া তার নিজের মতো পিতৃতান্ত্রিক পদক্ষেপ নিলে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে জোর পড়বে …এই চিন্তা পদ্ধতিতে ন্যায়বিচার বিলম্বিতই হবে।
তৃতীয়ত, রাষ্ট্রীয়-প্রশাসনিক-কর্তৃপক্ষীয় বিচার পদ্ধতিও ( যার প্রহসনমূলক চরিত্র নিয়ে নানাসময় সংগত কারণেই মানুষ সরব হয়) এটুকু অন্তত বলে যে, নির্দোষ যেন শাস্তি না পায় এটা নিশ্চিত করে দোষীকে শাস্তি দেবার কথা। আমাদের চিন্তা যেন এটুকুর চেয়েও পিছিয়ে না পড়ে!
চতুর্থত, প্রাথমিক গ্রেপ্তারের প্রশ্ন। ৪৯৮এ ধারায় গৃহবধূর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক গ্রেপ্তার করা হয় যাতে প্রমাণ লোপ, বলপূর্বক অভিযোগ তুলে নেওয়া ইত্যাদি বহু সম্ভাবনা থাকে সেক্ষেত্রে অভিযোগকারিণীর ওপর। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ-পার্টি-প্রশাসন-ক্ষমতাবানরা তা করতে পারে হয়তো। অভিযুক্ত ছাত্রগুলিকে গ্রেপ্তার করে কি ওগুলো আটকানো যাবে?
পঞ্চমত, কামদুনি-গুজরাত ইত্যাদির প্রসঙ্গ এসেছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ সেভাবে আসেনি। কারণ বোঝার চেষ্টা চালাচ্ছি। যাই হোক, রাষ্ট্রীয় বা দলীয় বা ব্যক্তি কর্তৃক সংঘটিত ধর্ষণে আহত বা নিহত নারীদেহ জনসমক্ষে পড়ে রয়েছে— এরকম অবস্থায় ধর্ষণ আদৌ হয়েছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন বোধহয় ‘পশু’রও থাকে না। বর্তমান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর অভিযোগের বিষয়টিকে যারা ওপরের নৃশংস ঘটনাগুলির সাথে তুলনা করল, কেন করল, তা নিশ্চয়ই তারা ভবিষ্যতে ব্যাখ্যা করে ফেটসুকে ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দিতে সাহায্য করবে আশা করি।
ষষ্ঠত, এখনও পর্যন্ত ফেটসু যা যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সূত্রে জানতে পেরেছে, তাতে এক যুবক-যুবতী public space নয় এমন কোনো স্থানে স্বেচ্ছায় ব্যক্তিগত সখ্য চর্চা করছিল, যাতে কিছু ছাত্র হস্তক্ষেপ করে, যেটি অন্যায়। এজন্য আইন মতে শাস্তি প্রাপ্য হলে সেই শাস্তি সংশ্লিষ্ট ছাত্রদের পেতে হবে। ফেটসুর এই পর্যবেক্ষণ অবশ্য তার আগে আইন মতে সিদ্ধ হতে হবে। উল্লেখ্য, অল্প হলেও কিছু ছাত্র-ছাত্রীর এমন মতও থাকতে পারে, এরূপ সখ্য চর্চা (ব্যক্তিগত বা অনেকে মিলে) public space-এ করার অধিকার দিতে হবে। ফেটসুর যা বলার, সেক্ষেত্রে তারা এই নিয়ে আন্দোলন করুক বা অন্য কোনো উদ্যোগ নিক, আইন সিদ্ধ বা সমাজ সিদ্ধ হলে অবশ্যই তারা তা করতে পারে। এক্ষেত্রে আইন ফেটসুর জানা নেই। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আপামর ছাত্রী-ছাত্র কী মনে করে, তাও জানা হয়ে ওঠেনি।
সপ্তমত, আগের পয়েন্টের মতোই ফেটসুর পর্যবেক্ষণ এখনও অবধি বলছে, সেদিনের ঘটনায় অভিযোগকারিণীর বন্ধুটিকে মারা হয়েছে। বন্ধুটি আগে মেরেছিল — এই যুক্তিতেও হস্টেল ছাত্রদের এই শারীরিক নিগ্রহ বৈধ হয় না। এই অপরাধেরও আইন মাফিক শাস্তি হওয়া উচিত।
অষ্টমত, অভিযোগকারিণীর অভিযোগের নানা ব্যাখ্যা নানা মহল থেকে শোনা যাচ্ছে। সে ‘ধর্ষণের চেষ্টা’র অভিযোগ করেছে। মানসিক হয়রানি, দৈহিক নিগ্রহ, যৌন নিগ্রহ, ধর্ষণের চেষ্টা… প্রতিটির প্রেক্ষাপটে এক্ষেত্রে পিতৃতান্ত্রিক মতাদর্শ কাজ করে এটা নিশ্চিত, কিন্তু আইনের চোখে সম্ভবত এগুলির মূল্যায়ন, শাস্তি ও প্রতিকার আলাদা।
এক্ষেত্রে অভিযোগকারিণী যে ভয়ানক মানসিক হয়রানির শিকার হয়েছে, তা নিয়ে ফেটসুর এখনও পর্যন্ত কোনো সন্দেহ নেই। এটিও নিন্দা ও শাস্তিযোগ্য।
১৬। অভিযোগকারিণীর প্রত্যক্ষ বয়ান সরাসরি ফেটসু নিতে পারেনি, কারণটা আগেই বলা হয়েছে। কেননা এক্ষেত্রে তাঁর ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠে যেতে পারে, যখন কিনা অভিযুক্তদের আড়াল করার প্রকট ও প্রচ্ছন্ন অভিযোগ ফেটসু সম্পর্কে নানা মহল থেকে তোলার/তোলানোর চেষ্টা দেখা গেছে।
১৭। বিচারে যা দোষ ধরা পড়বে ও শাস্তি হবে, তার সম্পর্কেও আমাদের মূল্যায়ন ও বিচার প্রয়োজন। কারণ, কর্তৃপক্ষের শাস্তি শুধু দোষীকে কষ্টই দেবে … তাও সাময়িক কষ্ট … তারপর মুক্তি, আবার নোংরামো — তাকে বদলে দিতে পারবে না। আমাদের নিন্দার চোখ দোষীকে বদলাতে পারে। যতক্ষণ না দোষী নিজেকে বদলাচ্ছে, ততক্ষণ জেগে থাকতে পারে ওই চোখ।
১৮। তাছাড়া কর্তৃপক্ষ-প্রশাসন প্রকৃত দোষীকে বা দোষীদেরকে আড়াল করতে পারে বা দিতে পারে ‘গুরুপাপে লঘুদণ্ড’ বা দিতে পারে ‘লঘু পাপে গুরুদণ্ড’। এসব ঘটলে, ফেটসু শেষ পর্যন্ত লড়বে।
১৯। সেই কারণেই, ফেটসু দাবি তুলেছে ‘প্রকৃত ও নিরপেক্ষ’ তদন্তের। এই দাবির প্রতি শেষপর্যন্ত লড়াইয়ে গণতন্ত্রমনস্ক সবাইকে পাশে পাবার প্রত্যাশা ফেটসু রাখে।
২০। উপরিউক্ত সম্পূর্ণ পরিপ্রেক্ষিতের অধীনে ফেটসু কতকগুলি সতর্ক পর্যবেক্ষণ প্রকাশ্যে রাখতে চায় :
ক) অভিযোগ সম্পূর্ণত বা অংশত যদি রাষ্ট্রীয়-প্রশাসনিক-কর্তৃপক্ষীয় বিচার পদ্ধতিতে ভুল বা মিথ্যা প্রমাণিত হয় এবং তা মিলে যায় পাশাপাশি চলতে থাকা ব্যাপক সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীর গণমূল্যায়ন পদ্ধতির সাথে, সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র অভিযোগকারিণীকে শাস্তি বা নিন্দার মাধ্যমে হাত ধুয়ে ফেলা চলবে না। কেন এবং কীভাবে এই ভুল বা মিথ্যা অভিযোগের বয়ান সমাজ জুড়ে প্রচারিত হয়ে গেল বিদ্যুৎগতির তৎপরতায়, সেটির অনুসন্ধানের জন্যেও যথোপযুক্ত সদিচ্ছা ও তৎপরতা গণতন্ত্রমনস্ক সব মহলকেই নিতে হবে (সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী সহ)। অভিযোগকারিণী বা অভিযুক্তদের সকলের বা কারো কারো বয়ান বদলের কোনো বলপূর্বক বা অসাধু প্রচেষ্টা চলল কিনা, সে সম্পর্কে এখন থেকেই সক্রিয় ও সজাগ থাকতে হবে।
খ) স্বাধীন ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসেই নিয়মিত ঘটেছে অপরাধ চাপা দেবার এবং মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর অজস্র ঘটনা। যারা এসবে বরাবর যুক্ত থেকে এসেছে, তারা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে উপস্থিত নেই এমন নয়। যারা নিজেদেরকে গণতন্ত্রপ্রিয়, প্রগতিশীল, সমতামুখী মনে করে, তারা খেয়াল রাখবে, অনভিজ্ঞ ছাত্রী-ছাত্র-ব্যক্তি-গোষ্ঠী প্রভৃতি যেন এসবে বিভ্রান্ত ও ব্যবহৃত না হয়।
গ) কর্পোরেট বড়ো মিডিয়া দেশে দেশে আধুনিকোত্তর যুগে তার এজেন্ট দিয়ে ঘটনা তৈরি করে বেচে দেয়। তেমন কিছুর সম্ভাবনা যে কোনো ক্ষেত্রেই থাকতে পারে। তবে তার ওপর ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোনো অর্থেই নির্ভর করা উচিত না।
ফেটসুর সাধারণ সভাই ঠিক করে, করেছে, করবে ফেটসুর নির্ধারক সিদ্ধান্ত। ফেটসুর GB-তে FET-এর সকল ছাত্রী ও ছাত্র নিজ নিজ মত নিয়ে সক্রিয় ও সজাগ ভূমিকা পালন করুক।
কর্তৃপক্ষকে দেওয়া সময়সীমা গতকাল রাত বারোটায় শেষ। এবার বোধহয় শুরু অন্যকিছুর। চলো সেটা শুরু করি। সাধারণ সভায় এসো তোমার মত নিয়ে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বিকাল ৪টে থেকে।
* যেহেতু এখন পর্যন্ত কোনো সাধারণ সভা আয়োজন করা যায়নি, তাই এই পর্যবেক্ষণ ও সাধারণীকরণ কেবলমাত্র ফেটসু পদাধিকারীদের।
———-
ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি ছাত্রছাত্রী ইউনিয়নের বয়ান (সম্ভাব্য তারিখ : ১২ সেপ্টেম্বর)
গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ (যথাক্রমে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার) যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি ছাত্র সংসদের সাধারণ সভা অর্থাৎ FETSU GB-তে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ :
১) দ্রুত, নিরপেক্ষ ও আইন-মোতাবেক বিচার শুরু ও শেষ করতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় ছাত্রী-ছাত্রদের অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করতে হবে। ১৮/৯/১৪ [বৃহস্পতিবার-এর মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে এবং পুর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনতে হবে।
২) পুলিশ দিয়ে আন্দোলনকারী ছাত্রী-ছাত্রদের ওপর চাপ তৈরি করা বন্ধ করতে হবে ও ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।
৩) আইনি এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে অভিযোগকারিণীর সঙ্গে কথা বলতে যাওয়া ও আপত্তিকর জিজ্ঞাসাবাদের যে অভিযোগ উঠেছে, তা তদন্তের অধীন করতে হবে এবং তাদের ICC–র এই তদন্ত প্রক্রিয়ার বাইরে রাখতে হবে। আইনমাফিক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ও women’s rights activist-কে committee-র অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পদত্যাগের ফলে committee-তে যে শূন্যপদ তৈরি হয়েছে সেই পদ ছাত্রী/ছাত্র প্রতিনিধিদের দিয়ে পূরণ করতে হবে।
৪) অভিযোগকারিণীকে VC যে পরামর্শ দিয়েছেন তা আইনানুগ কি না, তা বিচার করতে হবে, প্রয়োজনে পরামর্শের জন্যে উপযুক্ত বিবৃতি দিতে হবে।
… … …
ক) GB-র নিজস্ব বোঝাবুঝির যে প্রক্রিয়া চলছে তাতে অভিযুক্তদের কিছু দোষ ইতিমধ্যেই চিহ্নিত। সন্দেহ বা অভিযোগের বশে করা নয় এই চিহ্নিতকরণ। কর্তৃপক্ষ ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ হয়ে রায়ে যদি ‘বেকসুর’ ঘোষণাও করে — ছাত্রী-ছাত্ররা তাদের নিজস্ব বোঝাবুঝির জোরে দোষীদের নিন্দার চোখে দেখবে, আরও প্রক্রিয়ার কথাও ভেবে দেখতে পারে সাধারণ সভা … মিলিতভাবে। এ নিন্দার চোখ আইনি শাস্তিসুলভ মেয়াদের মধ্যে ফুরোয় না, পরিবর্তন অবধি জারি থাকে। বোঝাবুঝি এখনও চালানোর প্রয়োজন বোধ করছে GB।
খ) রাষ্ট্র-প্রশাসন-কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পক্ষপাতিত্বের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা, আবার সেই কর্তৃপক্ষের কাছেই নিরপেক্ষ বিচারের দাবি তোলার জটিলতা ও সীমাবদ্ধতা (যার অংশ আমরাও)-কে ছাপিয়ে ঘটনাকে বোঝার নিজস্ব সমষ্টিগত প্রয়াস চালাতে হয়েছে ফেটসুকে, যা মানসিকতার সত্যিকারের পরিবর্তনের জন্যেও প্রয়োজন ছিল। এই প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট সব মহলকে পর্যাপ্তভাবে অবগত করার প্রয়াস বা সাধ্যের অভাব হয়েছে। এ কারণেই হয়তো অনেকেই ‘ফেটসুর অবস্থান’-কে সমালোচনা করছে। যদি তারা এই প্রক্রিয়ার কোনো গঠনমূলক সমালোচনা করে তা ফেটসু শিক্ষার্থীসুলভ মানসিকতা নিয়ে বিবেচনা করবে।
গ) ক্যাম্পাস ডিসিপ্লিন প্রসঙ্গে VC যা যা প্রস্তাব এনেছেন তা নিয়ে আগামী সোমবার ফেটসু GB আলোচনা করবে।
ছাত্র-ছাত্রী আন্দোলনে ফেটসুর ধারাবাহিক ইতিবাচক ঐতিহ্যের কথা জানা সত্ত্বেও, তার ওপর আস্থা রেখে কেন যে সমালোচকরাও এবিষয়ে সুবিধা-অসুবিধার কথা সেভাবে জানতে চাইল না, তা নিয়ে ফেটসু GB-র কিছু সংশয় রয়ে গেল।
Leave a Reply