১৯৯৮ সালের মে মাস থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হয়ে এসেছে মন্থন সাময়িকী। প্রথমে শুরু হয়েছিল মাসিক পত্রিকা হিসেবে। চারটি সংখ্যা বার হওয়ার পর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ১৯৯৮ একটি যুগ্ম সংখ্যা বেরোয়। তারপর দুটো মাসিক সংখ্যা বেরোনোর পর ১৯৯৯ সাল থেকে দ্বিমাসিক সময়কালে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে এই পত্রিকা।
পত্রিকার নামকরণ করা হয়েছিল ‘মন্থন’। সমাজ-সংস্কৃতির যে মন্থন জগৎসংসার জুড়ে চলতেই থাকে তাতে অংশগ্রহণ করাই ছিল পত্রিকার লক্ষ্য। এক সাধারণ মঙ্গলভাবনার প্রেক্ষিত থেকে জগৎসংসারের যাবতীয় বিষয়ে প্রবেশ করার চেষ্টা করা হয়েছে। স্থির করা নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর পড়াশুনা, চর্চা ও আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে পত্রিকার পরিকল্পনা মূর্ত হয়ে উঠেছে। সেই বিষয়কে ঘিরে একটা সংলাপ গড়ে তোলার জন্য নানান দিক থেকে আলো ফেলা প্রবন্ধ, সাক্ষাৎকার, ক্ষেত্রসমীক্ষা, তথ্যসমৃদ্ধ-দলিল ইত্যাদি স্থান পেয়েছে পত্রিকার পাতায়। এই কাজ করতে গিয়ে পত্রিকার কর্মী, লেখক এবং পাঠক সমাজের বৃত্তটি ক্রমান্বয়ে প্রসারিত হয়েছে; বাৎসরিক গ্রাহক-সংখ্যাও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে; ছোটো পত্রিকার ছোটো পরিসর থেকে যাত্রা শুরু হলেও প্রত্যক্ষ সংলাপ ও যোগাযোগের ক্ষেত্রটি হয়েছে অনেকখানি প্রসারিত। আর্থিক ক্ষেত্রে মন্থন প্রায় গোড়া থেকেই ছিল স্বনির্ভর। পত্রিকার কর্মী, পাঠক বা বন্ধুদের কাছ থেকে ডোনেশন নিয়ে পত্রিকা করার কথা কখনোই ভাবা হয়নি। প্রতি বছর এক পৃষ্ঠা জুড়ে আয়-ব্যয়ের যে হিসেব ছাপার অক্ষরে পেশ করা হয়ে এসেছে, দেখা গেছে অর্থের ঘাটতি পড়েনি। ২০১৪ সালের শেষ সংখ্যা বকেয়া রয়েছে বলে ২০১৪ সালের হিসেব পেশ করা গেল না।
কিন্তু ইদানীং কিছুকাল যাবৎ আমরা উপলব্ধি করছি যে জীবন্ত এক সংলাপের বাহক হিসেবে পত্রিকার সম্পাদনার কাজটি সাবলীলভাবে সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। কিছুদিন ধরেই সময় মতো পত্রিকা বের করা যাচ্ছে না। নিয়মিত পত্রিকা প্রকাশ একটা চাপ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আসলে চাপ বলতে এটাই যে পত্রিকা ঘিরে দরকারি কর্মকাণ্ডে গুরুত্ব সহকারে অংশ নেওয়া এবং পত্রিকার যে চরিত্র তাকে ঠিকঠাক বজায় রেখে নিয়মিত প্রকাশ করা অসুবিধাজনক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এমতাবস্থায় আমরা ২০১৫ সাল থেকে পত্রিকা প্রকাশ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
লেখক, পাঠক, গ্রাহক, সম্পাদনা-প্রকাশনা ও ছাপাখানার কর্মী সহ সমস্ত বন্ধুদের সঙ্গে গড়ে ওঠা আত্মীয়তার বন্ধন অটুট থাকুক।
Leave a Reply