• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

ধান চাষের সঙ্কট ২ : ‘মাঠের কাজে লেবারের আকাল, চাষিদের একতার অভাব দায়ী’

December 8, 2015 Editor SS Leave a Comment

 

  •  

শমীক সরকার, মাজদিয়া, মদনপুর, নদীয়া, ৬ ডিসেম্বর#
আমাদের গ্রামের মাঠটায় আমন ধানের চাষ প্রায় হয়ই না, কারণ এই মাঠটায় সব্জি ভালো হয়। সবাই সব্জি চাষ করে। সর্ষে, বেগুন … ফুলকপি, বাঁধাকপি, মূলো। সবকিছু। আমাদের মাজদিয়া গ্রামের সব্জি খুব বিখ্যাত, বিশেষত ফুলকপি।
খরার ধান, মানে বোরো ধানটা করে এখানে চাষিরা। অনেকে বলে তাউচুঙ ধান। আমাদের এখানে বলে না। মেদিনীপুরে শুনেছি। বোরোতে লাভ বেশি। মিনিকেট। আমনে যেমন স্বর্ণধানের একচেটিয়া।
বাসুদেব আমাদের বন্ধু, তিন চার বিঘে জমি আছে। তিন বছর হলো ওই বোরো ধানের চাষটুকু ও তুলে দিয়েছে জমিতে। দুই ভাই মিলে চাষ করে। বাসুদেব পড়াশুনো জানা। তাই মদনপুর পোস্ট অফিসে ঠিকা কর্মী হিসেবে কাজ করে বছরে বেশ কয়েক মাস। আর চাষের মরশুমে চাষ। ওর দাদাই ‘মাঠ করে’, মানে মাঠ দেখাশোনা করে।

চাষে লেবারের আকাল, দায়ী একশ’ দিনের কাজ

বাসুদেব বলল, আমাদের গ্রামে লেবারের আকালের কথা। এখন সাঁতরা পাড়ায় (বাগদী পাড়া) জনা সাত আট, আর বিলের ধারের জেলে পাড়ার পাঁচ ছয় জন, আর কখনও কখনও ভজদের বাড়ীর ওখানের (পরামাণিক) চার পাঁচজন — এছাড়া আর লেবার নেই। আর একটা কথা বলল, এই যারা লেবার খাটে এখনো — তাদের সবারই বয়স চল্লিশের ওপারে। কিন্তু এদের ছেলেরা কেউ লেবার খাটে না। আর যাই করুক, মাঠে যাবে না। বাসুর কথায়, আর দশ বছর বাদেই তো এই লেবাররা আর পারবে না মাঠে খাটতে — তখন গোটা মাজদিয়া গ্রামে মাঠে খাটার আর কোনো লোক পাওয়া যাবে না।
এখন আমাদের মাঠে রোজ ১৭৫ টাকা। চাষি লেবারকে চারঘন্টা ভালো করে খাটাবেই। কোনো দিন তার চেয়ে একটু বেশিও হয়। যদি মাঠে খাটতে গিয়ে বৃষ্টি নেমে যায়, সেদিন আর কাজ হবে না। চাষি বলে, যা আজ আর কিছু দিলাম না। পরদিন আসিস, অ্যাডজাস্ট করে দেবো। লেবাররা মেনে নেয়। যাদের প্রতিদিন নগদ টাকার দরকার হয়, তারাই মাঠে খাটে। একদিন যদি চাষি একটা কিছু বলে, তাহলে পরদিন আসবে না। হয়ত ধান মাঠে পড়ে থাকবে কি এইরকম ব্যাপার। চাষির তখন মাথায় হাত।
একশ’ দিনের কাজ আমাদের গ্রামের লেবার সমস্যার মূলে — এরকমই মনে করে বাসুদেব। আমাদের গ্রামে একশ’ দিনের কাজ হয়েছে এবারে ৫৬-৫৭ দিন। বাসু যেহেতু লেখাপড়া জানা, তাই আমাদের গ্রামের একশ’ দিনের কাজ যে মোটামুটি চালায় (পঞ্চায়েত থেকে), সেই মিঠু বলেছে, যা তুই একটু সুপারভাইজ করে দে। কাগজ কলমের কাজ তো। বাসুদেব যেদিন পোস্ট অফিসের কাজ থাকে, সেদিন সকালে ঘন্টা তিনেক থাকে একশ’ দিনের কাজ দেখভালে। আর অন্যদিন হলে পুরো দিন। একশ’ দিনের কাজের মজুরি ১৭৪ টাকা রোজ। তবে সঙ্গে সঙ্গে টাকা পাওয়া যায় না। টাকা পেতে পেতে কয়েক মাসও লেগে যেতে পারে। তবু লোকে এই কাজে আসে, কারণ খাটতে কম হয়। অনেকে বাড়ির মেয়েদের পাঠিয়ে দেয় একশ’ দিনের কাজে। বাসুদেব সুপারভাইজার, তার পর্যবেক্ষণ — বিশ তিরিশটা মেয়ে, কাজ তো করে কচু, তিন ঘন্টা গল্পগুজব করে নাম তুলে চলে যায়। অনেকে আবার বাসুর বাড়ি এসে সকালে বলে যায়, আজকে আমার একটু অসুবিধা আছে, আমার নামটা তুলে দিও। চেনাজানার মধ্যে, না করা যায় না। তাছাড়া, এখন কাজও বেশি নেই একশ’ দিনের কাজে — জঙ্গল টঙ্গল পরিষ্কার করা এইসব।

চাষিদের একতা নেই

বাসুদেব বলল, চাষির সঙ্কট ভীষণ, তবে তার জন্য দায়ী শুধু সরকার নয়। চাষিরাও। কেন? কারণ চাষিদের একতা নেই। নিজের মাঠে কী তেল দিল, সে সেটা পাশের চাষিকে বলে না অনেকসময়। এই যে মদনপুর বাজারটা (সব্জির আড়ত), এটা তো চাষিরাই তৈরি করিয়েছিল, চাষিদের জন্য। সেটা এখন দখল করে নিয়েছে ফড়েরা। শুধু মাজদিয়ার চাষিরা মারকুটে বলে কয়েক হাত জায়গা নিজেদের জন্য রাখতে পেরেছে। বাকি জায়গায় ফড়ে ব্যবসায়ীরা সব শেড বানিয়ে ফেলেছে। ওই মাজদিয়ার চাষিদের জন্য যে জায়গাটুকু আছে, সেখানেই এসে মাঝে মধ্যে অন্য জায়গার চাষিরাও বসে, আঁটলে কুমারপুর, শান্তিনগর, আলাইপুর …। মাজদিয়ার চাষিরা অনেক সময় আপত্তি জানায়।
একবার ফড়ে আর ব্যবসায়ীরা মদনপুর সব্জির আড়ত-এ বনধ্‌ ডেকেছিল। সর্বাত্মক বনধ্‌। আর চাষিরা বনধ্‌ ডাকলে অন্য চাষি ভাবে, আজ তাহলে বেশি দাম পাওয়া যাবে, আজ নিয়ে যাই।
এবারে আমাদের মাঠে বোরো ধানের চাষও খুব কমে গেছে। অনেকেই কেবল ঘরের খোরাকির ধানটাই করেছে। সেই খোরাকির ধানটাও বাজার থেকে কিনলে ভালো হয়। কিন্তু ধানটাও কিনে খাবো — এই মানসিকতা থেকেই ঘরের ধানটুকু করছে চাষি — এরকমই জানালো বাসুদেব।
আমাদের গ্রামেরই সরকারি করণিক ও চাষি আমাদের বন্ধু বিপুল ঘরে বোরো ধান তুলে ফেলে রেখেছে। দাম নেই একদম। বস্তায় (ষাট কেজি) সাতশো টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না বলে বিক্রিই করছে না। এরকমও অনেকে করছে।
আঁটলে কুমারপুরের ওদিকে আমন ধানের চাষ হয় খুব। তবুও প্রায় হাজার বিঘের মাঠে কয়েকশো বিঘেতে এবারে দেখলাম কুমড়ো শশা এইসব। বন্ধুবর চাষি আশুর আঁটলে কুমারপুরে জমি। জানালো, শীতটা এবারে দেরি করে পড়ছে। তাই সবজিরও দাম পাওয়া যাচ্ছে না। এখনও বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় লাউ, কুমরো, শশা প্রভৃতি যেগুলো শীতের ঠিক আগের সবজি, সেগুলো চেপে চেপে ফলছে না, একদিনে প্রচুর বেড়ে যাচ্ছে। যে বাড়টা সাতদিনে হবার কথা, সেটা হচ্ছে একদিনে। ফলে বাজারে প্রচুর প্রাক-শীতের সবজি। দাম পড়ে গেছে একেবারে। লাউ বিক্রি হচ্ছে দু-টাকা পিস-এ।

কৃষি ও গ্রাম চাষবাস, চাষি, চাষের সঙ্কট, ধান, ধান চাষ, মদনপুর, মাজদিয়া, সবজি চাষ

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in