• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

জিয়াগঞ্জের ভাড়াও যা, শান্তিপুরের ভাড়াও তাই। সরকারি বাসে এই নিয়ম করল কারা?

October 28, 2020 admin Leave a Comment

পর্ণব। শান্তিপুর। ২৭ অক্টোবর, ২০২০।#

৩৪ নং জাতীয় সড়ক ধরে কলকাতার ধর্মতলা থেকে নদিয়ার শান্তিপুর ঠিক একশ কিলোমিটার রাস্তা। উত্তরে ডালখোলা থেকে দক্ষিণে বকখালি অবধি এই রাস্তা বর্তমানে ১২ নম্বর হিসেবে চিহ্নিত হলেও লোকমুখে এই রাস্তা আজো ৩৪ নম্বর। কার্যত রেল বাদে গণপরিবহনের জন্য শান্তিপুর থেকে কলকাতা যেতে আর কোনো বিকল্প নেই। রেল বন্ধ ২২ মার্চ থেকে। আমরা যারা মফঃস্বল-গ্রাম থেকে রুজি রুটি শিক্ষা স্বাস্থ্যের নিত্যপ্রয়োজনে বাধ্যত রাজধানীতে যাতায়াত করি, গত সাত মাস সাতদিন ধরে সে রাস্তা কেড়ে নিয়ে সরকার আমাদের ফেলে দিয়েছে অথৈ জলে। যাদের সাধ্য আছে, তারা পাঁচ ছয় গুণ বেশি ভাড়ায় গাড়ি নিয়ে কলকাতা গেছে চিকিৎসা করতে, যাদের উপায় নেই তারা এলাকার হাতুড়ে ডাক্তার, হোমিওপ্যাথি কিম্বা রোগ চেপে রেখে যদ্দিন সম্ভব কাটিয়ে দিয়েছে। আনলক পর্বে একে একে খুলে দেওয়া হয়েছে প্রায় সবকিছুই। দাদা-বৌদির বিরিয়ানি খেতে লম্বা লাইন, নাভিশ্বাস ওঠা দামে বাজার করতে গা ঘেঁষাঘেষি ভিড়, সকালের পাইকারি বাজারের হল্লা, বিশ্বকর্মা, দুর্গা পুজোতেই নয় শুধু, মদের কাউন্টারে রোজকার ভিড় দেখলে করোনা কেন যেকোনো সংক্রামক রোগই লজ্জা পাবে। কলকাতার হাট করতে পারেনি বলে কয়েক হাজার তাঁতি, ছোট মহাজন অন্য ধান্দা ধরেছে। ব্যবসায়ীরা বেশি দামে খদ্দেরের গাল শুনতে শুনতে দোকান চালিয়েছে। শুধু লোকাল ট্রেন বন্ধ রাখা হয়েছে। রেল ইয়ার্ডের ভাঙা পাঁচিল সারানো হয়েছে। স্টেশনে ঢোকা বেরনোর রাস্তা নিশ্ছিদ্র করা হয়েছে। এবং প্রতি ঘন্টায় সব লাইনেই রেল চলেছে। ফাঁকা কামরা কিম্বা বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত কয়েকজনকে নিয়ে। এই সমস্ত অভিজ্ঞতা আমার সাইকেলে সাত আট মাস পথ চলতে চলতে। আজ সাইকেল টা সারাতে কলকাতায় রেখে বাসে শান্তিপুর ফেরার যে অভিজ্ঞতা, তা না হলে বোঝাই যেত না, গণমানুষের কথা বলা ও শোনার জন্য কেউ কোত্থাও নেই।

এখানে করোনা সংক্রমণের ভয় নেই?

বেলা আড়াইটে। দুর্গাপুজো সেরে বাড়ি ফিরছেন ঢাকীরা, ব্যবসায়ী, আত্মীয় কুটুমরা। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের অফিস কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন। কাউন্টার বন্ধ। ভেতর থেকে কখনো সিউড়িগামী বাস ছেড়ে যাওয়ার হাঁক উঠছে। কখনো প্রচার হচ্ছে তিনটে চল্লিশের জিয়াগঞ্জের পরে আর কোনো মুর্শিদাবাদগামী বাস নেই। মাথার উপর হেমন্তের শুকনো রোদ্দুর। চত্বরে পানীয় জলের আউটলেট চোখে পড়ে না। পড়লেও ভাঙাচোরা মেসিন। আর দোকানে দোকানে সারি সারি কেনা জলের বোতল। পেটির পর পেটি উবে যাচ্ছে নিমেষে।  শিলিগুড়ি, মালদা, দিনাজপুর, বহরমপুর নানা জায়গার বাস ধরার আলাদা আলাদা কাউন্টার আছে। লাইনে অপেক্ষমান কারো কাছেই ঠিক দিশা পাবার জো নেই। কেননা কেউ কাউকে সুবিধে করে দিতে চায় না। যদি একটুর জন্য টিকিটটা না পাওয়া যায়। যদি পছন্দসই সিটটা হাতছাড়া হয়ে যায়। তার মাঝে কেউ কেউ হঠাৎ হঠাৎ পকেট সামলে রাখার চেতাবনী দিয়ে যাচ্ছে। দৈহিক বা সামাজিক কোনো দূরত্ব রাখাই কার্যত অসম্ভব। তিনটের দিকে কাউন্টারের পর্দা উঠল। তিনটে চল্লিশে জিয়াগঞ্জের বাস। আমার সামনের লোক যাবেন কৃষ্ণনগর। পেছনের জন ধুবুলিয়া। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে জানি রাতের দিকে অনেক বাসই রানাঘাট থেকে ঘুরিয়ে বাদকুল্লার ভেতর দিয়ে কৃষ্ণনগর পৌঁছায়। একশ টাকার নোট হাতে নিয়ে ভাবছি কৃষ্ণনগর অবধি কেটে রাখি টিকিট। ওখান থেকে নাহয় কোনোভাবে শান্তিপুরে ফেরা যাবে। কাউন্টারের কাছাকাছি পৌঁছতেই শুনতে পেলাম, যেখানেই যাবেন টিকিটের দাম একশ ষাট টাকা। প্রায় এক ঘন্টা লাইনে দাঁড়ানোর পর কেন এত ভাড়া, সস্তায় কিছু আছে কিনা খোঁজ করার ফুরসৎ কোথায়? তাছাড়া এত বেলায় প্রাইভেট বাস পাওয়া যায় না। যারা এই আনলক পর্বে বাসে যাতায়াত করছেন, তাদের থেকে জেনেছি, সিট নিতে গেলে কলকাতা বহরমপুর রুটের প্রাইভেট বাসে শান্তিপুর অবধি ভাড়া মিনিমাম আড়াইশো টাকা। কেউ কেউ সময় সুযোগ বুঝে পাঁচশও নেয়। তাই সরকারি বাসের লাইনে দাঁড়ানো। কী করব ভাবতে ভাবতেই টিকিট কেনা সারা। সিট নম্বর তিরিশ। দুজনের মাঝখানে। আমার গতরাতের ঘুম বাকি। টিকিটের উলটো পিঠে বাসের নাম্বার আর টিকিটের দাম লেখা। কয়েকজন একটু জোর গলায় হয়তো জানতে চাইছে এত ভাড়া কেন। পেছনে কোনো পয়সাওলা যাত্রী কিম্বা ভেতরের টিকিট বিক্রেতার তাড়া খেয়ে সে আর তুলতে পারছে না প্রশ্নটা। টিকিটটা হাতে পেয়ে যাওয়ার পর এবার আমি জানতে গেলাম, আশি টাকার ভাড়া একশ ষাট টাকা কেন? বলল, জিয়াগঞ্জের এম এল এ’র অর্ডার। বললুম, এনবিএসটিসি কি জিয়াগঞ্জের এম এল এর নির্দেশে চলে নাকি? উত্তর এল, আমরা কনট্রাক্টে কাজ করি। ভেতরে গিয়ে জিগ্যেস করুন। ভেতরে গিয়ে বললাম, টিকিটে লিখে দিন, কৃষ্ণনগর অবধি। ওরা কিছুতেই রাজি হলেন না। ওনাদের বক্তব্য, এটাই ওপরের নির্দেশ। জিয়াগঞ্জের বাসে উঠলে যেখানেই যাবেন একশ ষাট টাকা। অর্থাৎ জিয়াগঞ্জ অবধি পুরো ভাড়া। আমি বললাম, অফিসারের সাথে কথা বলব, টিকিট ফেরৎ নিন। ওরা সাথে সাথে লাইনের পরের জনকে টিকিটটা বেচে দিয়ে আমায় একশ ষাট টাকা ফেরৎ দিয়ে দিল। বলল, অফিসারের সাথে কথা বললে উল্টোডাঙ্গা চলে যান। খানেক হল্লা করার পর দুম করে কাউন্টার বন্ধ করে দিল।

https://songbadmanthan.com/wp-content/uploads/2020/10/video-1603903113.mp4

কোথাও কোনো আধিকারিকের দেখা পেলাম না। ইন্টারনেট ঘেঁটে এসপ্ল্যানেড আর উল্টোডাঙা- দুই জায়গার দুই আধিকারিকের ফোন নম্বর পেলাম। প্রায় এক কুড়ি বার চেষ্টা করেও কোনো নাম্বারে কাউকে পেলাম না। ফোন বেজেই গেল। আমার চেঁচামেচিতে ততক্ষণে অনেকে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। অনেকে নীরব। সকলেই এর একটা বিচার চান। আমি বললাম, ওদের দপ্তরে চিঠি পাঠাব বা মেইল করব। আপনারা বলুন, আমি রেকর্ড করি। কেউ বললেন, আমি গতকাল এসেছি এই বাসে কৃষ্ণনগর থেকে, নব্বই টাকা নিয়েছে, আজ একশ ষাট। কেউ বললেন, আমার পলাশি অবধি একশ তিরিশের জায়গায় একশ ষাট নিয়েছে। কেউ বললেন, সবাই টিকিট না কেটেই বাসে চড়ুন। তারপর টিকিট চাইতে এলে ধোলাই দিয়ে নামিয়ে দিতে হবে বাস থেকে। কেউ বললেন, ট্রেন বন্ধ না করলে কি আমরা এত খরচা করে বাসে যেতাম! এটা সরকারি বাস নাকি, চোরের বাস…। কাউন্টার হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়ায় ফ্যাসাদে পড়ে গেছেন অনেকে। সব সিট কিন্তু তখনো বুকড হয়নি। এই সময় আচমকা একটি ঘোষণা হল, তিনটে পঁচিশে, যারা রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, ধুবুলিয়া, সোনাতলা যাবেন, ১০৮৩ নম্বর বাসে চেপে পড়ুন, বাসেই টিকিট হবে। যারা জিয়াগঞ্জের বাসে কৃষ্ণনগর অবধি টিকিট কেটে ফেলেছিলেন, তারা তো রেগে কাঁই। বাকিরা দৌড়াদৌড়ি করছেন ১০৮৩ খুঁজতে। একটা বাস ছেড়ে যাচ্ছে, নাম্বার প্লেটে ১০৮৩, সামনের বোর্ডে লেখা, ‘কলকাতা-দীঘা, ভায়া কাঁথি’। কন্ডাকটারকে জিগ্যেস করলাম, শান্তিপুর যাবে? বলল, হ্যাঁ। জানলার ধার চেয়ে একদম পেছনে একটা ভাঙা সিট পেলাম। সিটে বসার তিন মিনিটের মধ্যে বাস ছেড়ে দিল ছাব্বিশ জন কে নিয়ে। কন্ডাকটরকে ভাড়ার কথা জিগ্যেস করতে বললেন, ‘শান্তিপুর ভাড়া পাঁচশ টাকা। সরকারি বাসে কি আপনার থেকে বেশি নেবে? যা ভাড়া তা’ই নেবে।’ জিয়াগঞ্জের বাসের অভিজ্ঞতা বলায় উনি বললেন, ওটা ওদের স্টাইল। পরে বুঝিয়ে বললেন, ওদের নিয়ম হল, আগে জিয়াগঞ্জের প্যাসেঞ্জার নেবে। তারপর অন্য। বললাম, তালে কি ওই বাসে জিয়াগঞ্জ ছাড়া আর কোনো স্টপেজ নেই? অন্য জায়গার টিকিট বেচছে কেন ওরা? মুখ ঘুরিয়ে নিলেন কন্ডাকটর বাবু।

দমদম এয়ারপোর্ট ছাড়ার পর, কন্ডাকটর বাসের সামনের বোর্ডটা ঘুরিয়ে দিলেন। যে পিঠে লেখা ছিল, দীঘা-সোনাতলা। বুঝলাম, এটা এদের স্টাইল। আর হ্যাঁ, এই বাসে ভাড়া নিল আশি টাকাই।

শক্তি এন বি এস টি সি, ট্রেন বন্ধ, বেসরকারি বাস

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in