শমিত। শান্তিপুর। ২৭ অগাস্ট, ২০২০।#
অতিমারীর সময় যখন সরকার দেশের সমস্ত নাগরিকদের ঘরে থাকার নিদান দিচ্ছে প্রতিদিন, তখন দেশের কোথাও না কোথাও প্রতি ঘন্টায় ২৫ জন করে ঘর ছাড়া হচ্ছেন। উচ্ছেদ ও ঘরভাঙা হচ্ছে যথাক্রমে ৫২০ জন ও ১১০ টি। মহামারীর সময় জোর করে উচ্ছেদ হয়েছে মার্চ থেকে জুলাই মাসে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। ২০১৭-১৯ সালে বাড়ি ভাঙা হয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার। এই সময় পর্বে অর্থাৎ তিন বছরে প্রায় ছ’লাখ মানুষকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। বলা বাহুল্য দেশের গরীব, প্রান্তিক স্তরের মানুষ এই উচ্ছেদের শিকার। এইচ. এল. আর. এন. অর্থাৎ হাউসিং এন্ড ল্যান্ড রাইটস নেটওয়ার্ক এর রিপোর্টের ভিত্তিতে এই খবর জানা যাচ্ছে। এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির ‘ফোর্সড এভিকশন ইন ইন্ডিয়া : অ্যান আনরিলেটিং ন্যাশনাল ক্রাইসিস’ নামে একটি রিপোর্টে যে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে তাতে জানা গেছে প্রান্তিক বর্গের প্রায় ২৫ জন মানুষ কোথাও না কোথাও প্রতি ঘন্টায় ছাদ হারাচ্ছেন। সারা বছর ধরেই প্রতিটি রাজ্যেই জোর করে উচ্ছেদ কর্মসূচী চলে। বিগত তিন বছরে বিভিন্ন রাজ্য প্রশাসন গুড়িয়ে দিয়েছে লক্ষাধিক মানুষের ঘরবাড়ি। নদীর সৌন্দর্যায়ন, পার্ক-পুকুর-পার্কিং করার অছিলায় এই সমস্ত অমানবিক উচ্ছেদ পর্ব চালায় সরকার। এলাহাবাদ, মুম্বাই হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে লকডাউন কালপর্বে উচ্ছেদ অভিযান চলেছে রাজ্য সরকার, পৌর প্রশাসনের উদ্যোগে। ওড়িশার কন্দ আদিবাসীদের ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়েছে সেখানকার বনদপ্তর। তেলেঙ্গানার সিদ্দিপেটে দলিত কৃষকদের বাসস্থান রাতের অন্ধকারে ভেঙে দিয়েছে প্রশাসন। প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছে রাজ্য প্রশাসন।
শান্তিপুরে স্টেশন সংলগ্ন লাইন পাড়ায় ভয় দেখিয়ে বেশ কিছু পরিবারের ঘরবাড়ি ভেঙে সরিয়ে দিয়েছে রেল পুলিশ। লকডাউনের সময়ে ‘স্টে অ্যাট হোম’ এর হাস্যকর প্রতিফলন ঘটেছে এই সমস্ত উচ্ছেদ কর্মসূচীতে। সরকারের উচ্ছেদ কর্মসূচীতে কয়েক লক্ষ মানুষ সামান্য সুরক্ষা থেকে বঞ্ছিত- এই তথ্য উঠে এসেছে এইচ. এল. আর. এন. -এর রিপোর্টে।
Leave a Reply