সংবাদমন্থন প্রতিবেদন। কলকাতা।
খবরে প্রকাশ, গত তিনদিন ধরে পঞ্জাবের কৃষকরা ফের দিল্লিতে ঢোকার চেষ্টা করছে। তাদের আটকাতে রাস্তায় এবং সেতুতে কংক্রিটের ব্যারিকেড দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। এছাড়া হরিয়ানা পুলিশ দ্রোন থেকে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছে এবং জলকামান ছুঁড়েছে। তাতে কৃষকরা পিছু হটেনি। ব্যারিকেড গুলির পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। হরিয়ানার কৃষকরাও পঞ্জাবের কৃষকদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে। কিন্তু কেন বছর দুয়েক আগের প্রায় এক বছরব্যাপী দিল্লি অভিযানের পর ফের কৃষকরা দিল্লির উপকন্ঠে দাঁড়িয়ে?
২০২১ সালের নভেম্বর মাসে যখন প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তিনটি কৃষকবিরোধী কৃষিবিল, যা পার্লামেন্টে পাস হয়েছিল, তা উঠে যাবে — সেই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে কৃষক অবরোধ উঠে যায়। তখন এই তিনটি আইন প্রত্যাহারের পাশাপাশি আরো কয়েকটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কেন্দ্র সরকার। তার মধ্যে ছিল, কৃষকদের উৎপাদনের ‘ন্যূনতম সহায়ক মূল্য’ নিয়ে একটি আইন করা হবে, এবং আপাতত তার লক্ষ্যে একটি কমিটি বানানো হচ্ছে কেন্দ্র সরকার, রাজ্য সরকার, কৃষক সংগঠন এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে। উল্লেখ্য, কৃষকদের দাবি ছিল, বর্তমানে সরকার যে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেয়, তা যথেষ্ট কম। তা অনেকটা বাড়াতে হবে। কিছু ফসলের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য কিছুটা বাড়ানো হয়েছে বটে, কিন্তু ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে কোনও আইন দুই বছরে করে উঠতে পারেনি সরকার। এবং এই সংসদের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। সরকারের মেয়াদও শেষ হতে চলেছে আর কয়েক মাসের মধ্যেই।
এছাড়া কৃষকরা দাবি করছে, তাদের জন্য পেনশন চালু করতে হবে; তাদের ঋণ প্রত্যাহার করতে হবে; যারা নকল বীজ, কীটনাশক ও সার বানায়, তাদের শাস্তি দিতে হবে। তাদের আরও দাবি, বর্তমান একশ’ দিনের কাজ বাড়িয়ে বছরে দু’শ দিনের কাজে পরিণত করতে হবে এবং অন্যান্য সমস্ত দেশের থেকে কৃষিপণ্যের নিঃশুল্ক আমদানির যে চুক্তি (ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট), সেগুলি সমস্ত বাতিল করতে হবে।
এইবারের কৃষক অভিযানে সংযুক্ত কৃষক মোর্চা (অরাজনৈতিক) এবং কিষান মজদুর সংঘর্ষ কমিটি মুখ্য সংগঠকের ভূমিকায় রয়েছে। উল্লেখ্য, দুবছর আগের কৃষক অভিযানও প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলির কোনও প্রতিনিধিকে তাদের মূল মঞ্চগুলিতে উঠতে দেয়নি। তাদের জন্য বরাদ্দ করেছিল অন্য একটি মঞ্চ। কিন্তু ওই আন্দোলনের ঐতিহাসিক বিজয়ের পর আন্দোলনের কিছু নেতৃত্ব ক্ষমতার পরিসরের নানা দলের কাছাকাছি চলে আসে বা সেগুলিতে সামিল হয়ে যায়।
Leave a Reply