মুর্শিদাবাদে NIA অভিযান ও তথ্যানুসন্ধান
সামিম মনসুর। মুর্শিদাবাদ। ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০।#
মুর্শিদাবাদের যে ৯ জনকে NIA আল-কায়দার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে এরেস্ট করেছে তাদের বাড়িতে গত ২৪ শে সেপ্টেম্বর APDR সহ AIPF, NRC বিরোধী সংহতি, আজাদ হিন্দ ফেডারেশন, AISA, পিপলস রিভিউ এর সাংবাদিক এর তথ্যানুসন্ধান করতে পৌঁছায়।
রাণীনগর থানার অন্তর্গত আবু সুফিয়ানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় মিডিয়া ও NIA এর সন্ত্রাসে ভীত পরিবার বাড়ির দরজায় তালা লাগিয়ে বাড়িতে আতঙ্কের জীবন কাটাচ্ছেন। পাড়ার লোকেরাও আতঙ্কিত, মিডিয়ার মিথ্যা প্রচারের সন্ত্রাসে। তথ্যানুসন্ধানে ১১ জনের দলকে প্রথমে পাড়ার লোকদের বেশ কিছুক্ষন ধরে বোঝাতে হয় আমরা সত্য ঘটনা জানতে এসেছি। আশেপাশের মানুষ ধীরে ধীরে মুখ খুললে তারা জানান– আবু সুফিয়ান পেশায় দর্জি। বাবা ছিলেন স্কুল শিক্ষক। পৈতৃক ভিটাতেই তারা পরিবারসহ থাকেন। আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার জন্য আবু সুফিয়ান এর ১৫ বছরের ছেলেকে পড়াশোনা বন্ধ করে কাঠের কাজ শিখতে হচ্ছে। এলাকায় শান্ত, ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি আবু সুফিয়ান তেমন একটা বাইরে বেরোতেন না। NIA ও মিডিয়া দাবি করেছে বাড়িতে সুড়ঙ্গ ছিল। খোঁজ নিয়ে জানা গেল ওটা একটি স্নানাগার, এমন স্নানাগার ওই এলাকায় ৭২ টি আছে। আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার জন্য আবু সুফিয়ান মিস্ত্রি ছাড়াই নিজের শ্রমে সেই গোসলখানা বানিয়েছিলেন। টিনের পাত দিয়ে চার দেওয়াল ঘেরা হয়েছিল, ঢালাই বাকি ছিল। তাঁরা তিন ভাই। তিনি সবার ছোটো। চারটি নাবালক পুত্র সন্তান, বড় ওয়াসিম আক্রম। আবু সুফিয়ানের মেজ ভাই জিন্নাতুল ইসলাম পানিপিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক, সিপিআই(এম)-এর সঙ্গে যুক্ত। শুক্রবার (১৮/০৯) রাত শেষে শনিবার রাত আড়াইটা নাগাদ বাইরে থেকে দরজা ধাক্কার আওয়াজ পেয়ে ঘুম ভেঙে গেলে জানতে চান, কে এসেছে। পুলিশ শুনে দরজা খুলে দিয়েছিলেন। হানাদাররা দু’চার থাপ্পর লাগিয়ে ভাই আবুর সম্বন্ধে জানতে চায়, হাতের চলভাষ যন্ত্রে ছবি দেখায়। তিনি নিজের ভাইয়ের ছবি দেখে সম্মতি জানান। ইতিমধ্যে পাঁচিল টপকে পুলিশ ঢুকে পড়ে পাশের সুফিয়ানের বাড়ি। জানালা দিয়ে নিদ্রিত ওয়াসিমকে বাইরে থেকে ছাতার বাঁট জাতীয় কিছু দিয়ে খোঁচা মেরে জাগায়। সেই সঙ্গে দরজায় লাথি। ঘরে ঢুকেই নাবালক ছেলেটিকে চড়, থাপ্পর মারতে থাকে। সুফিয়ানের স্ত্রী নুরুন্নেসা ভয় পেয়ে লুকিয়ে পড়েন এবং আবু নিজে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু চারিদিকে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান। চড়, থাপ্পর ছাড়াও, ডামাট (কোদালের কাঠের হাতল) দিয়ে হাতে-পায়ের আঙ্গুলে খুব মারা হয়। মেজ ছেলের বয়স দশ। তারও চুলের মুঠি ধরেছিল পুলিশ। ওয়াসিমের কথা মোতাবেক জনা ৩০/৪০ পুলিশ ছিল, যাদের মধ্যে এক জন মহিলা, দু’জন সিভিক ভলেন্টিয়ার, বাকিরা সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর জওয়ান এবং সাদা পোশাকের। তবে কারও গায়ে সে বা তার মেজ আব্বা জিন্নাতুলের চোখে পড়েনি, কারও পোশাকে নাম, পদ-মর্যাদা লেখা আছে কিনা। সুফিয়ানকে গাড়িতে তুলে জলঙ্গিতে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর শিবিরে নিয়ে যায়। জিন্নাতুলকেও সঙ্গে যেতে বাধ্য করে। সকাল হলে তাঁকে বাস ভাড়া দিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলে। তার আগে কিছু কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এখন তিনি ও পরিবারের লোকেরা বলছেন, আবু কোথায় আছেন, কেমন আছেন সেটা জানতে পারছেন না। কিছু জিনিস বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়েছে, কিন্তু তার কোন তালিকা দেওয়া হয়নি এবং তাঁরাও জানেন না কি কি নিয়ে গিয়েছে।
ওই গ্রামেই একটু দূরে ২২/২৩ বছরের যুবক মুর্শিদ হাসানের বাড়ি। ছোট্ট খুপরি মতো, পাটকাঠির বেড়া। বাবা-মা আছেন। বাবা কোন কায়িক শ্রম করতে পারেন না। ছেলে কেরলে কাজ করে টাকা পাঠালে তাঁরা বেঁচে থাকার সাহারা পান। মুর্শিদকে কেরলের এর্নাকুলামে জাতীয় তদন্ত সংস্থা গ্রেপ্তার করেছে। সকাল দশটা নাগাদ থানা থেকে সাদা পোশাকের এক জন এসে জানিয়ে যান মুর্শিদের মাকে যে তাঁর ছেলেকে দিল্লি পুলিশ ধরেছে। কিন্তু কেন ধরেছে, কোথায় রেখেছে জানাননি। মুর্শিদের মা আরো জানালেন তাঁর ও মুর্শিদের নার্ভের সমস্যা আছে। বহরমপুরে ডাক্তার দেখাতেন। বড় ছেলে মুর্শিদের আয়ের ওপর পরিবার চলে। বর্তমানে প্রায় প্রতিবেশীর দানে খাবার খাচ্ছেন। প্রতিবেশীরা এক কথায় জানালেন ‘ও সন্ত্রাসবাদী হতেই পারে না’।
হিতানপুরের নাজমুস সাকিব সবে বাইশে পা দিয়েছেন। তাঁরাও তিন ভাই এবং তিনিই সবার ছোটো। বড় ভাই রিজয়ান আলি বললেন, নাজমুস বাড়ি থেকে কেবল কলেজেই যেতেন, বাইরে আর কোথাও যেতেন না, বাইরের কোন বন্ধুকেও তাঁরা বাড়িতে আসতে দেখেননি। সাকিব কম্পিউটার বিষয়ে স্নাতক স্তরের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্র, বাড়িতে বেশির ভাগ সময় বই হাতেই কাটাতেন। থায়রয়েড, গল-ব্লাডারে পাথর এবং জণ্ডিস রোগে প্রায় ভোগেন। তাঁদের বাবার সঙ্গে তাঁর ব্যাঙ্ক অফ ইণ্ডিয়ায় একটা যুগ্ম নামে সেভিংস আমানত আছে যেখানে কোন অস্বাভাবিক লেনদেন চোখে পড়েনি এগারো জনের তদন্ত দলের। যুবশ্রীর ১৫০০ টাকা করে তাঁর ওই আমানতে ঢুকত। রাত পৌনে দুটো নাগাদ তাঁদের বাড়িতে পুলিশ আসে। সাকিবই ধাক্কা শুনে খুলে দিয়েছিলেন। তার আগে অবশ্য ছাদ বেয়ে পুলিশ ঢুকে পড়েছিল বাড়িতে। রিজয়ানকে পুলিশ হিন্দি বাংলা মিশিয়ে বলে কিছু জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তারা সাকিবকে নিয়ে যাবে। কিছু খালি পলি প্যাকের উপর তাঁর স্বাক্ষর নেয়। কোন গালিগালাজ করেনি, কটূ কথা বলেনি। নিয়ে যায় মেজ ভাই গাজি রহমানের একটা পুরনো ল্যাপটপ, সাকিবের এ্যান্ড্রয়েড ফোনটা আর চার্জার। তার সঙ্গে আধার কার্ড, প্যান কার্ড আর শিক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় প্রমাণ পত্র যথা এ্যাডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, মার্কস শীট ইত্যাদি। কিন্তু সিজার লিস্ট দেয়নি। সকাল হলে চলভাষে ডাক পেয়ে রিজয়ান ডোমকল থানায় গেলে তাঁকে আধার কার্ড, প্যান কার্ড ফেরৎ দিলেও শিক্ষা সংক্রান্ত কাগজ কিছুই ফেরৎ দেয়নি। থানাতেও কিছু পলি প্যাকের উপর তাঁর স্বাক্ষর নেয়। কিন্তু সাকিবকে কেন গ্রেপ্তার করা হল বলেনি। নাজমুস সাকিবের বাড়িতেও হানাদার বিশাল বাহিনীতে এক জন মহিলা পুলিশ, দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার, সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ও সাদা পোশাকের বেশ কয়েক জন ছিলেন।
ডোমকল পুরনো বিডিও মোড়ে লিউ ইয়ান আহম্মেদের বাড়ি। শৈশবে বাবা মারা গেলে তাঁর মামা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক আবুল কালাম আজাদ তাঁর লেখাপড়ার ভার নিয়েছিলেন। বিদ্যুতের কাজ শিখে তিনি এখন ডোমকল কলেজের ক্যাজুয়াল বিদ্যুৎ মিস্ত্রি এবং অন্য সময় এলাকার বাড়ি বাড়ি ঘুরেও বিদ্যুতের কাজ করে আয় করেন। বয়স প্রায় ছত্রিশ, বিয়ে হয়নি। বিধবা মা আর স্বামীর ঘর ছাড়া দিদি, ভাগ্নীকে নিয়ে তাঁদের সংসার। তাঁদের বাড়িতে পুলিশ ঢুকেছে ভোর তিনটে নাগাদ। পাঁচিল টপকে, পাশের বাড়ির ভিতর দিয়ে ঢুকেছে। তাঁর তিন বছর আগে কেনা মোটর বাইকে কোন টুল বক্স ছিল না, থাকত না। তবে মেরামতির কাজের কিছু যন্ত্রপাতি ঘরে ছিলই। সেগুলো পুলিশ নিয়ে গিয়েছে সিজার লিস্ট না দিয়েই। পুলিশ ধাক্কা মেরেছে তাঁর দিদিকে, বৃদ্ধা মাকে। তাঁর গালেও চড় মারার চিহ্ন দেখেছেন তাঁর দিদি। মা বার বার জানতে চেয়েছেন, তাঁর ছেলের অপরাধটা কী। পুলিশ উত্তর দেয়নি। কোথায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জানায়নি। দিদিকে দিয়ে গোটা তিনেক পূরণ না করা ফর্মে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছে। তাঁরাও জানেন না লিউ ইয়েন আহমেদ কেমন আছেন, কোথায় আছেন, তাঁরা দেখা করার সুযোগ পাবেন কিনা। মিডিয়াতে প্রচারিত কথাগুলো সম্পর্কে লিউয়েনের দিদি জানান সমস্ত মিথ্যা কথা প্রচার করছে মিডিয়া।
প্রশাসনিক সূত্রে খোঁজখবর নিয়ে (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানা যায় পুলিশের গোয়েন্দাদের কাছেও অভিযান পূর্ব সময়ে এলাকায় ‘আল-কায়দা জঙ্গি’-র খবর জানা ছিল না। লিউয়েন সম্পর্কে কোনো তথ্য ছিলনা গোয়েন্দাদের কাছে।
অভিযুক্ত এই চারজনের মধ্যে হয়তো কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়াতে কিছু গ্রুপ, পেজ, চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করেছিলেন বলে আশেপাশের মানুষের মত। তারা কতটা সেইসব বিষয় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিল সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। তবে অনেকেরই ধারণা সেখান থেকেই NIA এদের বেছেছে। প্রায় সকলেরই আর্থিক অবস্থা নিম্নবিত্ত বা দরিদ্র শ্রেণীর। এলাকায় সেই অর্থে কোনো বিশেষ প্রভাব ছিল না কারোরই। ভীত, শঙ্কিত পরিবারগুলির আর্থিক করুণ দশা তাদের আইনের দ্বারস্থ হওয়ারও সুযোগ দিচ্ছে না। তার ওপর মিডিয়ার একের পর এক মিথ্যে প্রচার আতঙ্কিত করে রেখেছে এলাকাবাসীদের।
তথ্যানুসন্ধাকারী দলের কাছে মনে হয়েছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (ন্যাশনাল ইনভেস্টিং এজেন্সি) ২০০৮ সালের আইন এবং পরবর্তিতে ২০১০ ও ২০১৯ সালের সংশোধিত আইন মোতাবেক যতই ক্ষমতাশালী হোক না কেন, তারা মানবাধিকারকে ন্যূনতম মর্যাদা দেয়নি, গ্রেপ্তার করতে গভীর রাতে ধাক্কাধাক্কি করে দরজা খুলিয়ে পাঁচিল টপকে বাড়ির ভিতর ঢুকেছে, কটূ কথা বলেছে, মেরেছে, গ্রেপ্তারের কারণ জানায়নি, পূরণ না করা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছে এবং সমস্ত কাজ করেছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে।
ধৃত ব্যক্তি বা তাঁদের বাড়ির লোকেদের কিছু ভাবার সময় দেয়নি এবং পাঁচ দিন পার হয়ে গেলেও স্বজনদের জানায়নি কোথায় ধৃতদের রাখা হয়েছে, কেমন আছেন তাঁরা। বিশাল বাহিনীতে স্থানীয় থানার পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ারও ছিলেন, কারও পোশাকে স্ব-পরিচয় লেখা ছিল না এবং স্থানীয় থানা অভিযান বিষয়ে সম্যক ওয়াকিবহাল ছিল। স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলো মৌনতা অবলম্বন করছে।
রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের হলেও বাম দলগুলো সমর্থিত কংগ্রেসের মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী থাকা কালে ২০০৮ সালে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে তৈরি আইনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে এই সংস্থাটি তৈরি করা হয় ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে। গোটা দেশে কলকাতা সমেত মোট তেত্রিশটি শহরে শাখা আছে। শীর্ষ আদালতের মুখ্য বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে কয়েকটি বিশেষ আদালত গঠন করা হয়। ২০১৯ সালের সংশোধন অনুযায়ী সংস্থাটি দেশের বাইরেও সংঘটিত অপরাধের তদন্ত ও আদালতে অভিযোগ পেশ করতে পারে। তাছাড়া সর্বশেষ সংশোধনীর বলে সংস্থাটি সন্ত্রাস সৃষ্টি, মদত দান, দেশের স্বার্থ বিরোধী কাজ, জাল নোট ছাপানো, বিলি করা, আন্তঃজাল অপরাধের কারণেও তদন্ত করতে পারবে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের বিনা অনুমতিতে, এমনকি না জানিয়েও। তাছাড়া ২০০৮ সালের মূল আইন ও ২০১০ সালের সংশোধনীতে শুধু সংগঠিত অপরাধের দায়িত্বই তাদের ছিল; ২০১৯ সালের ভারতীয় জনতা দলের আমলে তাদের ব্যক্তিগত অপরাধ নিয়েও কাজ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যদিও এত দিনেও ‘সন্ত্রাসে’র ও ‘দেশের স্বার্থবিরোধী কাজের’ সংজ্ঞা নির্ধারিত হয়নি।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা NIA সন্ত্রাসবাদী চিহ্নিতকরণে অনেক দৌড়ঝাঁপ করলেও বিগত দিনগুলির ইতিহাস দেখলে বোঝা যাবে যে আইনের পর আজ পর্যন্ত অনেক মামলার ক্ষেত্রেই অ্যানটি টেররিস্ট সংস্থাগুলি সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ প্রমান করতে পারেনি। মধ্যেখান থেকে অভিযুক্তের ১০-১৪ বছর জেলে কেটে গিয়েছে বিনা অপরাধে। ২০১৬ সালের তৎকালীন কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী সদানন্দ গৌড়া বরং উল্টে বলেন “সন্ত্রাসবাদের মিথ্যে অভিযোগে মুসলিমদের অ্যারেস্ট করা চিন্তার বিষয় হয়ে উঠছে”। অনেকে একথাও বলছেন যে আল-কায়দার সাথে আমেরিকা শান্তি চুক্তি করে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে সেই আল-কায়দারই বা এই পোড়া বাংলায় কী কাজ?
NIA কেন্দ্রের সংস্থা, যে দুই রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ও কেরালায় এই অ্যারেস্ট করা হয়েছে তাদের সম্পর্কে বিজেপি আইটি সেল বিভিন্ন ধরণের প্রোপাগান্ডা (যার অধিকাংশই সাম্প্রদায়িক ও ফ্যাসিবাদী) ছড়িয়ে চলেছে অনবরত। The Wire এর রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২১ এর ভোটকে কেন্দ্র করে প্রায় ৩০ টির বেশি প্রোপাগান্ডা ওয়েবসাইট বানিয়েছে এরা, যার কাজ হলো বাংলাকে সাম্প্রদায়িকভাবে বিভাজিত করা। এর সাথে এখন বাংলার মূল ধারার নিউজ চ্যানেলগুলিও যুক্ত হয়েছে। NIA সরাসরিভাবে রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করে। রাজ্য সরকার চাইলে তার রাজ্যে কেন্দ্রের এই হস্তক্ষেপ চাপ সৃষ্টি করে বন্ধ করে দিতে পারে, যেমন দেখা গিয়েছিল পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের ক্ষেত্রে।
Leave a Reply