সাইকেল সমাজের বন্ধুদের পাঠানো প্রতিবেদন থেকে। ২১ অক্টোবর, ২০২০।#
রবিবার, ১৮ ই অক্টোবর, কলকাতা সাইকেল সমাজের সাথে যোগ দিয়ে বি.টি. রোড সাইকেল সমাজ, বিভিন্ন রাইডার গ্রুপ, পরিবেশবাদী কয়েকটি সংগঠন ও ব্যক্তিগত উৎসাহে এক দল সাইকেল চালক বাগবাজার ঘাট থেকে ব্যারাকপুরের ধোবিঘাট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত করল একটি সাইকেল যাত্রা। ঘাটে ঘাটে চলার নেপথ্যে ছিল আরো একটি উদ্দেশ্য। নির্মল ও অবিরল গঙ্গার দাবীকে পথে পথে ছড়িয়ে দেওয়া। সাথে ছিল বি.টি. রোড সাইকেল সমাজের পক্ষ থেকে বি.টি. রোড বরাবর ও নির্মীয়মান হেমন্ত সেতুতে সাইকেল চালকদের সমানাধিকার দিয়ে একটি সুসংহত সাইকেল লেনের দাবী। এই যাত্রাপথের এক অন্তিমে উপস্থিত সাইকেলজীবিরা নিজেদের মতামত, দাবীদাওয়া, অভিজ্ঞতা, গান-গুঞ্জন ভাগ করে নেন ব্যারাকপুর ধোবি ঘাটে। সেখান থেকে গল্পগাছায় উঠে এল সাইকেল চালানোর নানা দিক।
নিরাপত্তার প্রশ্ন
খরচ বাঁচাতে আমরা সাইকেল চালাই, আবার কেউ স্বাস্থ্য বাঁচাতে। দোকান-বাজার, অফিস-কাছারি, কাজে-অকাজে চলে সাইকেল। ছাত্র ছাত্রীরা স্কুল-কলেজে যায় সাইকেলে চেপে। আমাদের বেঁচে থাকার প্রয়োজনে ছোটখাটো কাজকর্ম বা পেশায় দূষণহীন সাইকেল এক নীরব এবং জরুরি ভূমিকা পালন করে। কিছু দিন হল, কলকাতার বড় বড় রাস্তায় সাইকেল লেন বানানোর পরিকল্পনা চলছে। সাইকেল লেন থাকলে রাস্তার একধার ধরে নিরাপদে সাইকেল যায়, বাকি রাস্তা ধরে গাড়ি নিজের গতিতে চলে। এতে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কমে। গাড়ি চাপা পড়ে সাইকেল চালকের জীবন সংশয় হয় না।
-কলকাতা সাইকেল সমাজ
আত্মমর্যাদার প্রশ্ন
শুধু খরচ বাঁচাতে অথবা স্বাস্থ্য রক্ষার তাগিদে নয়, সাইকেল চালাই স্বাধীনভাবে চলাফেরার জন্য; আরও অনেক কিছুর সঙ্গে আত্মমর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য।
-জিতেন নন্দী
জীবন জীবিকার প্রশ্ন
ব্যারাকপুর ট্রাংক রোড – আমাদের বি.টি. রোড – আড়াইশো বছরের এক ঐতিহাসিক প্রশস্ত পথ যা নিয়ে কলকাতা ও উত্তর চব্বিশ পরগণার মানুষ গর্ব বোধ করেন । আমাদের রোজকার জীবনে কুড়ি কিমি এই রাজপথ খুব জরুরি। এই পথের ধারে আছে হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়, বিখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিক্যাল কলেজ, অজস্র দোকানপাট, অফিস ও কারখানা । অগণিত মানুষ প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাইকেলে যাতায়াত করে থাকেন । আমাদের ভালোবাসার এই প্রাণচঞ্চল পথে সাইকেল লেন চালু হলে বহু মানুষের উপকার হবে । তাই আমরা চাই বি.টি. রোডে সাইকেল লেন হোক।
-বি.টি. রোড সাইকেল সমাজ
সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসমতার প্রশ্ন
যদিও এই পরিস্থিতিতে মোটর গাড়ি র দিকে আঙ্গুল তোলা বারণ। কারণ গাড়ির মালিক অগ্রিম ট্যাক্স দিয়ে গাড়ি কিনে থাকেন। তাতে সরকার বাহাদুরের অনেক আয় হয়ে থাকে। তাছাড়া ওই গাড়ি চালাতে যে পরিমাণ পেট্রোল বা ডিজেল লাগে, তার দামের একটা খুব বড় অংশ নিয়মিতভাবে সরকারের তহবিলে জমা হয়। আর যারা আর্থিক ভাবে গাড়ি কিনতে সক্ষম, তারা নিয়মিত ভাবে মোটা অংকের আয় করও দিয়ে থাকেন। তাই তাদের দিকে আঙ্গুল তোলা মানা। যত দোষ, প্রান্তিক মানুষ গুলির। যত দোষ এই প্রান্তিক মানুষ গুলির আর্থিক অক্ষমতা। এই গাড়ি যতই আমাদের জন্য কার্বন মনোক্সাইড ছাড়ুক না কেন, ওদের দিকে আঙ্গুল তোলা মানা।
Leave a Reply